দেশজুড়ে

ভালোবেসে ঘর ছেড়ে যৌতুকের বলি কিশোরী হাজেরা

গাজীপুরে যৌতুকের দাবিতে নির্যাতন করে এক প্রসূতি গৃহবধূকে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। বুধবার এ ঘটনায় পুলিশ গৃহবধূর স্বামী ও শ্বশুরকে গ্রেফতার করেছে। গাজীপুর মেট্রাপলিটন পুলিশের (জিএমপির) গাছা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইসমাইল হোসেন এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

Advertisement

নিহত গৃহবধূ হাজেরা (১৭) জামালপুরের ইসলামপুর থানার আগড়াখালী এলাকার আব্দুল হাকিমের মেয়ে। হত্যায় জড়িত থাকার অভিযোগে তার স্বামী মামুন (২৩) ও শ্বশুর রমজান আলীকে (৫০) গ্রেফতার করা হয়েছে।

নিহতের স্বজনরা জানান, গাজীপুরে পোশাক কারখানায় চাকরি সূত্রে হাজেরার সঙ্গে ময়মনসিংহের ফুলবাড়ীয়া থানার এনায়েতপুরের রমজান আলীর ছেলে মামুনের (২৩) পরিচয় হয়। এরপর তাদের মাঝে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। প্রায় দেড় বছর আগে তারা পালিয়ে বিয়ে করেন। এরপর থেকে গাজীপুর মহানগরের কুনিয়া পাছর এলাকায় ভাড়া থাকতেন তারা।

কিন্তু বিয়ের পর থেকে যৌতুকের দাবিতে পরিবারের লোকজনসহ মামুন স্ত্রীর ওপর নানাভাবে নির্যাতন করে আসছিলেন। যৌতুক না দেয়ায় হাজেরাকে বাবার বাড়ি যেতে দিতেন না মামুন। এর মাঝে হাজেরা অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ে। অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় মারধর ছাড়াও হাজেরাকে হত্যা ও গর্ভের সন্তান নষ্ট করার জন্য নানা ধরনের ওষুধ খাওয়ানো হতো। এতে রক্তশূন্যতাসহ নানা সমস্যা দেখা দেয় হাজেরার। নির্যাতনের একপর্যায়ে গত ১০-১১ দিন আগে হাজেরা নির্ধারিত সময়ের আগেই একটি মেয়ে সন্তান জন্ম দেয়। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে মামুন তাকে মারধর করেন। নির্যাতনে হাজেরা অসুস্থ হয়ে মঙ্গলবার রাতে মারা যান। খবর পেয়ে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়।

Advertisement

ওসি ইসমাইল হোসেন জানান, বুধবার এ ব্যাপারে নিহতের বাবা বাদী হয়ে যৌতুকের দাবিতে নির্যাতনের পর হত্যার অভিযোগে থানায় মামলা করেছেন। তবে এ ঘটনায় তদন্ত চলছে। পুলিশ ঘটনার সঙ্গে জড়িত চিকিৎসকসহ অন্যদের গ্রেফতারের চেষ্টা চালাচ্ছে।

এফএ/এমকেএইচ