আন্তর্জাতিক

ইউরোপে করোনায় ৯৫১ জনের মৃত্যু, আক্রান্ত ২৩৩৩৯

ইউরোপের দেশগুলোতে করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছেই। এখন পর্যন্ত ইউরোপের বিভিন্ন দেশে ২৩ হাজার ৩৩৯ জন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে এবং প্রাণ হারিয়েছে ৯৫১ জন। তবে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ইতালি।

Advertisement

ইউরোপের দেশগুলোর মধ্যে করোনাভাইরাসে সবচেয়ে বেশি মৃত্যু ও আক্রান্তের সংখ্যা ইতালিতেই। দেশটি যেন এক মৃত্যুপুরীতে পরিণত হয়েছে। সেখানে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ১৯৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৮২৭ জনে।

গত ২৪ ঘণ্টায় দেশটিতে করোনাভাইরাসে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩১ শতাংশ। একদিনে নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন দুই হাজার ৩১৪ জন। চিকিৎসাধীন রয়েছেন ১০ হাজার ৫৯০ জন। দেশটিতে এখন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা ১২ হাজার ৪৬২ জন- চীনের পর যা সর্বোচ্চ।

ইতোমধ্যেই দেশটির ২০টি প্রদেশের সবগুলোতেই জরুরি অবস্থা জারি করা হয়েছে। একই সঙ্গে খাবারের দোকান এবং ফার্মেসি ছাড়া সব ধরনের দোকান-পাট বন্ধ রাখার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। ডেনমার্কের অবস্থাও খারাপের দিকে যাচ্ছে। সেখানে এখন পর্যন্ত ৫১৪ জন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে বলে বুধবার স্থানীয় কর্তৃপক্ষ নিশ্চিত করেছে।

Advertisement

দেশটিতে ১ হাজার ৩০৩ জনকে কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছে। দেশটির সব স্কুল, বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। গত ৩১ ডিসেম্বর চীনের হুবেই প্রদেশের উহান শহরে প্রথম করোনার উপস্থিতি ধরা পড়ে। এরপর থেকেই তা বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে পড়েছে।

বুধবার প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসকে বৈশ্বিক মহামারি ঘোষণা করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। বিশ্বব্যাপী এখন পর্যন্ত ১ লাখ ২৬ হাজার ৫০২ জন এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে এবং মারা গেছে ৪ হাজার ৬৩৭ জন।

এদিকে, সুইডেনে প্রথমবারের মতো করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে একজনের মৃত্যু হয়েছে। বয়স্ক এক নারী করোনায় আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। সেখানেই নিবির পরিচর্যাকেন্দ্রে তার মৃত্যু হয়েছে।

অপরদিকে, আয়ারল্যান্ডেও প্রথম মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। দেশটিতে এখন পর্যন্ত করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা ৩৪। এছাড়া বুধবার বেলজিয়াম, বুলগেরিয়া এবং আলবেনিয়ায় করোনায় আক্রান্ত হয়ে প্রথম মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।

Advertisement

ইতালিতে করোনার প্রকোপ বেড়ে যাওয়ায় সুইজারল্যান্ড দেশটির সঙ্গে নয়টি সীমান্ত বন্ধ করে দিয়েছে। অপরদিকে প্রতিবেশী অস্ট্রিয়া এবং স্লোভেনিয়া ইতালির পর্যটকদের ওপর ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। মেডিকেল সার্টিফিকেট ছাড়া ইতালির কোনো নাগরিক এই দুই দেশে ভ্রমণ করতে পারবে না। স্পেনে করোনাভাইরাসে এখন পর্যন্ত আক্রান্তের সংখ্যা ২ হাজার ২৭৭ এবং মারা গেছে ৫৫ জন।

এদিকে, ইউরোপ থেকে আগত নাগরিকদের ওপর সব ধরনের ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা জারি করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তবে এই নিষেধাজ্ঞার আওতায় থাকছে না যুক্তরাজ্য। আগামী শুক্রবার থেকে এই নিষেধাজ্ঞা চালু হবে। নভেল করোনাভাইরাসের প্রকোপ বেড়ে যাওয়ায় এমন পদক্ষেপ নিলেন ট্রাম্প।

এই ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞার মধ্যে সব ধরনের বাণিজ্যিও বন্ধ থাকবে। জাতির উদ্দেশে দেয়া এক ভাষণে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বলেন, ইউরোপে বেশি মানুষ করোনায় আক্রান্ত হচ্ছে কারণ দেশগুলো চীন থেকে লোকজনের আসা-যাওয়া বন্ধ করতে পারছে না।

যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞার পর মধ্যপ্রাচ্যের দেশ সৌদি আরবও ইউরোপের ওপর ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। করোনা আতঙ্কে ইউরোপীয় ইউনিয়নভূক্ত দেশ এবং আরও ১২ দেশের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে।

এর আগে ওমান, ফ্রান্স, জার্মানি, তুর্কি, স্পেন, আরব আমিরাত, কুয়েত, বাহরাইন, লেবানন, সিরিয়া, ইরাক, মিসর, ইতালি এবং দক্ষিণ কোরিয়ায় নাগরিকদের ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা আনে সৌদি। আগের ওই নিষেধাজ্ঞা বাড়িয়ে এবার আরও দেশের ওপর নিষেধাজ্ঞা আনা হলো।

টিটিএন/জেআইএম