লাইফস্টাইল

কোন জিনিসে কতদিন বাঁচে করোনাভাইরাস?

করোনাভাইরাস থেকে বাঁচতে নানা পরামর্শ মেনে চলছেন বিশেষজ্ঞদের। নিয়ম মেনে হাত ধোয়া, স্বাস্থ্যসম্মত জীবনযাপন- সবই চলছে। কিন্তু জানেন কি, কোন জিনিসে এই ভাইরাস কতদিন বাঁচে? সেই বস্তুর সংস্পর্শে কোনো আক্রান্ত রোগী এলে কতদিন পর্যন্ত সেই বস্তু থেকে সাবধানতা অবলম্বন করা উচিত? জেনে নিন-

Advertisement

করোনাভাইরাস সবচেয়ে বেশি দিন বাঁচতে পারে পলিপ্রোপিলিনের উপর। পাঁচদিন পর্যন্ত এর উপর বেঁচে থাকতে পারে করোনাভাইরাস।পলিপ্রোপিলিন এক ধরনের প্লাস্টিক। এই ধরনের প্লাস্টিক দিয়েই শিশুর খেলনা থেকে শুরু করে প্লাস্টিকের টিফিন বক্স তৈরি করা হয়।

দ্বিতীয় যে পৃষ্ঠদেশের উপর করোনাভাইরাস বেশিক্ষণ বেঁচে থাকতে পারে, তা হলো কাগজ। তবে গবেষকরা জানিয়েছেন, খবরের কাগজ থেকে কোনোভাবেই এই ভাইরাস ছড়াতে পারে না। খবরের কাগজের মাধ্যমে এই সংক্রমণ ছড়ানোর কোনো আশঙ্কাই নেই। সংবাদপত্রের প্রক্রিয়াকরণের সময়ে যেসব রাসায়নিক ব্যবহার করা হয়, তার উপরে ড্রপলেটের বেঁচে থাকা অসম্ভব। তবে গবেষকেরা জানিয়েছেন, খবরের কাগজ ছাড়া অন্যান্য কাগজের উপর ৪-৫ দিন বেঁচে থাকতে পারে করোনাভাইরাস।

তৃতীয় যে পৃষ্ঠদেশের উপর করোনাভাইরাস বেশি ক্ষণ বেঁচে থাকতে পারে, তা হলো কাচ। গবেষণায় দেখা গেছে, কাচ জাতীয় কোনো পৃষ্ঠদেশের উপর অন্তত চারদিন পর্যন্ত বেঁচে থাকতে পারে করোনাভাইরাস।

Advertisement

ফলে কাচে হাত দিলে, নিয়ম-বিধি মেনে ভালো করে হাত পরিষ্কার করে নেয়া প্রয়োজন। বাড়ির জানলার কাচগুলো প্রয়োজনে ভালো করে ধুয়ে পরিষ্কার করা দরকার।

কাচের মতো সমান সংক্রমণযোগ্য হলো কাঠ। কাঠের বস্তুর উপর এই ভাইরাস চারদিন পর্যন্ত বেঁচে থাকতে পারে। তাই গবেষকেরা জানাচ্ছেন, কাঠের কোনো বস্তুতে হাত দিলে, তারপরই যেন কোনোভাবেই হাত মুখে বা নাকে না যায় এবং ভালো করে ২০ সেকেন্ড ধরে সাবান দিয়ে হাত ধুয়ে ফেলা জরুরি।

এরপর যে পৃষ্ঠদেশের উপর করোনাভাইরাস বেশিক্ষণ বেঁচে থাকতে পারে, তা হলো স্টেইনলেস স্টিল। গবেষণায় দেখা গেছে, স্টেইনলেস স্টিলের উপর এই ভাইরাস ৪৮ ঘণ্টা পর্যন্ত সক্রিয় থাকে।

কোনো আক্রান্ত ব্যক্তির হাঁচি-কাশির মাধ্যমে যদি করোনাভাইরাসের জীবাণু ড্রপলেটের মাধ্যমে কোনো স্টিলের উপরে পড়ে, তাহলে ৪৮ ঘণ্টা পরও তা থেকে সংক্রমণ ছড়াতে পারে।

Advertisement

প্রধানত চিকিৎসকেরা সার্জিক্যাল গ্লাভস ব্যবহার করে থাকেন। আর হাসপাতালে এখন সমস্ত করোনাভাইরাস আক্রান্ত রোগীদের ভিড়। পাশাপাশি অন্যান্য রোগীরাও সেখানেই রয়েছেন। রয়েছেন তাদের বাড়ির লোকজনও। তাই সার্জিক্যাল গ্লাভস ব্যবহারে ভীষণভাবে সুরক্ষা-বিধি মেনে চলা প্রয়োজন। কারণ সার্জিক্যাল গ্লাভসের উপর এই ভাইরাস অন্তত চার ঘণ্টা পর্যন্ত বেঁচে থাকতে পারে। সুরক্ষা-বিধি মেনে না চললে, সংক্রমণ ছড়ানোর সম্ভাবনাও খুব বেশি।

যেসব ধাতব বস্তু নিয়ে গবেষণা চালানো হয়েছে তার মধ্যে আর একটি হল অ্যালুমিনিয়াম। গবেষকরা জানাচ্ছেন, অ্যালুমিনিয়ামের উপর এই ভাইরাস দু’ঘণ্টা থেকে চার ঘণ্টা পর্যন্ত বেঁচে থাকতে পারে। তবে ‘নেকেড’ ভাইরাস কোনো সারফেসেই বাঁচতে পারে না। এদের টিকে থাকার জন্য ড্রপলেটের প্রয়োজন হয়। অ্যালুমিনিয়াম জাতীয় পদার্থের উপর যদি এই ড্রপলেট পড়ে, তবেই তা সংক্রমণযোগ্য।

সম্প্রতি নিউ ইংল্যান্ড জার্নাল অব মেডিসিন একটি রিপোর্ট প্রকাশ করেছে। তাতে তামার উপর এবং বাতাসে এই ভাইরাস কতদিন বাঁচতে পারে, তা প্রকাশ করা হয়েছে। সেই রিপোর্ট অনুযায়ী, তামার উপর চার ঘণ্টা পর্যন্ত বেঁচে থাকতে পারে এই করোনাভাইরাস। এবং বাতাসে মাত্র তিন ঘণ্টা পর্যন্ত বেঁচে থাকে।

আনন্দবাজার/এইচএন/পিআর