করোনা আতঙ্কের মধ্যেই গাইবান্ধা-৩ (সাদুল্লাপুর-পলাশবাড়ী) আসনের উপনির্বাচনে ভোটগ্রহণ চলছে। শনিবার (২১ মার্চ) সকাল ৯টা ভোটগ্রহণ শুরু হলেও ভোটার উপস্থিতি খুবই কম। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ভোটার উপস্থিতি বাড়ার সম্ভাবনা আছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। এ নির্বাচনে যেকোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা মোকাবিলায় প্রশাসনের পক্ষ থেকে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে অধিকাংশ কেন্দ্রে হাত ধোয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
Advertisement
সরেজমিনে দেখা যায়, গাইবান্ধার পলাশবাড়ী উপজেলার মহাদেবপুর উচ্চ বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্রে সকাল ৯টা থেকে ১০টা পর্যন্ত তেমন ভোটার উপস্থিতি নেই।
আব্দুল মালেক নামে এক ভোটার জানান, করোনাভাইরাস আতঙ্কের কারণে মূলত ভোটার উপস্থিতি কম। হাত ধোয়ার ব্যবস্থা আছে শুনে বেলা ১১টার পর ভোটার উপস্থিতি বাড়তে শুরু করেছে।
এদিকে পলাশবাড়ী উপজেলার তালুক জামিরা এলাকার অনেকেই ভোট দিতে না গিয়ে মাঠে কাজ করছেন। ভোটের প্রতি তাদের আগ্রহ নেই। খাইরুল ইসলাম নামে এক ব্যক্তি জানান, সরকার যেখানে স্কুল-কলেজ বন্ধ করে দিয়েছে সেখানে ভোটগ্রহণ বন্ধ করা দরকার ছিল। কারণ বিদেশফেরতরা কখন কোথায় যাচ্ছে তার ঠিক নেই। তাই লাইনে দাঁড়িয়ে ভোট দেয়ায় করোনার ঝুঁকি আছে। এ কারণেই ভোট দিতে যাননি । তার মতো অনেক সচেতন মানুষই করোনাভাইরাসের আতঙ্কে ভোট দিতে যায়নি ।
Advertisement
সাদুল্লাপুর উপজেলার বুজরুক রসুলপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্র দেখা যায়, শান্তিপূর্ণভাবে ভোটাররা তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করছেন। তবে এ সময় ভোটার উপস্থিত ছিল কম। বুজরুক রসুলপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রের প্রিসাইডিং অফিসার আনোয়ারুল ইসলাম, জানান, বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ভোটার উপস্থিতি বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
উপনির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী অ্যাডভোকেট উম্মে কুলসুম স্মৃতি পলাশবাড়ী টাউন হল ভোটকেন্দ্রে ভোট দিয়ে সাংবাদিকদের জানান, জয়ের ব্যাপারে তিনি শতভাগ আশাবাদী ।
গাইবান্ধা জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও রিটার্নিং কর্মকর্তা মাহাবুবুর রহমান জানান, সাদুল্লাপুর উপজেলার ১১টি ইউনিয়ন ও পলাশবাড়ী উপজেলার একটি পৌরসভাসহ ৯টি ইউনিয়নসহ দুই উপজেলায় ১৩২টি কেন্দ্রে মোট ৪ লাখ ৩৭ হাজার ৯০৮ জন ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন।
গাইবান্ধার জেলা প্রশাসক আব্দুল মতিন জানান, এ আসনের দুই উপজেলায় ১০ প্লাটুন বিজিবি, ২০ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও র্যাবের ২০টি টিম মাঠে কাজ করছে। করোনা প্রতিরোধে কেন্দ্রগুলোতে হাত ধুয়ে ভোট কক্ষে যাওয়ার জন্য সাবান, পানি ও হ্যান্ড স্যানিটাইজারের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।
Advertisement
গাইবান্ধার পুলিশ সুপার তৌহিদুল ইসলাম জানান, অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য ভোটগ্রহণের জন্য প্রিসাইডিং অফিসার, পোলিং অফিসার, নির্বাচন সংশ্লিষ্ট প্রায় আড়াই হাজার কর্মকর্তা ও প্রায় তিন হাজার আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য কাজ করছে।
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এ আসন থেকে নির্বাচিত হয়েছিলেন আওয়ামী লীগের ইউনুস আলী সরকার। ২০১৯ সালের ২৭ ডিসেম্বর তার মৃত্যুতে এ আসনটি শূন্য ঘোষণা করা হয়। চলতি মাসের ৬ তারিখ এ আসনের উপনির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হয়। তফসিলে ভোট গ্রহণের দিন ধার্য করা হয় ২১ মার্চ। এ উপনির্বাচনে আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জাতীয় পার্টি এবং জাসদের চারজন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
জাহিদ খন্দকার/আরএআর/এমএস