রাজনীতি

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের ব্যবস্থার কথা বাস্তবে দেখা যায়নি

করোনোভাইরাস সংক্রমণের সর্বশেষ পরিস্থিতি বিবেচনা করে এটি ‘জাতীয় দুর্যোগ’ হিসেবে ঘোষণা এবং প্রধানমন্ত্রীর প্রত্যক্ষ নেতৃত্বে জাতীয় দুর্যোগ কমিটি গঠন করে পার্শ্ববর্তী দেশগুলোর মতোই লকডাউন, আংশিক লকডাউন, প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইন ও হোম কোয়ারেন্টাইন নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ ওয়ার্কার্স পার্টি।

Advertisement

দলের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ‘ইতিমধ্যেই ৩টি মূল্যবান মাস অতিবাহিত হয়েছে। কিন্তু স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় যেসব ব্যবস্থার কথা বলেছে বাস্তবে তার অস্তিত্ব দেখা যায়নি; চরম সমন্বয়হীনতা সেখানে কাজ করছে।’

সোমবার (২৩ মার্চ) পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেননের সভাপতিত্বে ওয়ার্কার্স পার্টির পলিটব্যুরোর সভায় এই আহ্বান জানানো হয়।

স্কাইপের মাধ্যমে অনুষ্ঠিত সভায় বলা হয়, ‘ইতিমধ্যেই ৩টি মূল্যবান মাস অতিবাহিত হয়েছে। কিন্তু স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় যেসব ব্যবস্থার কথা বলেছে বাস্তবে তার অস্তিত্ব দেখা যায়নি; চরম সমন্বয়হীনতা সেখানে কাজ করছে। রোগতত্ত্ব বিভাগ তাদের সঙ্গে পরীক্ষার জন্য যোগাযোগ করতে হটলাইনে কথা বলতে বললেও তাদের সংযোগ পাওয়া যায় না। রোগীর বিদেশ ফেরত না বলে তাদের পরীক্ষাও করা হয় না। মিরপুরে টোলারবাগের ঘটনা তার প্রমাণ। একইভাবে একজন সাংবাদিক ও ডাক্তারের ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতাও তার প্রমাণ। তাছাড়া মাত্র একটি পরীক্ষাগার দিয়ে কীভাবে এত সংখ্যক ব্যক্তির নমুনা পরীক্ষা হতে পারে। যেখানে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বারবার জোর দিয়ে পরীক্ষা করার কথা বলেছে।’

Advertisement

সেখানে বলা হয়, ‘দুর্ভাগ্যজনক যে, প্রতিটি বিভাগে একটি করে পরীক্ষাগার স্থাপনে ওয়ার্কার্স পার্টির দাবিও উপেক্ষিত হয়েছে। ফলে ঢাকা থেকে সিলেটের রোগীর নমুনা সংগ্রহের আগেই সে মারা গেছে। তাকে করোনাভাইরাস সংক্রমিত বলে দাফন করা হলেও এখনও রোগতত্ত্ব বিভাগ তা নিশ্চিত করতে পারেনি।’ একই সময় বেসরকারি হাসপাতালগুলোতে যেখানে সুবিধা রয়েছে সেগুলোকে সরকারি নিয়ন্ত্রণে এনেই এই পরীক্ষা করার ব্যবস্থা করা যেতে পারতো বলেও ওয়ার্কার্স পার্টি দাবি জানিয়েছিল।

সভায় বলা হয়, ‘কেবলমাত্র কিট সংগ্রহেই তিন মাস চলে গেল। আর স্বাস্থ্যকর্মীদের সুরক্ষা ব্যবস্থা (পিপিই) এখন পর্যন্ত সেভাবে সরবরাহ করা হয়নি। এর ফলে যাদের সর্দি-কাশি শ্বাসকষ্টের সামান্যতম উপসর্গ রয়েছে তাদের হাসপাতালগুলো এবং প্রাইভেট চেম্বারও ফিরিয়ে দিচ্ছে। ওয়ার্কার্স পার্টি মনে করে, করোনাভাইরাস সংক্রমণের বাস্তবতা সর্বোচ্চ নেতৃত্বকে সঠিকভাবে জানানো হচ্ছে না। যে জাতীয় কমিটি গঠন করা হয়েছে সেটা একবারও বসেনি বলে সংবাদপত্রে খবরে প্রকাশ হয়েছে।’

ওয়ার্কার্স পার্টির পক্ষ থেকে বলা হয়, ‘আর সময় নেই এখনই ব্যবস্থা নিতে হবে। করোনাভাইরাস সংক্রমণের সতর্কতার কারণে নিম্ন শ্রমজীবীরা গৃহকর্মীরা বস্তিবাসীরা গণপরিবহন কর্মীরা এক কথায় যারা দিন আনে দিন খায় তারা চরম অনিশ্চয়তায় পড়ে গেছে। শ্রমঘন শিল্প গার্মেন্টস শ্রমিকদেরও একই অবস্থা। এদিকে ক্রয় আদেশ বাতিল করার ফলে গার্মেন্টস কারখানাগুলো সংকটে পড়েছে। এই অবস্থায় এক শ্রমজীবী ও বস্তিবাসী মানুষের জন্য বিশেষ ব্যবস্থায় ২ সপ্তাহের খাদ্য সরবরাহ গার্মেন্টস শ্রমিকদের বেতন-ভাতা পরিশোধের জন্য মালিকদের সহায়তা প্রদান এবং সর্বোপরি সকল নিম্ন বেতনভুক্ত সরকারি-বেসরকারি কর্মচারীদের এই সময়ের জন্য দুর্যোগ ভাতা এবং সবার স্বাস্থ্য সুরক্ষার ব্যবস্থা করা জরুরি।’

পলিটব্যুরোর সভায় স্কাইপে যুক্ত হন পার্টির সাধারণ সম্পাদক ফজলে হোসেন বাদশা, পলিটব্যুরোর সদস্য আনিসুর রহমান মল্লিক, মাহমুদুল হাসান মানিক, ড. সুশান্ত দাস, নুর আহমদ বকুল, কামরুল আহসান, মুস্তফা লুৎফুল্লাহ প্রমুখ।

Advertisement

এইউএ/এফআর/এমএস