কুমিল্লায় একটি হিন্দু পরিবারের তিন সদস্যকে নির্মমভাবে জবাই ও কুপিয়ে হত্যা করার মামলায় চারজনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন কুমিল্লার জননিরাপত্তা বিঘ্নকারী অপরাধ দমন ট্রাইব্যুনাল এবং বিশেষ দায়রা জজ আদালত। রোববার দুপুরে এ রায় প্রদান করেন উক্ত আদালতের বিচারক মো. নবাবুর রহমান। রাষ্ট্রপক্ষের স্পেশাল পিপি অ্যাড. মোস্তাফিজুর রহমান লিটন জাগো নিউজকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। আদালত সূত্রে জানা যায়, বিগত ২০০১ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর রাত সাড়ে ৩টায় একদল ডাকাত জেলার দেবিদ্বার উপজেলার হারসার গ্রামের দুলাল চন্দ্র দাসের ঘরে প্রবেশ করে। এসময় ডাকাতদের চিনে ফেলায় দুলাল চন্দ্র দাস, তার মেয়ে আঁখি রাণী দাস ও মা চারুবালা দাসকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে ও জবাই করে হত্যা করা হয়। এ ব্যাপারে পরদিন মৃত চারুবালার চাচাতো ভাইয়ের ছেলে একই গ্রামের উষা রঞ্জন পালের ছেলে সুনীল চন্দ্র পাল বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা কয়েকজনকে আসামি করে দেবিদ্বার থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। এ ঘটনায় মামলার কর্মকর্তা (উপ-পরিদর্শক) এস আই শফিকুল ইসলাম নোয়াব মিয়া ও মোখলেছুর রহমান নামের দুই ব্যক্তিকে গ্রেফতার করে আদালতে সোপর্দ করার পর তারা ঘটনার দায় স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দেন। পরে ২০০২ সালের ১১ জুন নোয়াব মিয়া ও মোখলেছুর রহমানসহ চারজনের বিরুদ্ধে ডাকাতিসহ খুন করার অপরাধে অভিযোগ গঠন করা হয়। এ মামলায় আদালত ২৪ জন সাক্ষীর মধ্যে ২০জন সাক্ষীর স্বাক্ষ্য গ্রহণ ও আসামিদের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দির আলোকে আদালত মোখলেছুর রহমান, অহিদ মিয়া, খোরশেদ আলম ও নোয়াব মিয়াকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করেন। এছাড়া ১০ হাজার টাকা জরিমানা এবং অনাদায়ে আরও ছয় মাসের সশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করেন। মামলার স্পেশাল পিপি অ্যাড. মোস্তাফিজুর রহমান লিটন জাগো নিউজকে জানান, দীর্ঘ ১৪ বছর যাবৎ আমরা রাষ্ট্রপক্ষ চেয়েছিলাম আসামিদের মৃত্যুদণ্ড। কিন্তু বিজ্ঞ আদালত যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন, তাতেও রাষ্ট্রপক্ষ খুশি। আসামি পক্ষে মামলা পরিচালনা করেন অ্যাড. মাসুদ সালাউদ্দিন, অ্যাড. মো. রিয়াজ উদ্দিন মজুমদার, অ্যাড. আয়েশা বেগম ও অ্যাড. মো. সেলিম মিয়া।মো. কামাল উদ্দিন/এমজেড/পিআর
Advertisement