এর আগে পরিবারের তিন সদস্য মারা গেছে করোনাভাইরাসে। সর্বশেষ ওই পরিবারের এক আত্মীয় জানালেন, বৃহস্পতিবার ওই পরিবারের আরও এক সদস্য মারা গেছেন। এভাবে একই পরিবারের চার সদস্যের প্রাণ কেড়ে নিয়েছে করোনাভাইরাস।
Advertisement
এমন হৃদয়বিদারক ঘটনাটি ঘটেছে যুক্তরাষ্ট্রের নিউ জার্সি অঙ্গরাজ্যে। ভিনসেন্ট ফুসকো নামের ওই ব্যক্তি বৃহস্পতিবার সকালে একটি হাসপাতালে মারা যান। তার বোন এলিজাথে ফুসকো এবং তার আত্মীয় ও অ্যাটর্নি জেনারেল রোসেআন প্যারাডিসকো ফোদেরা এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম ডেইলি মেইল এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, আত্মীয়দের সঙ্গে রাতের খাবারে অংশ নিয়ে করোনায় আক্রান্ত হন ওই ব্যক্তি।
এর আগে ভিনসেন্টের মা গ্রেস ফুসকো (৭৩) বুধবার রাতে মারা যান করোনায়। তার কয়েক ঘণ্টা আগে মারা যান তার বড় ছেলে কারমিনে ফুসকো। কারমিনে ছিলেন এক ঘোড়া দৌড় প্রশিক্ষক। পেনসিলভানিয়ায় তার মৃত্যু হয়।
Advertisement
ডেইলি মেইল জানায়, ভিনসেন্টের বোন রিটা ফুসকো-জ্যাকসন (৫৫) মারা যান গত শুক্রবার। ভিনসেন্টর মা যখন মারা যান, তখন তিনি জানতেই না যে, তার দুই সন্তান ইতোমধ্যে পৃথিবী ছেড়ে চিরতরে বিদায় নিয়েছে।
মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএনকে এই হৃদয়বিদারক ঘটনা বর্ণনা করেছেন ভিনসেন্টের ছোট বোন এলিজাবেথ।
‘সবই ছিল অবিশ্বাস্য। মঙ্গলবার (১০ মার্চ) সকালে আমি ঘুম থেকে উঠি। তখন মা আমাকে ডেকে বলে, লিজ্জি, আমার ভালো লাগছে না। রিটারও একই অবস্থা। টনির অবস্থাও একই। তুমি কি আমাদের সাহায্য করতে পারবে?, আমি বললাম অবশ্যই মা’-বলেন এলিজাবেথ।
১০ মার্চ থেকে ১৯ মার্চ-এই নয় দিনে করোনা কেড়ে নিয়েছে এলিজাবেথের মা, দুই ভাই ও বোনের প্রাণ। আর ফোনেই মৃত্যুর সব সংবাদ পান তিনি। এখন ফোন ধরতে ভয় পান এলিজবেথ। কারণ এখনও তার দুই বোন ও এক ভাই করোনায় আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি আছেন। তিনি জানিয়েছেন, এদের মধ্যে দুইজনের অবস্থা সংকটাপন্ন এবং একজনের অবস্থা স্থিতিশীল।
Advertisement
বিশ্বে এখন সবচেয়ে বেশি আতঙ্ক ছড়াচ্ছে করোনাভাইরাস। এখন পর্যন্ত ১৭৯টি দেশে করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়েছে। সারাবিশ্বে ২ লাখ ৪৫ হাজার ৬১৩ জন এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে। মারা গেছে ১০ হাজার ৪৮ জন। এছাড়া চিকিৎসা শেষে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছে ৮৮ হাজার ৪৩৭ জন।
করোনা আতঙ্কে অনেক দেশই অবরুদ্ধ (লক ডাউন) হয়ে পড়েছে। দোকান-পাট, ব্যবসায় বাণিজ্য, স্কুল, কলেজ সব বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। এখন পর্যন্ত চীনে ৮০ হাজার ৯৬৭ জন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে। অপরদিকে মারা গেছে ৩ হাজার ২৪৮ জন।
করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর ঘটনায় এখন সবার ওপরে আছে ইতালি। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশটিতে আরও ৪২৭ জনের প্রাণহানির সঙ্গে সঙ্গে তারা ছাড়িয়ে গেছে করোনার উৎস চীনকেও। এ নিয়ে ইউরোপের দেশটিতে মোট মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৩ হাজার ৪০৫ জনে।
যুক্তরাষ্ট্রে আক্রান্তের সংখ্যা ১৪ হাজার ২৯৯ এবং মারা গেছে ২১৮ জন।
এসআর/পিআর