যুক্তরাষ্ট্রের তিন বৃহত্তর গাড়ি নির্মাণ কোম্পানির শ্রমিকরা এক সঙ্গে দুই সপ্তাহের জন্য গাড়ি নির্মাণ বন্ধের ঘোষণা দিয়েছে। করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব ফ্যাক্টরি ওয়ার্কারদের মাঝে ছড়িয়ে পড়া ঠেকাতে বুধবার সকালে ওয়ার্কার ইউনিয়নের নেতারা এমন ঘোষণা দেন।
Advertisement
যে সময় এ ঘোষণা এলো ঠিক সে সময় আমেরিকার শেয়ার মার্কেটে গাড়ি কোম্পানির সকল শেয়ারে বড় ধরণের ধস নেমেছে। জেনারেল মোটরস, ফোর্ড মোটরস এবং ফিয়েট ক্রাইসলার অটো মোবাইলস তিন কোম্পানির শ্রমিক নেতারা মঙ্গলবার রাতে এক সভা শেষে এ সিদ্ধান্ত নেন।
নেতারা জানান, কোম্পানি শ্রমিকের স্বাস্থ্য, পরিষ্কার পরিছন্ন কাজের পরিবেশ ও ফ্যাক্টরির খাবার ও আড্ডা দেয়ার স্থানে অতিরিক্ত সুরক্ষা ব্যবস্থা নিতে বদ্ধপরিকর।
গাড়ি শ্রমিক ইউনিয়ন ইউনাইটেড অটোমোবাইল ওয়ার্কার ইউনিয়ন ‘ইউ এ ডাব্লিউ’ সেন্টারস ফর ডিজিস কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন (সিডিসি) এর পরামর্শ মেনে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে কাজের পরিবেশ নিশ্চিত করবেন। ইউ এ ডাব্লিউ-এর প্রেসিডেন্ট রয় গ্যাম্বেল বলেন, তিন কোম্পানির নেতারা একমত হন যে, যতক্ষণ পর্যন্ত ফ্যাক্টরির পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন পরিবেশ নিশ্চিত হয়েছে ততদিন আংশিকভাবে ফ্যাক্টরি চলবে। একসাথে যেন সকলে কাজে না ঢুকতে বা বের হতে হয় সে ব্যাপারে কাজের শুরুর সময় ভিন্ন হবে।
Advertisement
জিএম, ফোর্ড মোটরস ও এফসিএ তিন প্রতিষ্ঠানের কর্তা ব্যক্তিরা এ ব্যাপারে শ্রমিক নেতাদের সঙ্গে বসে বিস্তারিত জানাবেন বলে জানা যায়। মিশিগানে তিন প্রতিষ্ঠানে এক লাখ একান্ন হাজার শ্রমিক কাজ করেন।
শ্রমিক নেতা গ্যাম্লার আরও জানান, আমেরিকার তিন গাড়ি নির্মাণ প্রতিষ্ঠানের প্রধানকে ই-মেইলের মাধ্যমে দুই সপ্তাহ বন্ধের সিদ্ধান্ত জানান। এছাড়া ইউরোপের যেসব কোম্পানি আমেরিকায় গাড়ি নির্মাণ করছেন করোনাভাইরাস নিয়ে তাদের কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে।
এদিকে বুধবার স্টক মার্কেটে বড় ধরনের ধস নেমেছে। জেনারেল মোটরসের স্টক গত আঠারো দিনে ৩৫ ডলার থেকে নেমে এখন ১৭ ডলার, ফোর্ড মোটরসের স্টক গত আঠারো দিনে ৮ ডলার থেকে নেমে সাড়ে ৪ ডলারে থেমেছে। ফিয়েট ক্রাইসলার ১৩ ডলার থেকে নেমেছে ৭ ডলারে। অন্যদিকে ইলেক্ট্রিক গাড়ি কোম্পানি টেসলায় করোনা আঘাত হেনেছে আরও ভয়াবহভাবে, শেয়ার ৯১৭ ডোলার থেকে নেমেছে ৩৬১ ডলারে।
গত সোমবার থেকে সকল গাড়ি কোম্পানির প্রকৌশলীরা বাসা থেকে কাজ করছেন। ইমারজেন্সি না হলে প্রকৌশলীদের অফিসে যেতে নিষেধ করা হয়েছে।
Advertisement
বাংলাদেশি গাড়ি প্রকৌশলী ড. মোহাম্মদ নাজমুল আনোয়ার বলেন, করোনাভাইরাসে গাড়ি নির্মাণে বেশ শক্তভাবে আঘাত হেনেছে। মানব সেবার আগে নিজের ও পরিবারের স্বাস্থ্য নিশ্চয়তা। তাই সকলে বাসা থেকেই কাজ করছি।
অন্যদিকে গাড়ির সাপ্লায়ারের ঊর্ধ্বতন এক ফাইন্যান্স কর্মকর্তা ইয়াসের সাত্তার জানালেন, করোনাভাইরাসের ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে বেশ সময় লাগবে। এ ভাইরাসের কারণে অর্থনীতির এ মন্দায় বেশ কিছু গাড়ি নির্মাণ ও গাড়ির যন্ত্রাংশ নির্মাণ কোম্পানি দেউলিয়া ঘোষণা করবে।
এমআরএম/এমকেএইচ