শরীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলায় ধর্ষণ শেষে চরিত্রহীন বলায় গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে স্বপ্না কবিরাজ (১৪) নামে এক স্কুলছাত্রী। এ ঘটনায় সোমবার (২৩ মার্চ) দুপুরে নড়িয়া থানায় মামলা করেছেন স্বপ্নার মা লাবনী কবিরাজ।
Advertisement
এর আগে রোববার দুপুরে উপজেলার বিঝারী ইউনিয়নের নিলগুন গ্রাম থেকে ওই ছাত্রীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠিয়েছে পুলিশ। স্বপ্না কবিরাজ নিলগুন গ্রামের প্রবাসী বিপুল কবিরাজ ও লাবনী কবিরাজ দম্পতির মেয়ে। ভেদরগঞ্জ প্রতিভা সাইন্স প্রিপারেটরি স্কুলের দশম শ্রেণির ছাত্রী ছিল স্বপ্না।
মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, ২০১৮ সালের ১৮ ডিসেম্বর নড়িয়া উপজেলার নিলগুন গ্রামের লাবনী কবিরাজের বড় মেয়ে অসুস্থ হন। তখন ছোট মেয়ে স্বপ্নাকে প্রতিবেশী বাছারের মেয়ে প্রাপ্তি ও তার বান্ধবী জিতুর কাছে রেখে বড় মেয়েকে নিয়ে চিকিৎসকের কাছে যান লাবনী। রাতে ভানু বাছারের ঘরে ঘুমাতে যায় স্বপ্না। রাত ১২টার দিকে ভানু বাছারের ছেলে সুজিত (৩০) ঘুমন্ত অবস্থায় স্বপ্নাকে ধর্ষণ করে। সেই সঙ্গে স্বপ্নাকে ভয়ভীতি দেখিয়ে হত্যার হুমকি দেয় সুজিত। ভয়ে পরিবার ছাড়া কাউকে কিছু বলেনি স্বপ্না।
রোববার দুপুরে সুজিত বাছারের ভাই অজিত বাছার, ভাবি রিনা রানী মন্ডল ও বোন ভানু বাছার মিলে স্বপ্নাকে ডেকে নিয়ে চরিত্রহীন বলে অকথ্য ভাষায় গালাগাল করেন। লোকলজ্জায় আর অপমানে বিকেলে ঘরের সিলিং ফ্যানের সঙ্গে ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করে স্বপ্না। পরে পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তর জন্য শরীয়তপুর সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠায়। এ ঘটনায় স্বপ্নার মা লাবনী সোমবার দুপুরে নড়িয়া থানায় মামলা করেন।
Advertisement
স্বপ্নার মা লাবনী বলেন, সুজিতের ভাই অজিত, রিনা ও পারুল আমার মেয়েকে বাড়িতে ডেকে নিয়ে বলে, তুই নাকি বিভিন্ন লোকজনের কাছে আমাদের বদনাম করিস। তুই নিজেই তো চরিত্রহীন। তোর স্বভাব-চরিত্র ভালো না। তুই অপকর্ম করে সুজিতের দোষ দিস। তুই গলায় দঁড়ি দিয়ে মরতে পারিস না। তুই মরলে এলাকা ভালো থাকবে। তাদের প্ররোচনায় আমার মেয়ে আত্মহত্যা করেছে। এর আগে সুজিত আমার মেয়েকে ধর্ষণ করেছিল। আমি তাদের বিচার চাই।
নড়িয়া থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. হাফিজুর রহমান বলেন, স্বপ্নার আত্মহত্যার ঘটনায় মা লাবনী থানায় মামলা করেছেন। মামলার আসামি অজিত বাছার ও তার মা পারুলকে গ্রেফতার করে আদালতে পাঠানো হয়েছে। অন্য আসামিদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।
মো. ছগির হোসেন/এএম/জেআইএম
Advertisement