নীলফামারীর ডিমলায় মনোয়ার হোসেন নামের দুই বছরের এক শিশুর পানিতে পড়ে মৃত্যুর ঘটনা নিয়ে রহস্যের সৃষ্টি হয়েছে। রোববার সকালে ডিমলা থানার পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে শিশুটির লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য জেলার মর্গে পাঠিয়েছে। এর আগে শনিবার দুপুরে নীলফামারীর ডিমলা উপজেলার টেপাখড়িবাড়ি ইউনিয়নের তিস্তা নদীর ওপারে উত্তর খড়িবাড়ি চরের এই ঘটনায় রাতে শিশুটির নানার অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ লাশ উদ্ধার করেছে।পুলিশ সূত্রে জানা যায়, টেপাখড়িবাড়ী ইউনিয়নের উত্তর খড়িবাড়ী চরের আব্দুর রহিমের মেয়ে মনি বেগমের সঙ্গে একই চরের মৃত মালেক বেপারির ছেলে খয়বর আলীর বিয়ে হয়। তাদের সংসারে একমাত্র ছেলে সন্তান ছিল মনোয়ার হোসেন। সম্প্রতি পারিবারিক কলহে স্বামী স্ত্রীর মধ্যে বিয়ে বিচ্ছেদ ঘটে। বিচ্ছেদ ঘটলেও একমাত্র সন্তান বাবা না মার কাছে থাকবে তা নিয়ে দ্বন্দ্ব শুরু হয়। এক পর্যায়ে স্থানীয় প্রভাবশালীদের হস্তক্ষেপে ডিমলা থানা পুলিশের মাধ্যমে সন্তানটিকে তার মায়ের হেফাজতে দেয়া হয়।সেই থেকে সন্তানটিকে নিয়ে মনি বেগম তার বাবা রহিম বাদশার বাড়িতে বসবাস করে আসছে। এ অবস্থায় শনিবার বেলা ১১টায় শিশু মনোয়ার হোসেন নিখোঁজ হয়। শিশুটিকে তার মা ও নানা বিভিন্ন স্থানে খুঁজে না পেয়ে বিষয়টি টেপাখড়িবাড়ি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান রবিউল ইসলাম শাহীনকে অবগত করেন। এর ফাঁকে দুপুর আড়াইটার দিকে শিশুটির লাশ ওই চরের একটি ডোবায় ভাসতে দেখে এলাকাবাসী লাশ উদ্ধার করে। বিষয়টি প্রথমে স্বাভাবিক অবস্থায় তিস্তা নদীর পানির ডোবায় পড়ে শিশুটির মৃত্যু হয়েছে বলে এলাকার সকলেই একমত হয়। বিষয়টি শিশুটির বাবা খয়বর আলীকে জানানো হলে তিনি তার সন্তানকে পরিকল্পিতভাবে হত্যার অভিযোগ তুলে বিচ্ছেদ হওয়া স্ত্রীর বিরুদ্ধে। চিরদিনের জন্য সন্তান হারিয়ে পাগল প্রায় শিশুটির মা মনি বেগম আঁতকে উঠেন। এক পর্যায় মনি বেগম অভিযোগ তুলে বলেন, মূল ঘটনা তাহলে তার বিচ্ছেদ হওয়া স্বামী ঘটিয়ে এখন তার উপর চাপানোর চেষ্টা করছে। টেপাখড়িবাড়ি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান রবিউল ইসলাম শাহীন বলেন, যত দূর শুনেছি শিশুটি পানিতে ডুবে মারা গেছে। এখন স্বামী ও স্ত্রীর মধ্যে বিচ্ছেদ হওয়ার কারণে বিরোধের জের ধরে হয়তো দুই পক্ষ পাল্টাপাল্টি অভিযোগ তুলেছে। তাই বিষয়টি জটিল আকার ধারণ করায় তা ডিমলা থানায় অবগত করা হয়েছে। ডিমলা থানা পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শনের করে রোববার দুপুর ১২টায় লাশ উদ্ধার করে নিয়ে আসে। লাশের ময়নাতদন্তের জন্য জেলার হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। ডিমলা থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রহুল আমিন খান জাগো নিউজকে বলেন, শিশুটির ময়নাতদন্তের রিপোর্ট আসলে বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া যাবে শিশুটি পানিতে পড়ে মৃত্যু হয়েছে নাকি হত্যা করে পানিতে ফেলে দেয়া হয়েছে।জাহেদুল ইসলাম/এসএস/পিআর
Advertisement