আন্তর্জাতিক

সাদা রঙের বিরল প্রজাতির এই জিরাফটি পৃথিবীতে এখন একা

সাদা রঙের এই বিরল প্রজাতির জিরাফ কয়েকদিন আগেও সংখ্যায় তিনটি ছিল। এদের মধ্যে দুটিকে শিকারিরা মেরে ফেলেছে। মা জিরাফ ও তার শাবককে কেনিয়ার পূর্বাঞ্চলীয় শহর গারিসায় মৃত অবস্থায় পাওয়া গেছে।

Advertisement

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম ডেইলি মেইল এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, বিরল প্রজাতির এই সাদা জিরাফ শুধু কেনিয়াতেই আছে। এতদিন তারা সংখ্যায় তিনটি ছিল। শিকারিরা তার সঙ্গীকে আর বাচ্চাকে মেরে ফেলায় এখন পৃথিবীতে একা পুরুষ জিরাফটি।

বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ নিয়ে কাজ করা কেনিয়ার ইশাকবিনি হিরোলা কমিউনিটি কনজারভেন্সি নামের একটি সংগঠন বৃহস্পতিবার জানায়, সশস্ত্র শিকারিদের হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছে সাদা প্রজাতির দুটি জিরাফ। জিরাফ দুটির কঙ্কাল পড়ে থাকতে দেখা গেছে।

এ ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করে সংগঠনটির ম্যানেজার মোহাম্মদ আহমেদনূর বলেছেন, ইজারা (গারিসার একটি অঞ্চল) ও সমগ্র কেনিয়াবাসীর জন্য এটা একটি দুঃখজনক ঘটনা। আমরাই একমাত্র জাতি যারা বিরল প্রজাতির এই জিরাফের দেখভালের দায়িত্বে রয়েছি।

Advertisement

তিনি বলেন, বিরল ও একক প্রজাতির এই জিরাফের হত্যাকাণ্ড প্রজাতিকে টিকিয়ে রাখার চেষ্টার পদক্ষেপের ক্ষেত্রে একটি মারাত্মক আঘাত। একই সঙ্গে, এটি কেনিয়ার প্রত্যন্ত অঞ্চলের পর্যটন ও গবেষণা শিল্পের জন্য চরম আঘাত।

বিশেষজ্ঞদের মতে, মানুষের যেমন শ্বেত রোগের কারণে শরীরের রঙ সাদা হয়ে যায়, এই জিরাফের গায়ের রঙ কিন্তু সেভাবে সাদা হয়নি।

লিউসিজম প্রক্রিয়ায় এই সাদা রঙ পেয়েছে বিরল প্রজাতির এই জিরাফ। লিউসিজম প্রক্রিয়ার কাজ হলো টিস্যুর অভ্যন্তরে উজ্জ্বল রঙ তৈরি করা, যেমন-সাদা, ফ্যাকাশে ইত্যাদি।

বিরল প্রজাতির দুটি জিরাফকে হারিয়ে শোকে বিহ্বল হিরোলা কমিউনিটি কনজারভেন্সির কর্মীরা। কারণ তারাই দেখভাল করছিলেন জিরাফ তিনটিকে। তারা বলেন, ‘তারা খুবই শান্ত প্রকৃতির ছিল এবং খুব কাছাকাছি গেলেও বিরক্ত হতো না। আমাদের কয়েক গজের মধ্যেই পায়চারী করতে মা জিরাফ আর এ সময় ঝোপঝাড়ে লুকিয়ে পড়ত জিরাফ শাবক।’

Advertisement

এর আগে ২০১৬ সালে তানজানিয়ার একটি জাতীয় পার্কে সাদা রংয়ের জিরাফের দেখা পাওয়া যায় বলে কথিত রয়েছে। তবে ওই প্রাণীটির ভাগ্যে কী ঘটেছে, সে বিষয়ে কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।

দ্য জিরাফ কনজারভেশন ফাউন্ডেশনের তথ্যমতে, ১৯৮০ সালের পর থেকে আফ্রিকায় জিরাফের সংখ্যা ৩০ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে এবং কিছু কিছু অঞ্চলে ৯৫ শতাংশ কমে গেছে।

এসআর/জেআইএম