বিশ্বব্যাপী আতঙ্কের নাম নভেল করোনাভাইরাস। এ ভাইরাস ঠেকাতে আক্রান্ত দেশগুলো তাদের নাগরিকদের সুরক্ষা দিতে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। মালয়েশিয়ায়ও চলছে লকডাউন। দেশটিতে বাইর থেকে আগমন ঘটে এ ভাইরাসের। প্রথমে চীনফেরত, পরে একটি তাবলীগ জামাতের জমায়েতকে কেন্দ্র করে ছড়িয়ে পড়ে এ ভাইরাস। জামাতে অংশ নেয়া চার হাজার লোককে খুজঁছে দেশটির পুলিশ।
Advertisement
করোনাভাইরাসে আক্রান্ত এক পার্লামেন্ট সদস্যের সংস্পর্শে আসার পর স্বেচ্ছায় কোয়ারেন্টাইনে চলে যান মালয়েশিয়ার সাবেক প্রধানমন্ত্রী তুন ডা. মাহাথির মোহাম্মদ। এখন তিনি শঙ্কা মুক্ত।
এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত দেশটিতে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৬২৪ জনে। চিকিৎসা শেষে বাড়ি ফিরেছেন ১৮৩ জন এবং মৃত্যুবরণ করেছেন ১৬ জন। ভাইরাসে এ পর্যন্ত কোন বাংলাদেশি আক্রান্ত হওয়ার খবর পাওয়া যায়নি।
দ্রুত ছড়িয়ে পড়ার প্রেক্ষিতে প্রতিরোধের জন্য সরকার মুভমেন্ট কন্ট্রোল অর্ডার (এমসিও) জারি করে। সবাইকে গৃহে অবস্থান করতে বলা হয়েছে। এক সঙ্গে চলাফেরা করা, রেস্তোরাঁয় একসঙ্গে বসে খাওয়া, কর্মস্থলে যাওয়া সব বন্ধ করে দিয়েছে। এখন পুলিশের সঙ্গে সেনাবাহিনী কাজ করছে। গত ১৮ মার্চ থেকে চলছে লকডাউন। চলবে ৩১ মার্চ পর্যন্ত। চলমান লকডাউনে আইন অমান্যকারী ২৯ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দিয়েছে ভ্রাম্যমাণ আদালত।
Advertisement
এ দিকে গত ফেব্রুয়ারি মাসে অনুষ্টেয় তাবলীগ জামাতে ৩০টি দেশ থেকে ১৬ হাজার মুসল্লি অংশগ্রহণ করেন। এর মধ্যে বাংলাদেশিসহ প্রায় ৪ হাজার জনকে খুঁজছে পুলিশ।
মালয়েশিয়ার সিনিয়র মন্ত্রী (সিকিউরিটি) দাতুক সেরি ইসমাইল সাবরি ইয়াকুব জানান,তাবলীগ জামাতে অংশগ্রহণকারীদের বিস্তারিত সংগ্রহ করা হয়েছে। পুলিশ প্রশাসন তাদের খুঁজতে শুরু করেছে।
মন্ত্রী আরও বলেন, ৩ হাজার ৮শ জনের একটি তালিকা তৈরি করেছি। ওই তালিকায় মালয়েশিয়ান নাগরিকরা ছাড়াও রয়েছে রোহিঙ্গা শরণার্থী এবং অন্যান্য দেশের নাগরিক। তবে তার মধ্যে কতজন বাংলাদেশি রয়েছেন তা প্রকাশ করা হয়নি।
এ সময় তিনি আরও বলেন, আমরা তাবলীগ জামাতে অংশগ্রহণকারীদের স্বেচ্ছায় পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণ করতে অনুরোধ করছি, তা না হলে পুলিশ তাদের গ্রেফতারের জন্য অভিযান শুরু করবে। ভাইরাসে আক্রান্তদের মধ্যে ৬০ শতাংশ তাবলীগে অংশগ্রহণকারী। এর মধ্যে নিহত ৮ জনই তাবলীগ জামাতে অংশ নিয়েছিলেন।
Advertisement
মালয়েশিয়ার ন্যাশনাল সিকিউরিটি কাউন্সিলের পরামর্শ অনুযায়ী, ১৪ দিন (১৮ থেকে ৩১ মার্চ) কোম্পানি বন্ধ থাকলেও বেতন দিতে নির্দেশ দিয়েছে সরকার এবং বেতন না দিলে শাস্তির বিধান রাখা হয়েছে। দেশি ও বিদেশি সব কর্মীদের জন্য এ ঘোষণা দিয়েছে।
সংশ্লিষ্ট দূতাবাস, হাইকমিশন থেকেও নিজ নিজ দেশের নাগরিকদের সতর্ক করে দিচ্ছে এবং চিকিৎসা নিতে অনুরোধ করছে। ছোঁয়াচে রোগ নিয়ন্ত্রণ আইন অনুযায়ী এ রোগ গোপন করা দণ্ডনীয় অপরাধ। এ রোগ গোপন না করে বরং চিকিৎসা নিলে ভালো বলছেন সংশ্লিষ্টরা।
জেএইচ/পিআর