যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল ইন্সটিটিউট অব হেলথ সতর্ক করে বলেছে, চলতি সপ্তাহের শেষের দিকে ৭০ হাজার মার্কিন নাাগরিক করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হতে পারেন। দেশটিতে করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা নাটকীয় হারে বৃদ্ধি পেতে পারে বলে সতর্ক করা হয়েছে।
Advertisement
ন্যাশনাল ইন্সটিটিউট অব হেলথের চিকিৎসক ফ্রান্সিস কলিন্স বলেন, তার ধারণা করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে যেতে পারে। তবে তার মানে এই নয় যে, এই ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব দ্রুত হারে বৃদ্ধি পাবে।
তিনি বলেন, এর মানে এই যে আমরা এখন এটা জানতে পারব যে কারা আক্রান্ত হয়েছে এবং কারা এর বাইরে রয়েছে। কারণ যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে এখন করোনার পরীক্ষা-নিরীক্ষা আরও বেশি সহজলভ্য হয়ে গেছে।
যুক্তরাষ্ট্রে এখন পর্যন্ত ১৯ হাজার ৭৭৪ জন করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে। তিনি সতর্ক করে বলেছেন, এই সংখ্যা এক সপ্তাহ বা ১০ দিন পরে কয়েকগুণ বেড়ে যেতে পারে।
Advertisement
দেশটিতে ২৭৫ জনের প্রাণ কেড়ে নিয়েছে করোনাভাইরাস। এই অবস্থা থেকে কখন বের হওয়া সম্ভব হবে এ বিষয়ে কলিন্স বলেন, আমরা জুলাই, আগস্ট বা সেপ্টেম্বরে সাধারণ জীবনে ফিরতে পারব? আসলে এ বিষয়ে আমার কোনো ধারণা নেই।
কলিন্স বলেছেন, সামাজিকভাবে লোকজনের মধ্যে দূরত্ব তৈরি করতে পারলে এই ভাইরাসের বিস্তার ঠেকানো সম্ভব। একই সঙ্গে প্রশাসন যে নির্দেশনা জারি করেছে তা মেনে চলার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
যুক্তরাষ্ট্রের সবগুলো অঙ্গরাজ্যেই করোনার প্রকোপ ছড়িয়ে পড়েছে। নিউইয়র্ক অঙ্গরাজ্যকে ‘লকডাউন’ ঘোষণা করা হয়েছে। মানুষের জীবনের জন্য অপরিহার্য নয় এমন ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ছাড়া সব বন্ধ রাখার ঘোষণা দেয়া হয়েছে। অন্যান্য অঙ্গরাজ্যে স্কুল-কলেজ বন্ধ করে দেয়া হয়েছে এবং চলাচলে কড়াকড়ি আরোপ করা হয়েছে।
কলিন্স এক বিবৃতিতে বলেন, দুর্বল জনগোষ্ঠী যারা সহজেই এই ভাইরাসে আক্রান্ত হতে পারেন তাদের প্রতি আমাদের সচেতন হতে হবে। তিনি বলেন, আমরা নিজেদের মধ্যে দূরত্ব রেখে ও সচেতনতার মাধ্যমে এই পরিস্থিতি থেকে বাঁচতে পারি।
Advertisement
বিশ্বের ১৮৫টি দেশ ও অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়েছে করোনাভাইরাস। এখন পর্যন্ত ২ লাখ ৭৫ হাজার ৯৩২ জন এই প্রাণঘাতী ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে এবং মারা গেছে ১১ হাজার ৩৯৮ জন। তবে এখন পর্যন্ত চিকিৎসা শেষে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছে ৯১ হাজার ৯১২ জন।
এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি মৃত্যুর ঘটনা ইতালিতে। সেখানে এখন পর্যন্ত করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা ৪৭ হাজার ২১। নতুন করে আক্রান্তের সংখ্যা ৫ হাজার ৯৮৬। দেশটিতে গত একদিনেই মারা গেছে আরও ৬২৭ জন। এ পর্যন্ত একদিনে করোনায় মৃত্যুর সর্বোচ্চ রেকর্ড এটা।
ফলে এখন পর্যন্ত দেশটিতে মোট মৃত্যু হয়েছে ৪ হাজার ৩২ জনের এবং চিকিৎসা শেষে সুস্থ হয়েছে ৫ হাজার ১২৯ জন। ইউরোপের এই দেশটিতে ৩৭ হাজার ৮৬০ জন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। আক্রান্তদের মধ্যে ২ হাজার ৬৫৫ জনের অবস্থা গুরুতর।
অপরদিকে, চীনে এখন পর্যন্ত আক্রান্তের সংখ্যা ৮১ হাজার ৮ এবং মারা গেছে ৩ হাজার ২৫৫ জন। এরপরেই রয়েছে স্পেন। সেখানে এখন পর্যন্ত আক্রান্তের সংখ্যা ২১ হাজার ৫৭১ এবং মারা গেছে ১ হাজার ৯৩ জন।
অপরদিকে জার্মানিতে আক্রান্তের সংখ্যা ১৯ হাজার ৮৪৮ এবং মারা গেছে ৬৮ জন। ইরানে আক্রান্তের সংখ্যা ১৯ হাজার ৬৪৪ এবং মারা গেছে ১ হাজার ৪৩৩ জন।
টিটিএন/এমএস