জাতীয়

করোনা : যাত্রীর ভিড় নেই বাস কাউন্টারে

বৈশ্বিকভাবে এখন বড় সমস্যার নাম করোনাভাইরাস। মরণঘাতি এ ভাইরাস দ্রুতই ছড়িয়ে পড়েছে বিশ্বের দেড় শতাধিক দেশে। বাদ যায়নি বাংলাদেশও। দেশে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ইতিমধ্যেই মাঠে নেমেছে সেনাবাহিনী। লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে মাদারীপুরের শিবচর উপজেলা। এ অবস্থায় দেশে গণপরিবহনে যাত্রী কমেছে।

Advertisement

আগামী এক সপ্তাহ করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে খুব গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছেন স্বাস্থ্য বিভাগ।

দেশে করোনাভাইরাস মোকাবিলায় প্রয়োজনে বাস চলাচল বন্ধ করা হবে বলেও জানিয়েছেন সেতুমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। যদিও এখন পর্যন্ত আনুষ্ঠানিক কোনো ঘোষণা আসেনি। তবে গণপরিবহন বিশেষ করে বাসে চলাচলের ক্ষেত্রে ব্যক্তিগত সুরক্ষায় প্রয়োজনীয় সব কিছুই ব্যবহারসহ বেশ কিছু বিষয় মেনে চলতে যাত্রী সাধারণ ও গণপরিবহন কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদ।

আইইডিসিআর পরিচালক অধ্যাপক ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা গত ১৬ মার্চ নিয়মিত সংবাদ সম্মেলনে কারও জ্বর, সর্দি, কাশি, গলা ব্যথা হলে গণপরিবহন ব্যবহার না করার আহ্বান জানান।

Advertisement

তিনি বলেন, গণপরিবহনে চলাফেরার ক্ষেত্রে আমরা অনুরোধ করবো, যাদের মধ্যে করোনাভাইরাস বা কোভিড-১৯ এর লক্ষণ বা উপসর্গ দেখা দেবে না, কিন্তু জ্বর, সর্দি, কাশি, গলা ব্যথা হয়েছে, তারাও গণপরিবহন ব্যবহার করবেন না। এটা অনেকটা গণজমায়েতের মতোই। একান্ত প্রয়োজন ছাড়া গণপরিবহনে চলাচল সীমিত করা উচিত।

আইইডিসিআর পরিচালক বলেন, যারা গাড়ির চালক ও হেলপার রয়েছেন, তারাও এ ক্ষেত্রে সচেতন থাকুন। তাদের মধ্যে এ ধরনের উপসর্গ দেখা দিলে তারা যেন সঙ্গে সঙ্গে আইইডিসিআরের হটলাইনে যোগাযোগ করেন এবং যেন গণপরিবহন ব্যবহার না করেন, না চালান। আমরা যদি গণপরিবহনের ক্ষেত্রে এ দুটি পরামর্শ মেনে চলি, তাহলে গণপরিবহন থেকে করোনাভাইরাস সংক্রমণ সীমিত হবে।

শুক্রবার (২০ মার্চ) সরেজমিনে দেখা যায়, রাজধানীর গাবতলী, শ্যামলী ও কল্যাণপুরের বাস কাউন্টারে ভিড় নেই। অধিকাংশ কাউন্টারই বলতে গেলে ফাঁকা। যদিও গণপরিবহন চলাচল বন্ধে কোনো আনুষ্ঠানিক নির্দেশনা জারি করা হয়নি।

হানিফ পরিবহনের জেনারেল ম্যানেজার মোশারফ হোসেন বলেন, বাস চলাচল বন্ধ হয়নি তবে যাত্রী কমেছে।

Advertisement

তিনি বলেন, গত ১৬ মার্চ বিকেল থেকে ১৭ মার্চ সকাল পর্যন্ত বাস কাউন্টারে অনেক ভিড় ছিল। ১৭ মার্চ ছুটির কারণে অনেকে বাড়ি গেছেন। এখন ফিরতি যাত্রীদের ভিড় বাড়তে পারে তবে ঢাকা থেকে বিভিন্ন জেলায় যাবার যাত্রী নেই বললেই চলে।

বাংলাদেশ বাস ট্রাক ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান রমেশ চন্দ্র ঘোষ জাগো নিউজকে বলেন, করোনার কারণে আতঙ্ক আছে, সতর্কতাও জরুরি। বাসের চালক সহকারীসহ যাত্রীদের সুরক্ষার জন্য কার্যকরী পদক্ষেপের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। তবে বাস চলাচল করবে।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ বাস পরিবহন মালিক সমিতির মহাসচিব খন্দকার এনায়েত উল্যাহ জাগো নিউজকে বলেন, ‘সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী আন্তঃজেলা বাস সার্ভিসের প্রতিটি বাসে হ্যান্ড স্যানিটাইজার রাখা হয়েছে, সঙ্গে টিস্যু পেপারও রাখা আছে। যেসব যাত্রী গাড়িতে উঠবে তারা আগে হ্যান্ড স্যানিটাইজার দিয়ে হাত জীবাণুমুক্ত করবে।

প্রতিটি বাসের সিট জীবাণুমুক্ত রাখতে যতটুকু পরিষ্কার রাখা যায়, ততটুকু ব্যবস্থা করা হচ্ছে দাবি করে তিনি বলেন, ‘পরিস্থিতি খারাপের দিকে গেলে সরকার যদি সিদ্ধান্ত নেয় বাস বন্ধ রাখার, তাহলে আমরা বন্ধ করে দেব।’

এনা পরিবহনের মালিক খন্দকার এনায়েত উল্যাহ আরও বলেন, রাজশাহীতে করোনা আতঙ্কের কারণে কিছু চিকিৎসক সুরক্ষার দাবি জানিয়ে কর্মবিরতিতে গেছেন। সেই আতঙ্কে রাজশাহী থেকে বাস চলাচল বন্ধের ঘোষণা দেয় শ্রমিকরা। তবে সেখানে কথা বলেছি। বাস চলাচলের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।

তিনি বলেন, করোনায় সতর্কতা ও সাবধানতাই বেশি জরুরি। করোনা মোকাবিলায় যদি গণপরিবহন বন্ধ করতে হয়, সেই নির্দেশনা সরকার দিলে অবশ্যই বন্ধ করবো। গতকালও মন্ত্রণালয়ের সচিবের সঙ্গে কথা হয়েছে। এখনো তেমন সিদ্ধান্ত হয়নি। তবে ৪০ শতাংশ যাত্রী কমেছে। কমাই স্বাভাবিক। নিয়মের মধ্যে অনেকে হোম কোয়ারান্টাইন মেনে চলার কারণে গণপরিবহনে চলাচল কমেছে।

জেইউ/এএইচ/এমএস