জাতীয়

রাষ্ট্রপতির অপেক্ষায়...

সব প্রস্তুতি শেষ। এখন কেবলই অপেক্ষা। কখন আসবেন তিনি। কখন আসবেন ভাটির শার্দুল, হাওরে উন্নয়নের রূপকার। হাজার হাজার হাওরবাসীর সঙ্গে অপেক্ষায় কিশোরগঞ্জের দুর্গম হাওর উপজেলা অষ্টগ্রামে ধলেশ্বরী নদীতে নির্মিত ‘আবদুল হামিদ সেতু।’ রাষ্ট্রপতির নামে নির্মিত এ সেতু বদলে দিয়েছে হাওরের জীবনধারা। যোগাযোগের ক্ষেত্রে এনেছে আমূল পরিবর্তন। তাই সেতুকে ঘিরে অষ্টগ্রামের হাওর জনপদে বইছে আনন্দের জোয়ার। রোববার আবদুল হামিদ সেতু উদ্বোধন করবেন ভাটির কৃতিসন্তান দেশের রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। তাই সেই ক্ষণটিকে স্মরণীয় করে রাখতে অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে হাওরবাসী।বিকেল ৩টায় আবদুল হামিদ সেতু উদ্বোধন করবেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। সেতু উদ্বোধন উপলক্ষে বিকেলে সাড়ে তিনটায় অষ্টগ্রাম পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে এক জনসভায় ভাষণ দিবেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। রাষ্ট্রপতিকে বরণ করতে অধীর আগ্রহে অপেক্ষায় হাওরবাসী।জানা গেছে, এক সময়ে দুর্গম ও পশ্চাৎপদ হাওর উপজেলা অষ্টগ্রামের ধলেশ্বরী নদীতে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় নির্মাণ করা হয় ৩শ ৪১ মিটার দীর্ঘ পাকা সেতু। ৪২ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত এ সেতু প্রকল্পে আছে এক কিলোমিটার সংযোগ সড়ক ও একটি কালভার্ট। এলাকাবাসীর একান্ত ইচ্ছায় সেতুর নামকরণ করা হয় ‘আবদুল হামিদ সেতু।’ সেতুটি নির্মাণ হওয়ায় অষ্টগ্রামের কয়েকটি ইউনিয়ন ছাড়াও হাওরের সঙ্গে সরাসরি রাজধানী ঢাকার সড়ক যোগাযোগ সম্ভব হবে। হাওর জনপদের সঙ্গে যোগাযোগের নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হবে পার্শ্ববর্তী তিনটি জেলার। দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম জেলা কিশোরগঞ্জ। অসংখ্য নদী-নালা আর হাওর-বাওর অধ্যুষিত এ জেলার সবচেয়ে দুর্গম জনপদ অষ্টগ্রাম। বর্ষায় নৌকা আর শুকনায় পা এই হলো এখানকার যোগাযোগ চিত্র। বর্ষায় হাওরের এক একটি গ্রামকে মনে হয় ভাসমান কচুরি পানার মতো। অষ্ট্রগ্রাম থেকে কিশোরগঞ্জের দিকে স্থলপথে আসতে সময় লাগে তিন থেকে ৪ ঘণ্টা। কোনো দুর্যোগ-দুর্বিপাকে মানুষের কষ্টের সীমা থাকে না। এ অবস্থা থেকে মুক্তি পেতে হাওরবাসী দীর্ঘদিন ধরেই এমন একটি দিনের জন্যই অপেক্ষা করছিল। অবশেষে ভাটির প্রবীণ রাজনীতিক আব্দুল হামিদ রাষ্ট্রপতি হওয়ার পরই হাতের নাগালে আসে সেই সম্ভাবনা। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, ৪২ কোটি টাকা ব্যয়ে ধলেশ্বরী নদীর ওপর এক কিলোমিটার সংযোগ সড়কসহ ৩শ ৪১ মিটার দীর্ঘ পিসি গার্ডার পাকা সেতুর নির্মাণ কাজ শুরু হয় ২০১৩ সালের অক্টোবরে। দ্রুত গতিতে শেষ হয় সেতুর নির্মাণ কাজ।এলাকাবাসী জানিয়েছে, ধলেশ্বরী সেতুর নির্মাণ কাজ শেষ হওয়ায় হাওরের সঙ্গে রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশে সড়ক যোগাযোগের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। শুকনো মৌসুমে অষ্টগ্রাম থেকে বাজিতপুর হয়ে সরাসরি ঢাকায় যাতায়াত সম্ভব হবে। কিশোরগঞ্জ জেলা সদরে যাওয়া যাবে সড়ক পথে। আর হাওরের ইটনা, মিটামইন ছাড়াও পার্শ্ববর্তী সুনামগঞ্জ, হবিগঞ্জ ও নেত্রকোনা জেলার সঙ্গে স্থাপিত হবে সড়ক যোগাযোগ।অষ্টগ্রাম উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সহিদুল ইসলাম জেমস জাগো নিউজকে বলেন, ‘আমরা এক সময় স্বপ্ন দেখতাম অষ্টগ্রাম থেকে গাড়িতে করে ঢাকা যাচ্ছি। বিগত ৪০ বছর ধরে এটাকে স্বপ্নই মনে হতো। কিন্তু আমাদের নেতা আব্দুল হামিদ জাতীয় সংসদের স্পিকার হওয়ার পর স্বপ্ন পূরণের সম্ভাবনা সৃষ্টি হয়। আর আব্দুল হামিদ রাষ্ট্রপতি হলে খুলে যায় সম্ভাবনার দুয়ার। এখন আমরা সেই সুদিনের দ্বারপ্রান্তে। আগামী বর্ষায় নৌকার বদলে আমরা সড়ক পথে জেলা সদরে যেতে পারব বলে আশা করছি। নূর মোহাম্মদ/এসএস/এমএস

Advertisement