দুপুর ১২টা। রাজধানীর মহাখালী ফ্লাইওভারের নিচে রেলগেট সংলগ্ন স্টপেজে এক তরুণ বাস হেলপার উচ্চস্বরে 'এই আসেন, আসেন...যাত্রাবাড়ী, সায়েদাবাদ গুলিস্তান, সিট খালি সিট খালি' বলে ডাকাডাকি করছিলেন। মিনিট দুয়েক ডাকাডাকি করে মাত্র একজন যাত্রী উঠিয়ে বাসটি স্টপেজ ছেড়ে চলে গেল। একইভাবে পরপর কয়েকটি বাস কয়েক মিনিট করে অপেক্ষা করেও যাত্রী না পেয়ে প্রায় যাত্রীশূন্য বাস নিয়ে চলে গেল।
Advertisement
একেতো সাপ্তাহিক ছুটি শুক্রবার, তারওপর উচ্চমাত্রার ছোঁয়াচে করোনা ভাইরাসের আতঙ্কে প্রায় সব ধরনের গণপরিবহনে যাত্রী সংখ্যা আশঙ্কাজনকভাবে কমে গেছে। শুধু গণপরিবহনে নয়, রাজধানীর রাস্তাঘাটেও মানুষের উপস্থিতি কমে গেছে। যারা এই রাস্তায় বেরিয়েছেন তাদের অনেকেই করোনাভাইরাসের সংক্রমণ থেকে বাঁচতে মাস্ক পরে বেরিয়েছেন।
জাগো নিউজের এই প্রতিবেদক আজ সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত রাজধানীর ধানমন্ডি থেকে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর পর্যন্ত বিভিন্ন সড়ক ঘুরে প্রায় সব ধরনের গণপরিবহনে যাত্রী সংকট দেখতে পান।
রাজধানীর মিরপুর থেকে বাস যোগে আজিমপুরে আসেন মিরপুরের বাসিন্দা ফরিদা ইয়াসমিন। এ প্রতিবেদকের সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেন, অন্যান্য সময় বাসে সিট না পেয়ে দাঁড়িয়ে আসতে বাধ্য হন। কিন্তু আজ চিত্র ছিল একদম ব্যতিক্রম। আনুমানিক ৩৫/৪০ আসনের বাসে সর্বসাকুল্যে যাত্রীসংখ্যা ছিল ১০/১২ জন। তাছাড়া সকালে আসার সময় রাস্তাঘাটে মানুষের উপস্থিতিও কম দেখতে পান।
Advertisement
রাজধানীর লালবাগের বাসিন্দা আবুল হোসেন আলাপকালে জানান, চিরচেনা ঢাকা শহর কেমন যেন অচেনা হয়ে গেছে। গতকাল বিকেলে তিনি কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে অনেকক্ষণ দাঁড়িয়ে থেকেও মানুষের উপস্থিতি দেখতে পাননি। সন্ধ্যা নামতে না নামতেই গোটা এলাকা প্রায় জনমানবহীন হয়ে পড়ে।
উল্লেখ্য, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে সংক্রমিত হওয়ার আগে দেশে এখন পর্যন্ত ১৭ জন আক্রান্ত এবং ১ জন মারা গেছেন। রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে প্রায় ৫ হাজার প্রবাসী ১৪ দিনের হোম কোয়ারান্টিনে রয়েছেন। করোনা সংক্রমণ থেকে রক্ষা পেতে গণপরিবহন পরিহার করার আহ্বান জানিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে সম্প্রতি যারা বিদেশ থেকে ফিরেছেন বা তাদের সংস্পর্শে এসেছেন তাদের গণপরিবহন পরিহার করার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি তাদের ১৪ দিন হোম কোয়ারান্টিনে থাকতে অনুরোধ করেছেন।
এমইউ/এনএফ/এমএস
Advertisement