জাতীয়

করোনার মধ্যে জুমা নিয়ে আজহারীর যা পরামর্শ

সারা বিশ্বে মহামারি আকারে ছড়িয়ে পড়েছে প্রাণঘাতী নভেল করোনা ভাইরাস। ভাইরাসের বিস্তার ঠেকতে যেসব জায়গায় মানুষ বেশি জড়ো হয় সেসব স্থান এড়িয়ে চলা কিংবা বাড়তি সতর্কতার পরামর্শ দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা। এর মধ্যে খেলাধুলার স্থান, সিনেমা হল থেকে শুরু করে ধর্মীয় স্থানও রয়েছে। বাংলাদেশের মতো মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশগুলোতে জুমার নামাজের সময় বাড়ি সতর্কতা অবলম্বনের পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। সৌদি আরব ইতোমধ্যেই ওমরাহ বন্ধ করেছে।

Advertisement

জমায়েত এড়াতে বিশ্বের অনেক দেশ জুমার নামাজ বন্ধের ঘোষণা দেয়া হলেও বাংলাদেশ তা করেনি। তবে এ নামাজ নিয়ে সতর্ক করা হয়েছে। এ পরিস্থিতিতে জুমার নামাজে কী কী সতর্কতা অবলম্বন করা যেতে পারে তা উল্লেখ করে ফেসবুকে একটি পোস্ট দিয়েছেন সময়ের আলোচিত ব্যক্তি মাওলানা মিজানুর রহমান আজহারী।

তিনি লিখেছেন-

বহির্বিশ্বের অন্যান্য মুসলিম দেশের মত (মতো) যেহেতু রাস্ট্রীয় (রাষ্ট্রীয়) ভাবে জুমু’আর (জুমা) সালাত বন্ধের ঘোষণা এখনো আসেনি তাই, আগামীকাল জুমু’আর সালাতে অংশগ্রহনের (অংশগ্রহণ) ক্ষেত্রে সতর্কতামূলক নিম্নের পরামর্শ গুলো মেনে চলার চেষ্টা করুন।সম্মানিত খতীব মহোদয়গণের প্রতি:১- আলোচনা ও খুতবা সংক্ষিপ্ত করুন।২- স্বাস্থ্য সুরক্ষায় করোনা ভাইরাস থেকে বাঁচতে চিকিৎসকদের গাইডলাইন গুলো শেয়ার করুন।৩- ইসলামে পরিচ্ছন্নতার গুরুত্ব নিয়ে আলোকপাত করুন।৪- তাওবা, ইস্তিগফার ও পাপের জন্য সিজদায় কাঁদতে উদ্বুদ্ধ করুন।মসজিদ কতৃপক্ষের প্রতি:১- ডেটল বা সেভলন দিয়ে মসজিদের ফ্লোর মুছে রাখুন।২- ওজু খানায় সাবান বা হ্যান্ড স্যুপ রাখুন।মুসল্লিদের প্রতি:১- নিকটবর্তী মসজিদে জুমার সালাত আদায় করুন।২- সাথে করে মাস্ক, টিস্যু ও জায়নামাজ নিয়ে যান।৩- আপাতত মুসাফাহা করা থেকে বিরত থাকুন।৪- জ্বর, কাশি, সর্দি ইত্যাদিতে আক্রান্ত থাকলে ঘরে জোহরের নামাজ পড়ুন।

Advertisement

১০০৪৮ জনের প্রাণ কেড়েছে করোনাএখন পর্যন্ত ১৭৯টি দেশে করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়েছে। সারাবিশ্বে ২ লাখ ৪৫ হাজার ৬১৩ জন এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে। মারা গেছেন ১০ হাজার ৪৮ জন। এছাড়া চিকিৎসা শেষে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছে ৮৮ হাজার ৪৩৭ জন। করোনা আতঙ্কে অনেক দেশই অবরুদ্ধ (লক ডাউন) হয়ে পড়েছে। দোকান-পাট, ব্যবসায় বাণিজ্য, স্কুল, কলেজ সব বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। এখন পর্যন্ত চীনে ৮০ হাজার ৯৬৭ জন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে। অপরদিকে মারা গেছে ৩ হাজার ২৪৮ জন।

বাংলাদেশে এখন পর্যন্ত ১৮ জন করোনায় আক্রান্ত রোগী সনাক্ত হয়েছেন। এরমধ্যে মারা গেছেন একজন।

দেশের জন্য আগামী এক সপ্তাহ খুব গুরুত্বপূর্ণদেশে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে মাঠে নেমেছে সেনাবাহিনী। লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে মাদারীপুরের শিবচর উপজেলা। এ অবস্থায় দেশে আগামী এক সপ্তাহ করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে। চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন শেখ ফজলে রাব্বি মিয়া এ বিষয়ে জাগো নিউজকে বলেছেন, ‘পরিস্থিতির অবনতি হচ্ছে খুব দ্রুত। আগামী সাতদিন আমাদের জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ। এ অবস্থায় স্বাস্থ্য, আইনশৃঙ্খলা ও জেলা প্রশাসনকে সমন্বিতভাবে কাজ করতে হবে। করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার পর প্রায় ২৫ লাখ প্রবাসী দেশে ফিরেছেন। যে যেখান থেকে হোক, তাদের তথ্যগুলো ভেরিফাই করতে হবে। তারা কী অবস্থায় আছে, রোগের কোনো লক্ষণ আছে কিনা, কাদের সঙ্গে থাকছে। এ তথ্য অনুযায়ী সমন্বিত ব্যবস্থা নিতে হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘দেশে করোনাভাইরাসের উপস্থিতি জানার পর প্রথম সপ্তাহ চলে গেছে। ইতিমধ্যেই আমরা ভালো কিছু প্রস্তুতি নিতে পেরেছি। কারও শরীরে যদি করোনাভাইরাসের উপস্থিতি থাকে তাহলে এই সপ্তাহেই তা প্রকাশ পাবে। এ অবস্থায় কেউ যদি করোনা রোগী হন এবং তার সংস্পর্শে যারা ছিলেন তাদেরকেও স্থায়ী কোয়ারেন্টাইনে রাখার চিন্তা করা হচ্ছে।’

Advertisement

মালয়েশিয়ায় গৃহবন্দি ৬ লাখ বাংলাদেশিগত ২৪ ঘণ্টায় মালয়েশিয়াতে আরও ১১০ জন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। দেশটিতে এখন পর্যন্ত মহামারি আকারে ছড়িয়ে পড়া এ ভাইরাসে মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৯০০। এছাড়া মৃত্যু হয়েছে ২ জনের। এমতাবস্থায় দেশটিতে ৬ লাখ প্রবাসী বাংলাদেশি গৃহবন্দি অবস্থায় রয়েছেন। যদিও বাংলাদেশিদের কেউ এখন পর্যন্ত করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়নি। তারা চরম আতঙ্কে দিন পার করছেন। করোনাভাইরাস প্রতিরোধে ১৮ মার্চ থেকে ৩১ মার্চ পর্যন্ত লকডাউন ঘোষণা করায় মালয়েশিয়ার পথঘাট এখন জনশূন্য। সব জায়গায় সুনসান নীরবতা। এ অবস্থায় দেশটিতে অবস্থান করা প্রায় ৬ লাখ বাংলাদেশি অনিশ্চয়তায় দিন কাটাচ্ছেন।

এনএফ/এমএস