বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে চীনের রাজধানী বেইজিংয়ে আসা লোকজনের জন্য হাসপাতাল চালু করেছে চীন। সেখানে বিদেশফেরত নাগরিকদের কোয়ারেন্টাইনে রাখা হবে।
Advertisement
চীনের গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইতোমধ্যেই বৃহস্পতিবার ভ্রমণকারীদের প্রথম দলটিকে বেইজিংয়ের আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে শিয়াওতাংশান হাসপাতালে নেয়া হয়েছে।
এর আগে সার্স ভাইরাসের সময় ওই মেডিকেল সেন্টারটি নির্মাণ করা হয়েছিল। এবার সেটাই করোনাভাইরাসের জন্য পুনর্নিমাণ করা হলো। এতে সময় লেগেছে ৫৩ দিন এবং ১৫ হাজারের বেশি কর্মী একসঙ্গে কাজ করেছে।
চীনের কোনো নাগরিক নতুন করে করোনায় আক্রান্ত হয়নি। তবে সেখানে নতুন করে বিদেশি নাগরিকরা করোনায় আক্রান্ত হচ্ছে। করোনার উৎপত্তিস্থল চীনের হুবেই প্রদেশের উহানে বুধবার আর কারো করোনায় আক্রান্তের খবর পাওয়া যায়নি।
Advertisement
গত ৩১ ডিসেম্বর চীনের উহান শহরেই প্রথম করোনার উপস্থিতি ধরা পড়ে। এরপরেই দেশটির বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে পড়ে এই ভাইরাস। চীনের বাইরে ১৭৩টি দেশ ও অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়েছে এই প্রাণঘাতী ভাইরাস।
কয়েক মাস ধরে করোনার সঙ্গে রীতিমত যুদ্ধ করে যাচ্ছে চীন। গত কয়েক মাসে প্রতিদিনই করোনায় আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা বাড়ছিল। কিন্তু প্রথমবারের মতো বুধবার এই অবস্থার পরিবর্তন চোখে পড়েছে।
ফলে নতুন করে আশার আলো দেখছে উহানের মানুষ। হুবেই প্রদেশের হেলথ কমিশন জানিয়েছে, এখন পর্যন্ত হুবেই প্রদেশে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা ৬৭ হাজার ৮শ এবং শুধুমাত্র উহানেই ৫০ হাজার পাঁচজন। তবে বুধবার আর কারো আক্রান্তের খবর পাওয়া যায়নি।
বেইজিংয়ের কর্মকর্তারা বলছেন, নতুন করে ৫৪ জন করোনায় আক্রান্ত হওয়ারা সবাই অন্যান্য দেশ থেকেই এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে। ফলে করোনার বিস্তার ঠেকাতে চীন যেভাবে কাজ করে যাচ্ছে তাদের সেই চেষ্টা বাঁধাগ্রস্ত হচ্ছে।
Advertisement
দেশটিতে মৃতের সংখ্যাও কমতে শুরু করেছে। গতকাল চীনে নতুন করে ৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। ফলে এখন পর্যন্ত মোট মৃত্যুর সংখ্যা ৩ হাজার ২৪৫।
চীনে এখন পর্যন্ত ৮০ হাজার ৯২৮ জন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে। অপরদিকে হাসপাতাল থেকে চিকিৎসা শেষে বাড়ি ফিরেছে ৭০ হাজার ৪২০ জন। গত সোমবার কর্মকর্তারা ঘোষণা করেছেন যে, চীনে প্রবেশ করা সবাইকে ১৪ দিনের জন্য কোয়ারেন্টাইনে থাকতে হবে।
নতুন করে পুনর্নিমাণ করা হাসপাতালে ১৬শ বেড রয়েছে এবং সেখানে ছয় শতাধিক মেডিকেল কর্মী থাকবে। সেখানে সন্দেহভাজন ব্যক্তিদের করোনার টেস্ট করা হবে এবং কারো মধ্যে করোনার লক্ষণ দেখা দিলে তাদের চিকিৎসা শুরু হবে।
এর আগে ২০০৩ সালে এক সপ্তাহেই ওই হাসপাতাল নির্মাণ করে সে সময় সার্সে আক্রান্ত ব্যক্তিদের চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। সে সময় ৭৭৪ জনের মৃত্যু হয়েছিল। গত ২৩ জানুয়ারি বেইজিংয়ের কর্মকর্তারা নতুন করে এই হাসপাতাল পুনর্নিমাণের কাজ শুরুর সিদ্ধান্ত নেন। এরপরেই এর কাজ শুরু হয়।
টিটিএন/এমকেএইচ