নভেল করোনাভাইরাস সংক্রমণের পরিপ্রেক্ষিতে স্বাধীনতা দিবসের সব কর্মসূচি বাতিল করেছে বিএনপি। সোমবার রাতে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে দলের সিদ্ধান্তের কথা জানান দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
Advertisement
তিনি বলেন, স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে সারাদেশের দলের সব কর্মসূচি আমরা বাতিল করেছি। কোনো জনসমাবেশ-সমাবেশ যেন না হয় তার জন্য নেতাকর্মীদের দৃষ্টি রাখার আহ্বান জানিয়েছি।
মির্জা ফখরুল বলেন, নেতাকর্মীদের বলেছি যে, তারা যে যেই অবস্থায় আছে, নিজেদের সাবধান রেখে জনগণের মধ্যে সচেতনতার কাজ করবেন এবং দলের কর্মীরা যেন নিয়ম মেনে চলেন, সাবধানে থাকেন-সেই বিষয়গুলো নিশ্চিত করবেন।
স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসের দিন বিএনপি সকালে সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন এবং পরে শেরেবাংলা নগরে দলের প্রতিষ্ঠাতা প্রয়াত জিয়াউর রহমানের কবরে পুষ্পমাল্য অর্পণ করে। এছাড়া স্বাধীনতা দিবসের তাৎপর্য তুলে ধরে বিএনপি ও তার বিভিন্ন অঙ্গসংগঠন আলোচনা সভা করে।
Advertisement
করোনাভাইরাসে মোকাবিলায় সরকারের ছুটি ঘোষণা ও বিভাগীয়-জেলা পর্যায়ে সেনাবাহিনী মোতায়েনের সিদ্ধান্ত সম্পর্কে প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘করোনাভাইরাসের চিকিৎসা এবং জনগণকে আইসোলেটেড করে রাখার যে ব্যাপারটা আছে- একজন থেকে আরেকজনকে আইসোলেটেড করে রাখা- এ ব্যাপারটাকে সরকারের গুরুত্ব দেয়া উচিত ছিল। যদিও তারা (সরকার) দেয়া শুরু করেছেন।’
তিনি বলেন, এটা দেরিতে হলেও আমি মনে করি যে, বুঝতে পেরেছেন। বিলম্বে হলেও সরকার যে কিছু ব্যবস্থা নিচ্ছেন। এখন এটাকে যেন নিবিড়ভাবে পরিচালনা করা হয় সেটা তাদের লক্ষ্য রাখতে হবে। বাংলাদেশ একটা ঘনবসতিপূর্ণ দেশ। এই দেশে এই ধরনের ছোঁয়াচে ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ছে দেশে এবং বিশ্বে। এটা যদি নিয়ন্ত্রণ করা না যায় তাহলে এটা একটা ভয়াবহ রকমের বিপর্যয়ের সম্মুখীন হতে হবে।’
বিএনপি মহাসচিব বলেন, তাদের মন্ত্রীরা এমন এমন উক্তি করেছেন যা মানুষের এই আতঙ্কের মধ্যেও একটা উষ্মা ও ক্রোধ সৃষ্টি করেছে। স্বাস্থ্যমন্ত্রী গতকালও বলেছেন, তারা তিন মাস আগে থেকে প্রস্তুত ছিলেন, যার কোনো নজির আমরা দেখতে পাচ্ছি না। সরকার এই পর্যন্ত বলছে ৩৩ জন আক্রান্ত হয়েছে। পরীক্ষা করার জায়গা তো শুধুমাত্র একটা- আইইডিসিআর। সেই জায়গায় পরীক্ষা হচ্ছে, সবাই পরীক্ষা করতেও পারছেন না। ফলে কতজন রোগী ইতোমধ্যে আক্রান্ত হয়েছেন, কতজন এর দ্বারা সংক্রমিত হয়েছেন সেটার কোনো সঠিক পরিসংখ্যান আমরা পাচ্ছি না।
বিদেশ থেকে আসা ৬ লাখ প্রবাসী গ্রামগঞ্জে ছড়িয়ে পড়ায় ভাইরাসের সংক্রমণের সংখ্যা বৃদ্ধিতে উদ্বেগ প্রকাশ করে সরকারের উদাসীনতা ও প্রশাসনের সমন্বয়হীনতা সমালোচনা করেন বিএনপি মহাসচিব।
Advertisement
করোনাভাইরাস রোগীর চিকিৎসার হাসপাতালের সংখ্যা বৃদ্ধি, চিকিৎসক-নার্সদের প্রশিক্ষণ, তাদের বিশেষ পোশাক ও পর্যাপ্ত কিট সরবরাহের দাবিও জানান তিনি।
করোনাভাইরাসের কারণে গার্মেন্টস শিল্প রক্ষায় মালিক-শ্রমিকদের সঙ্গে আলোচনা করে ব্যবস্থা গ্রহণ এবং প্রান্তিক মানুষের জন্য ভাতা প্রদানে সরকারের প্রতি দাবি জানান মির্জা ফখরুল।
কেএইচ/জেএইচ/এমএস