দেশে করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা কয়েক লাখ হলেও তাদের সুস্থ করে তুলতে কার্যকর ওষুধের অভাব হবে না। দেশে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ৩৯ হলেও এ মুহূর্তেও এক লাখ রোগীর চিকিৎসা দিতে প্রয়োজনীয় ওষুধ সরকারের কাছে মজুত রয়েছে। ইতিমধ্যে দেশের বেশকিছু খ্যাতনামা ওষুধ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানকে ওষুধ উৎপাদনে নির্দেশনা দিয়েছে ওষুধ প্রশাসন অধিদফতর।
Advertisement
দেশের কোটি কোটি মানুষ যখন প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের সুচিকিৎসা নিয়ে দুশ্চিন্তায় তখনই বাংলাদেশ সোসাইটি অফ মেডিসিনের বিশেষজ্ঞরা শোনালেন এমন আশার বাণী।
তারা বলছেন, করোনাভাইরাস সংক্রমণ রোধে সরকার সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। এরপরও যদি করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পায় সে ক্ষেত্রে চিন্তিত হওয়ার কিছু নেই। করোনার রোগীকে সুস্থ করার মত কার্যকর ওষুধ দেশেই রয়েছে।
বাংলাদেশ সোসাইটি অফ মেডিসিনের সভাপতি অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ বিল্লাল আলম মঙ্গলবার (২৪ মার্চ) বিকেলে জাগো নিউজকে জানান, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে করোনায় আক্রান্তদের চিকিৎসায় ম্যালেরিয়া জ্বরে ব্যবহৃত হাইড্রক্সি ক্লোরোকুইন ও ক্লোরোকুইন ওষুধের সঙ্গে এজিথ্রোমাইসিন সাত দিন সেবনে অধিকাংশ রোগী সুস্থ হয়েছে বলে প্রমাণ মিলেছে।
Advertisement
তিনি বলেন, বাংলাদেশ সোসাইটি অব মেডিসিনের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা বিশ্বব্যাপী করোনা আক্রান্ত দেশগুলোর চিকিৎসা পদ্ধতি এবং নিজেদের অভিজ্ঞতা পর্যালোচনা করে দেশে করোনা আক্রান্তদের সুচিকিৎসা নিশ্চিতে স্ট্যান্ডার্ড ট্রিটমেন্ট গাইডলাইন সুপারিশ করেছে। ওই সুপারিশে হাইড্রক্সি ক্লোরোকুইন ও ক্লোরোকুইন ওষুধের সঙ্গে এজিথ্রোমাইসিন সেবনের পরামর্শ দেয়া হয়েছে বলে জানান ডা. বিল্লাল আলম।
জানা গেছে, সোসাইটি অব মেডিসিনের সুপারিশকৃত স্ট্যান্ডার্ড ট্রিটমেন্ট গাইডলাইন অনুসরণ করে সারাদেশের চিকিৎসকরা করোনা আক্রান্তদের একই ধরনের চিকিৎসাসেবা দেবেন।
ওষুধ প্রশাসন অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে দেশে ইনসেপ্টা, ডেল্টা, এসিআই, জেসন, রেডিয়েন্ট ও ডেল্টা ফার্মাসিউটিক্যাল ম্যালেরিয়া জ্বরের ওষুধ উৎপাদন করে।
সূত্র জানায়, দেশে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধি পেলে চিকিৎসাসেবা যেন ব্যাহত না হয় সে জন্য বেক্সিমকো, স্কয়ার ফার্মাসহ আরও বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠান এ দুটি ওষুধ উৎপাদনের প্রস্তুতি নিয়েছে।
Advertisement
ওষুধ প্রশাসন অধিদফতরের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মো. মাহবুবুর রহমান বলেন, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে করোনা আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসায় ম্যালেরিয়া জ্বরে ব্যবহৃত হাইড্রক্সি ক্লোরোকুইন ও ক্লোরোকুইন কার্যকর বলে অভিমত ব্যক্ত করেছে বাংলাদেশ সোসাইটি অব মেডিসিনের বিশেষজ্ঞরা। ইতিমধ্যেই তারা করোনা রোগীর সুচিকিৎসা নিশ্চিতে স্ট্যান্ডার্ড ট্রিটমেন্ট গাইডলাইন প্রণয়ন করে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে জমা দিয়েছে। তাদের সুপারিশের ভিত্তিতে সরকার ইতিমধ্যেই এক লাখ রোগীকে চিকিৎসা দেয়ার মতো ওষুধ মজুত করেছে।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে এবং স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের নেতৃত্বে সব মন্ত্রণালয় করোনাভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। তদুপরি যদি করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধি পায় তাতেও দুশ্চিন্তার কিছু নেই। কয়েক লাখ রোগীকে চিকিৎসা দেয়ার মতো কার্যকর ওষুধের মজুত ও সক্ষমতা রয়েছে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
এমইউ/এএইচ/এমএস