জাতীয়

কুকুরে কামড়ানো শিশুটির ঠাঁই হচ্ছে ছোটমনি নিবাসে

নাম-পরিচয়হীন হতভাগা সেই নবজাতক শিশুটির ঠাঁই হচ্ছে আজিমপুর ছোটমনি নিবাস শিশু পালন কেন্দ্রে। রোববার দুপুর ১২টায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক বিগ্রেডিয়ার জেনারেল মিজানুর রহমান আনুষ্ঠানিকভাবে সমাজসেবা অধিদফতরের কর্মকর্তাদের হাতে হতভাগিনী এই শিশুটিকে তুলে দেবেন। হাসপাতালের উপ-পরিচালক ডা. নাজিমুননেছা এ খবরের সতত্যা স্বীকার করে সকাল সাড়ে ১০টায় জাগো নিউজকে জানান, ঢামেক  হাসপাতালে সমাজসেবা অধিদফতরের একটি অফিস রয়েছে। এখানকার কর্মকর্তারা অসহায় দরিদ্র রোগীদের আর্থিক সহায়তা প্রদানসহ বিভিন্ন ধরনের সহায়তা করে থাকে। ক্ষুদে এই শিশুটিকে সমাজসেবা অধিদফতরের হাতে তুলে দেয়া হবে। তিনি জানান, আজিমপুরে সমাজসেবা অধিদফতরের ছোটমনি নিবাস নামে একটি শিশু পালন কেন্দ্র রয়েছে। সেখানেই তাকে নেয়া হবে। নবজাতক বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. আবিদ হোসেন মোল্লা জাগো নিউজকে বলেন, নবজাতক শিশুটি এখন মোটামোটি সুস্থ। কুকুরে কামড়ানোর ফলে তার নাকে ও ঠোঁটে যে ক্ষত হয়েছে তা এই মুহূর্তে বয়স কম হওয়ার কারণে প্লাস্টিক সার্জারি করা সম্ভব হচ্ছেনা। আগামী ২ থেকে তিন মাস পরে প্লাস্টিক সার্জারি করা হবে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, শিশুটিকে রোববার রিলিজ দেয়া হচ্ছে এ খবর শোনার পর থেকে নবজাতক বিভাগের স্পেশাল বেবি কেয়ার ইউনিটের চিকিৎসক, নার্স, ওয়ার্ডবয়সহ সকলেরই মন ভীষণ খারাপ। শিশুটির কেউ না থাকায় সকলে মিলে গত তিন সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে তাকে দেখভাল করছেন। নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক প্লাস্টিক সার্জন জানান, কুকুরের কামড়ে ক্ষুদে এই শিশুটির বুড়ো আঙ্গুল ও তার পাশের আঙ্গুল খসে পড়ার অবস্থা হয়েছিল। কুকুর কামড়ে ঠোঁটের মাংস ছিঁড়ে ফেলেছিল। তবে বর্তমানে আগের তুলনায় ক্ষত কম। কিন্তু তার রিকনস্ট্রাকটিভ প্লাস্টিক সার্জারি করতে হবে। তারা বলেন, নবজাতকের বয়স খুবই কম হওয়ার কারণে আপাতত তার ঠোঁট ও নাকে প্লাস্টিক সার্জারি করা সম্ভব হচ্ছে না। তিন মাস পর তার অস্ত্রোপচার করা হবে।গত ১৫ সেপ্টেম্বর (মঙ্গলবার) দুপুর আনুমানিক আড়াইটায় রাজধানীর উত্তর কাফরুলের ডোরিন গার্মেন্টসের দক্ষিণ পাশে পুরাতন বিমানবন্দর এলাকার রানওয়ের পাশ থেকে পরিত্যক্ত অবস্থায় ওই নবজাতককে উদ্ধার করা হয়।ওই সময় সেখানে কয়েকজন শিশু খেলাধুলা করছিল। হঠাৎ করেই তাদের চোখে পড়ে অদূরে ঝোঁপের ভিতর একটি কুকুর মুখ দিয়ে কী যেন কামড়ে ধরার চেষ্টা করছে। কৌতুহলবশত সামনে এগিয়ে যেতেই রক্তমাখা এক নবজাতককে দেখে ভয়ে আঁতকে উঠে চিৎকার চেঁচামেচি শুরু করে তারা। পরবর্তীতে জাহানারা নামে এক নারী শিশুটিকে উদ্ধার করে প্রথমে শিশু হাসপাতাল ও পরে ঢামেক হাসপাতালে ভর্তি করেন।এমইউ/এসএইচএস/এমএস

Advertisement