করোনাভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধে চমৎকার দৃষ্টান্ত দেখিয়েছে চীন। মাত্র তিনমাসের মধ্যেই নতুন সংক্রমণের হার প্রায় শূন্যের কোঠায় নামিয়ে এনেছে তারা। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশটিতে নতুন করে মাত্র চারজন করোনা আক্রান্ত হয়েছেন, আর মারা গেছেন একজন। প্রায় ১৪০ কোটি জনসংখ্যার দেশটিতে এ পর্যন্ত করোনাভাইরাসে মারা গেছেন ৩ হাজার ১৭০ জন। সেখানে ৮০ হাজারের বেশি মানুষ কোভিড-১৯ আক্রান্ত হলেও এদের মধ্যে সুস্থ হয়ে বাসায় ফিরেছেন প্রায় ৬৪ হাজার।
Advertisement
চীনে করোনার প্রকোপ কমলেও এটি তাণ্ডব চালাচ্ছে ইউরোপ, আমেরিকা ও এশিয়ার বিভিন্ন দেশে। তবে, অন্য দেশগুলো চীনের মতো ব্যবস্থা নিলে আগামী জুন মাস নাগাদ করোনা মহামারি দূর হবে বলে জানিয়েছেন এক গবেষক ও চীনা কর্মকর্তা।
গত ডিসেম্বরে সংক্রমণ শুরুর পরপরই ভাইরাসের উৎস উহানসহ বেশ কয়েকটি শহর পুরোপুরি অবরুদ্ধ ঘোষণা করে বেইজিং কর্তৃপক্ষ। মরদেহ সংগ্রহ করে নির্দিষ্ট স্থানে নিয়ে পুড়িয়ে ফেলা, স্কুল-কলেজ বন্ধ, জনসমাগম নিষিদ্ধ, ১০ দিনেই পৃথক হাসপাতাল তৈরিসহ বেশ কিছু আলোচিত পদক্ষেপ নিয়েছে তারা।
এসব বিষয় উল্লেখ করে চীন সরকারের জ্যেষ্ঠ চিকিৎসা উপদেষ্টা ঝং নানশান বৃহস্পতিবার এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, আমি সব দেশকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্দেশনা অনুসরণ ও জাতীয় পর্যায়ে হস্তক্ষেপের আহ্বান জানাই। সব দেশ এক হলে আগামী জুন মাস নাগাদ এটি (মহামারি) শেষ হতে পারে।
Advertisement
২০০৩ সালে সার্স (সিভিয়ার অ্যাকিউট রেসপিরেটরি সিন্ড্রোম) সংক্রমণের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের জন্য খ্যাতিসম্পন্ন মহামারি বিশেষজ্ঞ ঝং বলেন, এই (করোনা) পরিবারভুক্ত ভাইরাসগুলো সাধারণত উষ্ণ মাসগুলোতে অপেক্ষাকৃত কম সক্রিয় হয়, এটি সংক্রমণের গতি কমাতে সাহায্য করতে পারে।
তিনি বলেন, সব দেশের ইতিবাচক পদক্ষেপগুলোর প্রেক্ষাপটেই আমি জুন মাসের হিসাব করেছি। কিন্তু, যদি কোনও দেশ করোনার সংক্রমণ ও ক্ষয়ক্ষতি মোকাবিলায় শক্তিশালী পদক্ষেপ না নেয়, তবে এটি (মহামারি) আরও দীর্ঘস্থায়ী হতে পারে।
বিশ্বজুড়ে এ পর্যন্ত অন্তত ১২৭টি দেশ ও অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়েছে নভেল করোনাভাইরাস। বিশ্বব্যাপী এতে আক্রান্ত হয়েছেন অন্তত ১ লাখ ৩৪ হাজার ৬৭৯ মানুষ, মারা গেছেন ৪ হাজার ৯৭৩ জন। এছাড়া, ৬৯ হাজার ১৪২ রোগী চিকিৎসার মাধ্যমে সুস্থ হয়ে উঠেছেন।
সূত্র: দ্য স্ট্রেইট টাইমস
Advertisement
কেএএ/এমকেএইচ