করোনাভাইরাসের কারণে নগদ টাকা তুলতে ব্যাংকে না গিয়ে এটিএম বুথে ভিড় করছে গ্রাহক। কিন্তু নেট সমস্যা, পর্যাপ্ত টাকা না থাকাসহ বিভিন্ন কারণে ভোক্তান্তিতে পড়ছেন গ্রাহকরা।
Advertisement
মঙ্গলবার (২৪ মার্চ) রাজাধানীর মতিঝিল, দিলকুশা, পল্টন, দৈনিক বাংলা, মুগদা এলাকা ঘুরে দেখা গেছে এ চিত্র।
এসব এলাকায় বিভিন্ন ব্যাংকের এটিএম বুথে নগদ টাকা তুলতে গ্রাহকদের ভিড় করতে দেখা যায়। কিন্তু অনেক বুথেই নাগদ টাকার সংকট, নেট সমস্যার কারণে গ্রাহকরা ভোগান্তিতে পড়েন।
মতিঝিলের সেনাকল্যাণ ভবনের পাশে ডাচ বাংলা ব্যাংকের এটিএম বুথের দায়িত্বরত এক কর্মচারী জানান, অন্যান্য দিনের তুলনায় আজকে টাকা উত্তোলনের পরিমাণ বেশি। কারণ গতকাল এমনিতেই সার্ভারের সমস্যা থাকার কারণে গ্রাহকরা টাকা উঠাতে পারিনি। তার প্রভাবে আজ লেনদেন বেড়েছে। এছাড়াও সরকারি সাধারণ ছুটি ঘোষণার কারণে স্বাভাবিক দিনের তুলনায় বেশি টাকা উঠাচ্ছে মানুষ।
Advertisement
মতিঝিল সিটি সেন্টারের ডাচ-বাংলা ব্যাংক ফাস্ট ট্র্যাকে টাকা তুলতে এসেছেন কবির নামের এক ব্যক্তি। কিন্তু টাকা তুলতে পারেনি।
তিনি জানান, জরুরি টাকা দরকার। এটিএম বুথে এসে দেখি টাকা নেই। এটিএম বুথে যদি প্রয়োজনে টাকা তুলতে না পারি তাহলে কেমন লাগে বলেন? তারপরও আবার এখন করোনার বিশেষ সময় চলছে।
এ বিষয়ে বুথে থাকা ব্যাংকের কর্মী জানান, দুপুরের টাকা শেষ হয়ে গেছে। অফিসে জানানো হয়েছে। তারা দ্রুত ব্যবস্থা নিচ্ছে।
একই অবস্থা আল-আরাফাহ ইসলামী ব্যাংকের দৈনিক বাংলা শাখার বুথে। টাকা শেষ হওয়ায় বুথ থেকে ফিরে যাচ্ছেন গ্রাহকরা। নিরাপত্তারক্ষীরা জানান, দুপুর সাড়ে ১২টার মধ্যে শেষ হয়ে গেছে সব টাকা। প্রয়োজনে পাশের বুথ টাকা তোলার পরামর্শ দেন তিনি।
Advertisement
এদিকে গ্রাহক সুবিধার্থে প্রতিটি ব্যাংকের শাখার ক্যাশ কাউন্টার, এটিএম, এজেন্ট ব্যাংকিং, ইন্টারনেট, অ্যাপ ও ইউএসএসডি ভিত্তিক সব লেনদেন নিরবচ্ছিন্ন রাখতে নির্দেশ দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। পাশাপাশি লেনদেনের স্থানে নিয়মিতভাবে জীবাণুমুক্ত রাখতে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে বলা হয়েছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্দেশনা সত্ত্বেও এটিএম বুথের লেনদেন কাঙ্ক্ষিত সেবা পাচ্ছে না গ্রাহক। উল্টো টাকা না পেয়ে ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে অনেককে।
মঙ্গলবার (২৪ মার্চ) ব্যাংকগুলোতে বাড়তি সতর্কতায় লেনদেন করতে দেখা গেছে। তবে ব্যাংকগুলোতে গ্রাহক উপস্থিতি কম ছিল। জরুরি প্রয়োজনে টাকা তুলতে কেউ ব্যাংকে আসেননি। ব্যাংক কর্মীদেরকেও বেশ সতর্ক থাকতে দেখা গেছে। ব্যাংকের শাখায় ঢুকতেই প্রধান গেটে হ্যান্ড স্যানিটাইজার দেয়া হচ্ছে গ্রাহকদের। থার্মাল স্ক্যানার দিয়ে নির্ণয় করা হচ্ছে গ্রাহকের শরীরের তাপমাত্রা। এদিকে করোনাভাইরাস মোকাবিলায় ব্যাংকের কর্মকর্তা-কর্মচারীরাও বেশ সতর্ক। মুখে মাস্ক ও হাতে গ্লাভস পরে অফিস করতে দেখা গেছে অনেককে। তবে গ্রহকের মত ব্যাংক কর্মী উপস্থিতিও কম লক্ষ্য করা গেছে।
ব্যাংকার জানান, অন্যান্য দিনের তুলনায় গ্রাহক উপস্থিতি কম। জরুরি কাজ ছাড়া কেউ আসছেন না। যারা আসছেন তারা শুধু নগদ টাকা তুলতেই আসছেন। জমা দেয়ার হার খুবই কম।
এদিকে মহামারি করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব ঠেকাতে ২৬ মার্চ থেকে ৪ এপ্রিল পর্যন্ত দেশে সাধারণ ছুটি ঘোষণা করেছে সরকার। তবে এ সময়ে নগদ লেনদেনের সুবিধার্থে ব্যাংক খোলা রাখার নিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। মঙ্গলবার এ সংক্রান্ত নির্দেশনা জারি করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
এতে বলা হয়েছে, ২৬ মার্চ থেকে ৪ এপ্রিল পর্যন্ত সরকারি-বেসরকারি সব ধরনের প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকলেও নগদ লেনদেনের সুবিধার্থে ব্যাংক বিশেষ ব্যবস্থায় খোলা থাকবে। ওই সময়ে ব্যাংক লেনদেন হবে সকাল ১০টা থেকে ১২টা পর্যন্ত। আর ব্যাংক খোলা থাকবে দুপুর দেড়টা পর্যন্ত।
এসআই/এএইচ/এমএস