ইতালিতে সব ধরনের দোকান-পাট বন্ধের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। তবে খাবারের দোকান এবং ফার্মেসি এই নিষেধাজ্ঞার বাইরে থাকবে। দেশটিতে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়তে থাকায় এমন সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
Advertisement
ইউরোপের দেশগুলোর মধ্যে করোনাভাইরাসে মৃত্যু ও আক্রান্তের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি ইতালিতে। দেশটি যেন এক মৃত্যুপুরীতে পরিণত হয়েছে। সেখানে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ১৯৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৮২৭ জনে।
গত ২৪ ঘণ্টায় দেশটিতে করোনাভাইরাসে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩১ শতাংশ। একদিনে নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন দুই হাজার ৩১৪ জন। চিকিৎসাধীন রয়েছেন ১০ হাজার ৫৯০ জন। দেশটিতে এখন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা ১২ হাজার ৪৬২ জন- চীনের পর যা সর্বোচ্চ। ইউরোপের অন্যান্য দেশেও করোনার প্রকোপ ছড়িয়ে পড়েছে।
ইতালি বলছে, করোনার প্রকোপ বৃদ্ধি ঠেকাতে ফার্মেসি এবং খাবারের দোকান ছাড়া সব ধরনের দোকান-পাট বন্ধ রাখা হবে। অপরদিকে, করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা এতো বাড়ছে যে, দেশটিতে হাসপাতালের কর্মীরা রীতিমত হিমসিম খাচ্ছেন। তারা গুরুত্বের ভিত্তিতে আক্রান্তদের সেবা দিচ্ছেন।
Advertisement
করোনাভাইরাসের কারণে অবরুদ্ধ হয়ে পড়েছে ইতালির ছয় কোটি মানুষ। থমকে গেছে গোটা ইতালি। যানবাহন আগের মতো চলাচল না করায় বেড়ে গেছে যাত্রী দুর্ভোগ।
অর্থনৈতিক চরম ক্ষতির দিকে যাচ্ছে। নতুন করে কোনো পর্যটক ইতালিতে প্রবেশ করতে না পারায় ব্যবসা-বাণিজ্য বন্ধ হয়ে দিন দিন বেকারের সংখ্যা বাড়ছে। করোনাভাইরাসের প্রকোপ বৃদ্ধি ও মৃতের সংখ্যা বাড়তে থাকায় দেশটির প্রধানমন্ত্রী গিসেপে কন্তে লোকজনকে বাড়ির বাইরে বের না হওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।
পুরো দেশজুড়েই ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা ও জনসমাগমে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। এর আগে দেশটির ১৪টি প্রদেশে ৮ মার্চ থেকে আগামী ৩ এপ্রিল পর্যন্ত জরুরি অবস্থা জারি করা হয়। কিন্তু পরে তা বাড়িয়ে দেশটির ২০টি প্রদেশের সবগুলোতেই জরুরি অবস্থা জারি করা হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী কন্তে লোকজনকে বাড়ির বাইরে বের না হওয়ার নিষেধাজ্ঞার পাশাপাশি প্রয়োজনীয় সফরের ক্ষেত্রে কর্তৃপক্ষের অনুমতি নেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। বুধবার জাতির উদ্দেশে দেয়া এক ভাষণে কন্তে বলেন, যারা আত্মত্যাগ করে যাচ্ছেন ইতালির সেসব নাগরিকদের ধন্যবাদ। আমরা নিজেদের মহান জাতি হিসেবে প্রমাণ করছি।
Advertisement
এদিকে, বুধবার প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসকে বৈশ্বিক মহামারি ঘোষণা করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। এমন ঘোষণা আসার পরেই মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইউরোপ থেকে আগত নাগরিকদের ওপর সব ধরনের ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা জারি করেছেন। তবে এই নিষেধাজ্ঞার আওতায় থাকছে না যুক্তরাজ্য।
টিটিএন/এমকেএইচ