জাতীয়

১৫ এয়ারলাইন্সকে হুঁশিয়ারি: করোনা নিয়ে দায়িত্ব অবহেলায় কঠোর শাস্তি

প্রাণঘাতী নভেল করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে শাহজালালসহ দেশের তিন আন্তজার্তিক বিমানবন্দরে নিয়মিত যাতায়াতকারী ১৫টি এয়ারলাইন্সকে তাদের প্রত্যেক যাত্রীর মাঝে হেলথ ডিক্লারেশন ফরম বিতরণ ও যথাযথভাবে ফরম শেষে তা সংগ্রহ করাসহ যাত্রীদের ওপর কঠোর নজরদারি করতে নির্দেশনা দেয়া হযেছে।

Advertisement

স্বাস্থ্য অধিদফতরের একাধিক দায়িত্বশীল কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জাগো নিউজের সঙ্গে আলাপকালে জানান, গত ১০ ও ১১ মার্চ পরপর দুদিন সিভিল এভিয়েশন কর্তৃপক্ষ ও স্বাস্থ্য বিভাগের শীর্ষ কর্মকর্তারা সব কয়েকটি এয়ারলাইন্সের শীর্ষ কর্মকর্তা, প্রতিনিধি বা তাদের অ্যাসোসিয়েশনের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। সেখানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বরাত দিয়ে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলা হয়েছে, করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকানোর বিষয়টি সরকার সর্বোচ্চ গুরত্বের সাথে দেখছে। ইতোমধ্যেই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মবার্ষিকীর বিভিন্ন অনুষ্ঠান বাতিল বা কাটছাট করা হয়েছে।

করোনা ভাইরাস রোগটিতে মৃত্যুঝুঁকি কম থাকলেও সংক্রমণের হার খুবই বেশি। ঘনবসতিপূর্ণ এ দেশে একবার তা ছড়িয়ে পড়লে নিয়ন্ত্রণ করা কষ্টকর হবে। সার্বিকভাবে এর সাথে সরকারের মানসন্মান জড়িত। তাই এয়ারলাইন্সগুলোর ফ্লাইটে হেলথ ডিক্লারেশন ফরম বিতরণে দায়িত্বে অবহেলার কারণে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত কোনো রোগী ফরম পূরণ না করে দেশে প্রবেশ করলে বড় ধরনের সংক্রমণের ঝুঁকি থাকবে। ফলে এয়ারলাইন্সগুলোর দায়িত্বে অবহেলা করলে তা খুঁজে বের করে কঠোর শাস্তি প্রদান করা হবে।

এ সময় বিভিন্ন এয়ারলাইন্সের প্রতিনিধিরা ফ্লাইটের যাত্রীদের মাঝে হেলথ ডিক্লারেশন ফরম বিতরণ ও তা পূরণ করিয়ে নেয়াসহ যাত্রীদের মধ্যে কারও জ্বর, হাঁচি-কাশি অথবা শ্বাসকষ্টের লক্ষণ রয়েছে কিনা সে ব্যপারে নজরদারি বৃদ্ধি করবে বলে প্রতিশ্রুতি দেন।

Advertisement

জানা গেছে গত দুদিনের বৈঠকের পর রাষ্ট্রীয় বিমান সংস্থা বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সসহ সব কয়েকটি এয়ারলাইন্সের যাত্রীদের কাছ থেকে আগের তুলনায় অনেক বেশি সংখ্যক হেলথ ডিক্লারেশন ফরম পাওয়া যাচ্ছে। তাছাড়া শাহজালাল আন্তজার্তিক বিমানবন্দরে নতুন দুটি থার্মাল স্ক্যানার স্থাপিত হয়েছে। ভিআইপি টার্মিনালে একটি ও সাধারণ টার্মিনালে আরও ১টি নতুনসহ মোট দুটি থার্মাল স্ক্যানারে হেলথ স্ক্রিনিং করা হচ্ছে। ফলে আগের তুলনায় যাত্রীদের দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করার ভোগান্তি কমেছে।

গত ২১ জানুয়ারি থেকে হেলথ স্ক্রিনিং শুরু হয়েছে। ১১ মার্চ পর্যন্ত তিনটি আন্তজার্তিক বিমানবন্দর, স্থলবন্দর, সমুদ্রবন্দর ও রেলষ্টেশন দিয়ে আগত ৫ লাখ ৫২ হাজার ৭৪৬ জনের স্ক্রিনিং করা হয়। তাদের মধ্যে ২ লাখ ৮১ হাজার ২২৫ জনই তিনটি বিমানবন্দর দিয়ে আসেন। গত ২৪ ঘণ্টায় সারাদেশের বিমান, স্থল ও সমুদ্রবন্দর এবং রেলষ্টেশন দিয়ে ১২ হাজার ২৭ জনের স্ক্রিনিং হয়। তাদের মধ্যে তিনটি বিমানবন্দরেই ৬ হাজার ১৮১ জনের স্ক্রিনিং হয়। এ পর্যন্ত দেশে ৩ জন করোনা ভাইরাসের রোগী পাওয়া গেছে। তাদের মধ্যে দুজন সুস্থ হয়ে উঠেছেন। যেকোনো সময় তাদের হাসপাতাল থেকে রিলিজ দেয়া হবে

শাহজালাল আন্তজার্তিক বিমানবন্দরের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. শাহরিয়ার সাজ্জাদ জানান, পর পর দু'দিন বৈঠকে নির্দেশনা দেয়ার পর আগের তুলনায় এয়ারলাইন্সগেুলোর তৎপরতা বেড়েছে। দুটি নতুন থার্মাল স্ক্যানার স্থাপনে যাত্রীদের স্ক্রিনিংয়ে সময়ও কম লাগছে বলে তিনি জানান।

এমইউ/এনএফ/এমকেএইচ

Advertisement