জাতীয়

করোনার আতঙ্কে সাবেক এমপির জানাজায় লোক কম

করোনো ভাইরাসের আতঙ্ক দেখা দিয়েছে বিএনপির সাবেক এমপি রহিম উদ্দিন ভরসার নামাজে জানাজাতেও। বৃহস্পতিবার বেলা ১১টায় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় অনুষ্ঠিত এই জানাজায় লোক-সমাগম তেমন না হওয়া জন্য সাড়ে ১১ পর্যন্ত অপেক্ষা করা হয়।

Advertisement

কিন্তু তেমন লোক পাওয়া যায়নি। এমনকি নিজ দলের মাত্র তিনজন নেতা উপস্থিত ছিলেন। ছিলেন না বিএনপির মহাসচিব ফখরুল ইসলাম আলমগীরও। পরে কম লোকের উপস্থিতিতেই তার জানাজা সম্পন্ন করা হয়।

১৯৭৯ সালে দ্বিতীয় জাতীয় সংসদে বিএনপির মনোনয়নে রংপুর-১০ (বর্তমানে ২২ রংপুর-৪) আসন থেকে নির্বাচিত সাবেক এই এমপির জানাজায় ছিলেন না সংসদের তেমন কর্মকর্তা-কর্মচারী। অন্যান্য সময় এলাকাবাসী সংসদে অনুষ্ঠিত জানাজায় অংশ নিলেও তারাও আজ যাননি।

আশপাশের কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, মূলত করোনা ভাইরাসের আতঙ্কের কারণে তারা জানাজায় অংশ নেননি। এই ধরনের জানাজায় সাধারণত শতশত লোক উপস্থিত হন। আর এই জানানায় উপস্থিতি ছিলেন মাত্র ৯০ জনের মতো। অথচ সংসদের কর্মকর্তা-কর্মচারীর সংখ্যাই প্রায় ১২’শ।

Advertisement

রংপুর জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ও বিশিষ্ট শিল্পপতি রহিম উদ্দিন ভরসার জানাজায় বিএনপির চেয়ে আওয়ামী লীগের নেতাদেরই বেশি উপস্থিতি দেখা গেছে। বিএনপির জয়নাল আবেদীন ফারুক, মো. হারুন অর রশিদ এমপি, সাবেক এমপি নিজামুদ্দিন ছাড়া আর কেউ ছিলেন না।

অন্যদিকে আওয়ামী লীগের হুইপ আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন, অনুমিত হিসাব সম্পর্কিত কমিটির সভাপতি মো. আব্দুস শহীদ, মো. হাবিবে মিল্লাত এমপি, জাতীয় পার্টির পীর ফজলুর রহমান উপস্থিত ছিলেন। পরে তারা মরহুমের কফিনে পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।

জানাজায় কম লোক হওয়ার কারণ জানতে চাইলে সাবেক বিরোধীদলীয় চিফ হুইপ জয়নুল আবেদীন ফারুক জাগো নিউজকে বলেন, করোনা আতঙ্কে বিশ্ব আতঙ্কিত। এ জন্য হয়তো লোকসমাগম কম। আর আওয়ামী লীগের এমপি মারা গেলে সংসদের কর্মরতরা হুমড়ি খেয়ে পড়ে। কিন্তু বিএনপির এমপির বেলা আসতে চান না তারা।

তবে সংসদের এক কর্মকর্তা জানান, জানাজা আওয়ামী লীগ বিএনপির বিষয় না। সব দলই সমান। মুসলিমদের সব জানাজায় অংশ নেয়া সওয়াবের কাজ। কিন্তু করোনা আতঙ্কের কারণে অনেকেই যাননি।

Advertisement

মনিপুরীপাড়ার দোকানি ফজলুর রশীর বলেন, আমরা সংসদের অনেক জানাজায় অংশ নিয়েছি। এবার অংশ নিতে চেয়েছিলাম। কিন্তু করোনার কারণে আমরা যাইনি।

জানাজা শেষে তেজগাঁও পুরাতন বিমানবন্দর থেকে হেলিকপ্টারযোগে রহিম উদ্দিন ভরসার নিজ বাড়ি রংপুরে মরদেহ নিয়ে যাওয়া হয়। তার জানাজায় পরিবারের কয়েকজন অংশ নেন ও মরহুমকে নিয়ে স্মৃতিচারণ করেন।

প্রসঙ্গত, গতকাল বুধবার (১১ মার্চ) দুপুর ১টা ২০ মিনিটে রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন। রহিম উদ্দিন ভরসা জিয়াউর রহমানের শাসনামলে বিএনপিতে যোগ দিয়ে বিলুপ্ত রংপুর-১০ (বর্তমান রংপুর-৪) আসন থেকে ১৯৭৯ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।

তিনি রংপুর জেলা বিএনপির সভাপতি হিসেবে দীর্ঘদিন দায়িত্ব পালন করেন এবং রংপুরের স্থানীয় পত্রিকা দৈনিক যুগের আলোর প্রতিষ্ঠাতা প্রকাশক। ২০০১ সালে অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ও ২০০৮ সালের নবম জাতীয় নির্বাচনে রংপুর-৪ আসন থেকে বিএনপির হয়ে নির্বাচন করে পরাজিত হন তিনি। রহিম উদ্দিন ভরসা ১৯৩৪ সালে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবার নাম মনের উদ্দিন পাইকার।

এইচএস/জেডএ/জেআইএম