আমার খুব ভালো লাগছে। করোনার পরীক্ষামূলক ভ্যাকসিন নেয়ার পর এভাবেই উচ্ছ্বাস প্রকাশ করলেন এক মার্কিন নারী। তিনি দুই সন্তানের জননী। গতকাল প্রাণঘাতী নভেল করোনাভাইরাসের পরীক্ষামূলক ভ্যাকসিনের প্রথম ডোজের পরীক্ষামূলক কার্যক্রম শুরু হয়।
Advertisement
যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব হেলথের অর্থায়নে এই পরীক্ষামূলক কার্যক্রম চলছে। সিয়াটলের কায়সার পার্মানেন্তে ওয়াশিংটন হেলথ রিসার্চ ইনস্টিটিউটে ভ্যাকসিনের পরীক্ষামূলক ব্যবহার শুরু করেছে।
যুক্তরাষ্ট্রের সিয়াটলের নাগরিক জেনিফার হলার। স্থানীয় সময় সোমবার এই নারীর ওপরই প্রথম করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিন পরীক্ষামূলকভাবে প্রয়োগ করা হয়েছে। এই ভ্যাকসিনের প্রথম ডোজ প্রয়োগ করা হলেও স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা বলছেন, ভ্যাকসিন পুরোপুরি প্রস্তুত হতে এক বছর থেকে ১৮ মাস সময় লেগে যেতে পারে।
গত ৩১ ডিসেম্বর চীনের হুবেই প্রদেশের উহান শহরে প্রথমবারের মতো করোনাভাইরাসের উপস্থিতি ধরা পড়ে। সেখানে এই ভাইরাস দ্রুত গতিতে ছড়িয়ে পড়তে থাকে। একই সঙ্গে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তেও আতঙ্কজনকহারে করোনার প্রকোপ ছড়িয়ে পড়তে শুরু করায় বিশেষজ্ঞরা এর ভ্যাকসিন আবিষ্কারে কাজ শুরু করেন।
Advertisement
অনেক কম সময়ের মধ্যেই করোনার পরীক্ষামূলক ভ্যাকসিনের কাজ এগিয়ে নেয়া সম্ভব হয়েছে। এই ভ্যাকসিনের গবেষণা দলের প্রধান ড. লিসা জ্যাকসন বলেন, আমরা এখন একটি টিম। এই জরুরি মুহূর্তে যা করা দরকার আমরা সবাই সেটাই করতে চাচ্ছি।
এদিকে করোনার পরীক্ষামূলক ভ্যাকসিন গ্রহণের বিষয়ে জেনিফার হলার বলেন, আমরা সবাই অসহায় বোধ করছি। এটা আমার জন্য কিছু একটা করার বড় সুযোগ। তিনি এই কার্যক্রমে অংশ নেয়ায় তার দুই সন্তানও বেশ খুশি।
করোনার পরীক্ষামূলক ভ্যাকসিন নেওয়া দ্বিতীয় স্বেচ্ছাসেবী হলেন মাইক্রোসফটের নেটওয়ার্ক প্রকৌশলী নিল ব্রাউনিং। তিনি বলেছেন, একজন নাগরিক হিসেবে মূল্যবোধের জায়গা থেকেই তিনি এই পরীক্ষায় অংশ নিয়েছেন।
মোট ৪৫ জন তরুণ, সুঠাম স্বেচ্ছাসেবীর শরীরে এই পরীক্ষামূলক ভ্যাকসিন প্রয়োগ করা হবে। তাদের দুই ডোজে এই ভ্যাকসিন দেয়া হবে।
Advertisement
ভ্যাকসিন উদ্ভাবনের এ প্রক্রিয়া এসেছে এনআইএইচ এবং মডের্না ইনকর্পোরেশনের হাত ধরে। পরীক্ষামূলক ভ্যাকসিন থেকে স্বেচ্ছাসেবীদের সংক্রমিত হওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই।
এই ভ্যাকসিনে করোনাভাইরাস নেই। মূলত ভ্যাকসিনের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া বোঝার জন্য এই পরীক্ষা চালানো হচ্ছে। বড় কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া না থাকলে তা আরও বড় পরীক্ষার পথ খুলে দেবে।
করোনার প্রাদুর্ভাব শুরুর পর থেকেই সারা বিশ্বেই গবেষকরা এর ভ্যাকসিন তৈরির চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। বিভিন্ন ধরনের ভ্যাকসিন তৈরির চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন তারা।
কোনো কোনো গবেষক সাময়িক এক ধরনের ভ্যাকসিন তৈরির চেষ্টাও চালিয়ে যাচ্ছেন। তারা বলছেন, সাময়িক এ ভ্যাকসিন মানুষের শরীরে এক থেকে দু'মাস কাজ করবে, ততদিনে হয়তো দীর্ঘমেয়াদি ভ্যাকসিন তৈরির পথ খুলে যাবে বলে আশাবাদী তারা।
টিটিএন/জেআইএম