করোনা পরিস্থিতি মোকাবেলায় প্রায় সবদেশেই নিয়ম করা হয়েছে, বিদেশ থেকে দেশে ফেরার পর বাধ্যতামূলক ১৪ দিন হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকতে হবে। অন্যথায় ভোগ করতে হবে উপযুক্ত শাস্তি। মূলত অসচেতন নাগরিকদের জন্যই শাস্তির বিধান করা হয়েছে।
Advertisement
কিন্তু রিয়াল মাদ্রিদের সার্বিয়ান তারকা ফুটবলার লুক জোভিচ সচেতন নাগরিক হয়েও মানেননি সরকারের নির্দেশনা। স্পেন থেকে সার্বিয়ায় ফিরে হোম কোয়ারেন্টাইনে না থাকে উল্টো পার্টি করে বেড়িয়েছেন তিনি। যে কারণে পড়েছেন সরকারের রোষানলে। সরাসরি সার্বিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনা ব্রানাবিচ নিন্দা জানিয়েছেন জোভিচের এই কাণ্ডে।
চলতি মৌসুমের শুরু থেকে আইনট্রাখট থেকে ৬০ মিলিয়ন ইউরো ট্রান্সফার ফির বিনিময়ে রিয়াল মাদ্রিদের নাম লিখিয়েছিলেন প্রতিভাবান স্ট্রাইকার জোভিচ। তুমুল সম্ভাবনা নিয়ে রিয়ালে গেলেও, এখনও পর্যন্ত তেমন কিছুই করতে পারেননি তিনি। মৌসুমের প্রায় মাঝামাঝি পর্যন্ত তিনি খেলতে পেরেছেন ১৫টি ম্যাচের মাত্র ৩৯১ মিনিট, যেখানে গোল মাত্র ২টি।
ইউরোপের সবধরনের ফুটবল স্থগিত হওয়ার পর সার্বিয়ান সরকারের নিষেধাজ্ঞার পরেও স্পেন ছেড়ে জোভিচ ফিরে গেছেন নিজের দেশে। সেখানে গিয়েও আইন মানেননি। নির্দেশনা অনুযায়ী ১৪ দিনের কোয়ারেন্টাইনে থাকার বদলে বেলগ্রেডের রাস্তায় নিজের বান্ধবীর জন্মদিন উদযাপন করতে দেখা গিয়েছে তাকে।
Advertisement
যা একদমই ভালোভাবে নেয়নি সার্বিয়া সরকার। প্রধানমন্ত্রী ব্রানাবিচ এই কাজের সমালোচনা করে বলেন, ‘আমাদের ফুটবলার তারকারাই এ মুহূর্তে নেতিবাচক দৃষ্টান্ত স্থাপন করছেন। যা খুবই দুর্ভাগ্যজনক। তারা বিদেশে খেলে কোটি কোটি ইউরো উপার্জন করেন, কিন্তু দেশে ফেরার পর বাধ্যতামূলক ঘরে থাকার নির্দেশটা মানতে পারছেন না!’
এদিকে জোভিচের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, গত বৃহস্পতিবার তিনি রিয়াল মাদ্রিদের মেডিকেল টিমের প্রেসক্রিপশন মেনেই স্পেন থেকে দেশে ফেরার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। তবে হোম কোয়ারেন্টাইন ভাঙায় দুঃখপ্রকাশ করেছেন এ ২২ বছর বয়সী তারকা ফুটবলার।
নিজের আনুষ্ঠানিক বার্তায় জোভিচ লিখেছেন, ‘বর্তমান পরিস্থিতি খুবই ভয়াবহ। আমাদের উচিৎ সবার পাশে দাঁড়ানো, সাহায্য করা। আমি দুঃখিত যে, এখন আমাকে নিয়ে সব লেখালেখি হচ্ছে। তার বদলে এই সংকটময় পরিস্থিতি কাঁটিয়ে উঠতে যারা আসল নায়ক হিসেবে লড়ে যাচ্ছে, সেসব ডাক্তার দিয়ে এখন আলোচনা করা উচিৎ।’
তিনি আরও লিখেছেন, ‘মাদ্রিদে আমার কোভিড-১৯ টেস্টের ফল এসেছিল নেগেটিভ। তাই আমি ক্লাবের অনুমতি নিয়েই সার্বিয়ায় চলে আসার সিদ্ধান্ত নেই। যাতে করে আমার পরিবার এবং আশেপাশের মানুষদের সাহায্য করতে পারি।’
Advertisement
‘সার্বিয়ায় এসেও আমার টেস্টের ফল ছিলো নেগেটিভ। কিন্তু তখন আমাকে যথাযথ নির্দেশনা দেয়া হয়নি আইসোলেশন বা কোয়ারেন্টাইনের ব্যাপারে। স্পেনে থাকতে আমরা সুপারমার্কেট বা ফার্মেসিতে যাওয়ার অনুমতি পেয়েছিলাম। কিন্তু এখানে সেটা নেই। আমি সবার কাছে ক্ষমা চাচ্ছি যদি নিজের কাজের কারণে কাউকে বিপদে ফেলে থাকি।’
এসএএস