অর্থনীতি

করোনা মোকাবিলায় আরও ২০০ কোটি টাকা বরাদ্দ

করোনাভাইরাস মোকাবিলায় জরুরি ভিত্তিতে আরও ২০০ কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়েছে অর্থ বিভাগ। বৃহস্পতিবার (১৯ মার্চ) বিকেলে এ টাকা বরাদ্দ দিয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠিয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়ের এ বিভাগ। অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

Advertisement

এর আগে করোনাভাইরাস মোকাবিলায় জরুরি ভিত্তিতে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ১০০ কোটি টাকা বরাদ্দ চাইলেও ১১ মার্চ ৫০ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছিল। এ নিয়ে অর্থ বিভাগের অপ্রত্যাশিত ব্যয় ব্যবস্থাপনা খাত থেকে করোনাভাইরাস মোকাবিলায় ২৫০ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়া হলো।

অর্থ বিভাগের বরাদ্দপত্রে বলা হয়, স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের প্রস্তাবের প্রেক্ষিতে করোনাভাইরাস প্রতিরোধ ও আক্রান্তদের চিকিৎসার জন্য এ অর্থ বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। অর্থ বিভাগের অপ্রত্যাশিত ব্যয় ব্যবস্থাপনা খাত থেকে চলতি ২০১৯-২০ অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের অনুকূলে সচিবালয় অংশে সাধারণ থোক বরাদ্দ খাতে ২০০ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়া হলো। স্বাস্থ্য অধিদফতরের অনুকূলে এ অর্থ বরাদ্দ দেয়া হয়।

এ অর্থ চিকিৎসা ও শল্য চিকিৎসা সরঞ্জামাদি সরবরাহ, জনসচেতনতায় প্রকাশনা এবং কেমিক্যাল রি-এজেন্ট খাতে ব্যয় করতে হবে। এর আগের ৫০ কোটি টাকাও একইভাবে বরাদ্দ দেয়া হয়।

Advertisement

বরাদ্দকৃত এ অর্থ ব্যয়ে কিছু শর্তও জুড়ে দেয়া হয়েছে। এগুলো হচ্ছে- অর্থ ব্যয়ের ক্ষেত্রে পাবলিক প্রোকিউরমেন্ট অ্যাক্ট-২০০৬ এবং পাবলিক প্রোকিউরমেন্ট রুলস-২০০৮ অনুসরণসহ যাবতীয় সরকারি আর্থিক বিধি-বিধান যথাযথভাবে পালন করতে হবে। এ অর্থ প্রস্তাবিত খাত (করোনাভাইরাস ‘কোভিড-১৯’) ব্যতীত অন্য কোনো খাতে ব্যয় করা যাবে না।

বরাদ্দকৃত অর্থ চলতি অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটের সংশ্লিষ্ট খাতে সমন্বয় করতে হবে। এ খাতে অর্থ অন্য খাতে পুনঃউপযোজন বা স্থানান্তর করা যাবে না। অব্যয়িত অর্থ (যদি থাকে) এ বছরের ৩০ জুনের মধ্যে ফেরত দিতে হবে। এছাড়া অর্থ ব্যয়ের ১০ দিনের মধ্যে কোন কোন খাতে কত ব্যয় হয়েছে তার বিস্তারিত অর্থ বিভাগকে জানাতে হবে।

এর আগে বুধবার (১৮ মার্চ) অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, ‘করোনাভাইরাস চিকিৎসা কিংবা নিয়ন্ত্রণে যত টাকা প্রয়োজন হবে তা দিতে প্রস্তুত রয়েছে সরকার। প্রয়োজনে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় যদি চীনের মতো বিশেষ হাসপাতাল তৈরির উদ্যোগ নেয়, তাতেও অর্থায়ন করা হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের আর্থিক সক্ষমতা রয়েছে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের যদি যন্ত্রপাতি বা লজিস্টিক সাপোর্ট দরকার হয়, সেখানে চায়না যেভাবে হাসপাতাল করেছে, সে ধরনের কোনো হাসপাতাল (যদি) করতে হয়, কম সময়ের মাঝে, স্পেসিফিক পারপাস (বিশেষ উদ্দেশে) বিল্ড হাসপাতাল, এগুলো করার জন্য প্রধানমন্ত্রী কখনও মানা করবেন না। আমরাও সকলভাবে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কে সাহায্য করব অর্থায়ন করে, যাতে তাদের কাজগুলো সুন্দরভাবে এবং প্রয়োজনীয়তার তুলনায় কোনোভাবে পিছিয়ে না থেকে কাজগুলো করতে পারে।’

Advertisement

এর একদিন পরই ২০০ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়া হলো।

উল্লেখ্য, চীনের উহানে প্রথম আঘাত হানা দেয় এ ভাইরাস। ইতোমধ্যে বিশ্বের ১৬৫টি দেশ ও অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়েছে। বিশ্বব্যাপী ২ লাখ ২০ হাজারের বেশি মানুষ আক্রান্ত হয়েছে। প্রাণহানি হয়েছে ৯ হাজারের বেশি মানুষের।

বাংলাদেশে এখন পর্যন্ত ১৭ জন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। এর মধ্যে একজনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছে রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান (আইইডিসিআর)।

এমইউএইচ/এফআর/জেআইএম