রাজধানীর শাহবাগে আজিজ সুপার মার্কেটের সামনের ফুটপাতের এক কোণায় নিয়মিত জুতা সেলাই করেন সেলিম মিয়া। ব্যস্ততম এ রাস্তায় অসংখ্য মানুষ ও যান চলাচল করার কারণে বলতে গেল ধুলোবালিতে দিনভর কাটে তার। ধুলোবালি থেকে নিজেকে রক্ষা করতে কখনও মাস্ক পরেননি সেলিম মিয়া।
Advertisement
কিন্তু গত কয়েকদিন ধরে রেডিও-টেলিভিশনে করোনাভাইরাস খুবই ছোঁয়াচে এবং এটি হাঁচি-কাশির মাধ্যমে ছড়ায় তা জানতে পেরে দুদিন আগে ৬০ টাকা দিয়ে একটি মাস্ক কিনে পরে তবে জুতা সেলাইয়ের কাজ করেন তিনি।
আজ (মঙ্গলবার) সকালে এ প্রতিবেদকের সঙ্গে আলাপকালে সেলিম মিয়া বলেন, ‘মার্কেট ও হাসপাতালের (বিএসএমএমইউ) সামনে কাম করি। কত ধরনের মানুষ আহে। কে আবার লগে কইরা করোনা লইয়া আহে, জাইন্যা শুইন্যা রিস্ক লমু কেন?’
শুধু সেলিম মিয়াই নন, বাংলাদেশসহ সারাবিশ্বে ছড়িয়ে পড়া নতুন ধরনের করোনা (কোভিড-১৯) ভাইরাসের সংক্রমণ থেকে রক্ষা পেতে সচেতন হয়ে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে সমাজের বিভিন্ন শ্রেণি ও পেশার মানুষ মাস্ক ব্যবহার করছেন। ফলে রাস্তাঘাটে ব্যবহার বেড়েছে মাস্কের।
Advertisement
বিভিন্ন শ্রেণি ও পেশার মানুষের সঙ্গে আলাপকালে জানা গেছে, কয়েকদিন আগে আতঙ্কে মাস্ক কেনার হিড়িক পড়লেও বর্তমানে বিভিন্ন গণমাধ্যমে এ সম্পর্কিত প্রচার-প্রচারণা বৃদ্ধির ফলে সচেতন হয়েই মাস্ক পরছেন তারা।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মাশতবার্ষিকী উপলক্ষে আজ সরকারি ছুটির দিন। বছরব্যাপী যথাযোগ্য মর্যাদায় সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোগে ব্যাপক কর্মসূচি গ্রহণ করা হলেও করোনা আতঙ্কে অনুষ্ঠানে ছেদ পড়েছে।
আজ সকালে সরেজমিনে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় দেখা গেছে, করোনার কারণে রাস্তাঘাটে মানুষের উপস্থিতি অনেক কম। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস ও শহীদ সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে এ দিবসটিতে হাজার হাজার মানুষের পদচারণায় মুখরিত থাকার কথা থাকলেও ক্যাম্পাস ও উদ্যান বলতে গেলে ফাঁকা।
জনসমাগম হলে করোনাভাইরাস সংক্রমিত হতে পারে এ আশঙ্কায় অনুষ্ঠান কাটছাঁট করা হয়েছে। যারাই রাস্তায় বেরিয়েছেন তাদের অনেকেই সতর্ক হয়ে মাস্ক পরে বেরিয়েছেন। রিকশাচালকদের অনেককেই মাস্ক পরে রিকশা চালাতে দেখা যায়।
Advertisement
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে মধ্যবয়সী রিকশাচালক চাঁন মিয়া বলেন, ‘সারাদিন কত কিসিমের কাস্টমার রিকশায় ওঠে। কে আবার করোনা লইয়া ওঠে এই ভয়ে মাস্ক পরছি।’
রাজধানীর শাহবাগের ফুটপাতে সোহেল নামে এক তরুণকে ৩০ টাকা থেকে ৬০ টাকা মূল্যে মাস্ক বিক্রি করতে দেখা যায়। তিনি জানান, কয়েকদিন আগে করোনা আতঙ্কে মাস্ক কিনতে মানুষ হুমড়ি খেয়ে পড়েছিল। এখন মানুষ সচেতন হয়ে বুঝেশুনে মাস্ক কিনছে।
তবে আগের তুলনায় বিক্রি কিছুটা কম বলে জানান তিনি।
এমইউ/বিএ/জেআইএম