ইউরোপের দেশ স্পেনে মুসলিম শাসনের অবসানের পর প্রকাশ্যে বা উচ্চস্বরে আজান দেয়ার কোনো ইতিহাস নেই। করোনাভাইরাসের ভয়ে এবার প্রকাশ্যে উচ্চস্বরে আজানের অনুমতি দিল দেশটির প্রশাসন। আজানের ‘আল্লাহু আকবার’ ধ্বনিতে মুখরিত হলো স্পেন।
Advertisement
শুক্রবার ঘরের জানালা বা বারান্দায় দাঁড়িয়ে স্থানীয় সময় সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় সম্মিলিতভাবে আজান দেয় দেশটির মুসলিম কমিউনিটি। স্পেনে বাইরে উচ্চস্বরে আজান দেয়ার অনুমতি না থাকলেও দেশটির প্রশাসন করোনাভাইরাস থেকে মুক্তি লাভের আশায় মুসলমানদের এমন আয়োজনের আবেদনে সম্মতি প্রকাশ করে। তাতে স্পেনের মুসলিম কমিউনিটির প্রতিটি দরজা–জানালায় প্রতিধ্বনিত হয় আজানের সুর।
মুসলিম কমিউনিটির পক্ষে বাংলাদেশিদের মানবাধিকার সংস্থা ‘ভালিয়ান্ডা বাংলা’ দেশটির কর্তৃপক্ষের কাছে আজান দেয়ার অনুমিত চায়। আবেদনের প্রেক্ষিতে করোনাভাইরাস থেকে মুক্তি লাভে স্রষ্টা দয়া কামনায় নিজ ঘরের দরজা-জানালায় আজান দেয়ার অনুমতি দেয় দেশটি।
শুক্রবার স্পেনের স্থানীয় সংবাদ মাধ্যম ইউরোপা প্রেস এ সংবাদ প্রকাশ করে। মানবাধিকার সংস্থা ‘ভালিয়ান্ডা বাংলা’র সভাপতি মো. ফজলে এলাহী বলেন, স্পেনে মুসলিম শাসনের অবসান হওয়ার পর আর উচ্চস্বরে বাইরে আজানের ধ্বনি শোনা যায়নি। যেভাবে স্পেনে ভয়াবহ করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব বেড়ে চলছে, এ বিপদ থেকে মুক্তির জন্য উচ্চস্বরে একই সময়ে আজানের অনুমতি চেয়েছিলাম আমরা।
Advertisement
তিনি বলেন, ‘স্পেনের কর্তৃপক্ষও আমাদের সে অনুমতি দেয়। সেজন্য সুন্দরভাবে মাদ্রিদ, বার্সেলোনাসহ স্পেনের বিভিন্ন শহরের মুসলিম অধ্যুষিত এলাকায় আজান দেয়া হয়েছে।’
এর আগে ২০১৭ সালের সেপ্টেম্বরে একবার স্পেনের গ্রানাডা-আন্দালুসিয়ার ঐতিহাসিক আলহামব্রা প্যালেসে আজান দেয়া হয়েছিল। এ আলহামব্রা প্যালেস মুসলিম শাসক ইউসুফ ১৩৩০ সালে নির্মাণ করেছিলেন। ১৪৯২ সালে স্পেন খ্রিষ্টানদের শাসনে পরিণত হয়। সে সময় এ প্রাসাদটি দেশটির বুদ্ধিজীবী ও গুণীশিল্পীদের জন্য ব্যবহৃত হতো।
উল্লেখ্য, বৈশ্বিক মহামারি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার দিক থেকে স্পেন সর্বোচ্চ তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে। দেশটিতে এখন পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত হয়েছে ২১ হাজার ৫৭১ জন। এতে মারা গেছে ১ হাজার ৯৩ জন। সুস্থ হয়েছে ১ হাজার ৫৮৮ জন। করোনাভাইরাস প্রতিরোধে দেশটিতে ১৪ মার্চ থেকে জরুরি রাষ্ট্রীয় সতর্কতা জারি রয়েছে।
এমএমএস/জেআইএম
Advertisement