দেশে বিভিন্ন পেশার মানুষের মধ্যে স্বর্ণকারদের অকাল মৃত্যুর হার বেশি। তাদের গড় আয়ু মাত্র ৫৯ বছর। ৫৫ শতাংশ ক্ষেত্রে মৃত্যুর প্রধান কারণ কার্ডিওভাস্কুলার রোগ, যার মধ্যে ইস্কেমিক হার্ট ডিজিজ ও স্ট্রোক অন্তর্ভুক্ত।
Advertisement
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) পাবলিক হেলথ অ্যান্ড ইনফরমেটিকস বিভাগ পরিচালিত এক গবেষণা প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।
ঢাকার মোহাম্মদপুর, হাজারীবাগ, লালবাগ ও তাঁতীবাজার, মানিকগঞ্জের শিবালয় উপজেলা ও টাঙ্গাইলের নাগরপুর উপজেলার স্বর্ণকারদের নিয়ে এ গবেষণা করা হয়।
গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়, মৃত স্বর্ণকারদের রোগের ইতিহাস ঘেটে দেখা গেছে, তাদের ৫৫ শতাংশ কার্ডিওভাস্কুলার রোগে ভুগছিলেন এবং ২০ শতাংশ আক্রান্ত ছিলেন ক্যান্সারে। অসংক্রাক রোগ বিবেচনায় নিলে দেখা যায় যে, মৃতদের ৬৫ শতাংশ উচ্চ রক্তচাপ, ৫০ শতাংশ ডায়াবেটিস, ৩৫ শতাংশ হৃদরোগ এবং ২০ শতাংশ কিডনি রোগে আক্রান্ত ছিলেন। ৭৫ শতাংশ স্বর্ণকারই দুই বা ততোধিক অসংক্রামক রোগে ভুগছিলেন।
Advertisement
স্বর্ণকারদের জীবনধারণের অভ্যাস তাদের মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে কিছুটা ধারণা দেয়। মৃত স্বর্ণকারদের ৭০ শতাংশ নিয়মিত ধূমপান ও ২০ শতাংশ ধোঁয়াহীন তামাকজাতীয় দ্রব্য সেবন করতেন। তাদের ৫০ শতাংশের নিয়মিত মদ্যপানের অভ্যাস ছিল।
বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব অর্থায়নে পরিচালিত গবেষণার ফলাফল মঙ্গলবার (১০ মার্চ) সকালে বিএসএমএমইউয়ের শহীদ ডা. মিল্টন হলে বাংলাদেশে স্বর্ণকারদের মৃত্যুর কারণ নিয়ে ‘কজ অব ডেথ ইন গোল্ডস্মিথ ওয়ার্কারস অব বাংলাদেশ : ফ্রম ভার্বাল অটপসি’ আয়োজিত কর্মশালায় প্রকাশ করা হয়।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. কনক কান্তি বড়ুয়া। বিশেষ অতিথি ছিলেন উপ-উপাচার্য (গবেষণা ও উন্নয়ন) অধ্যাপক ডা. মো. শহীদুল্লাহ সিকদার, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ আতিকুর রহমান, আইসিডিডিআরবি’র ইমেরিটাস সাইনটিস্ট ডা. মো. ইউনুস। সভাপতিত্ব করেন ও স্বাগত বক্তব্য দেন পাবলিক হেলথ অ্যান্ড ইনফরমেটিকস বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক সৈয়দ শরীফুল ইসলাম।
ভারবাল অটোপসি পদ্ধতিতে করা গবেষণার ফলাফল উপস্থাপন করেন এ গবেষণার প্রধান গবেষক পাবলিক হেলথ অ্যান্ড ইনফরমেটিকস বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. মো. খালেকুজ্জামান। বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন ও অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন ইন্টারনাল মেডিসিন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ও এই গবেষণার সহযোগী প্রধান গবেষক ডা. মোহাম্মদ তানভীর ইসলাম।
Advertisement
কর্মশালায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ডা. সৈয়দ মোজাফফর আহমেদ, সরকারি-বেসরকারি সংস্থার পেশাগত স্বাস্থ্যবিষয়ক গবেষণার সঙ্গে জড়িত প্রতিনিধি, স্বাস্থ্য গবেষক, স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপক, নীতিনির্ধারকরা অংশ নেন।
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, বাংলাদেশে আনুমানিক তিন লাখ মানুষ স্বর্ণকার পেশায় নিয়োজিত। ভিন্ন ধরনের পেশাগত ঝুঁকির কারণে তাদের মৃত্যুর কারণ জানা জরুরি।
এমইউ/জেডএ/জেআইএম