তার নাম অজিত কেপি। পরনে সাদা-মাটা পোশাক। মুখে হালকা দাড়ি। শহরের রাস্তায় তাকে অটো চালাতে দেখা যায়। অথচ তিনি পিএইচডি ডিগ্রি নিয়ে ভারতের ত্রিসুরের একটি সরকারি কলেজের অতিথি প্রভাষক হয়েছেন। তাহলে আবার অটো চালান কেন? এমন প্রশ্ন অনেকের মনেই। তার উত্তরও দিয়েছেন তিনি।
Advertisement
অজিত বলেন, ‘পড়াশোনা করেই যে বড় মানুষ হওয়া যায়, এমনটা নয়। তাই পুঁথিগত শিক্ষার বাইরে থেকেও বড় মনের পরিচয় দেওয়া যায়। শিক্ষার ঝুলিতে ডিগ্রি থাকলেও যে কেউ অটো চালাতে পারেন। এটা আসলে দোষের কিছু নয়। বয়স্কদের চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে পৌঁছে দেই। এতে মানসিক তৃপ্তি পাই।’
সামনে থেকে দেখলে হয়তো কেউ বিশ্বাস করবেন না যে, তিনি পিএইচডি ডিগ্রি লাভ করেছেন। ভারতের কেরালা রাজ্যের থুনচাত এজুথাচান ইউনিভার্সিটি মালায়লাম থেকে এ ডিগ্রি পেয়েছেন তিনি। এখন তিনি একটি সরকারি কলেজের অতিথি প্রভাষক।
গল্পটি আসলে একদিনের নয়। তিনি স্কুল থেকে দশম শ্রেণি পাস করে ড্রাইভিং লাইসেন্সের জন্য আবেদন করেন। এরপর কলেজে ভর্তি হয়ে তৃতীয় বর্ষ থেকেই অটো চালানো শুরু করেন। এভাবেই টাকা উপার্জন করতেন। মূলত সমাজের প্রতি দায়বদ্ধতা থেকে এমন জীবিকা বেছে নিয়েছিলেন অজিত।
Advertisement
গতবছর জুলাই মাসে ‘পপুলার কালচার অ্যান্ড থিয়েটার সংস’ বিষয়ে পিএইচডি করেন তিনি। পিএইচডি করার পর চাকরিও পেয়ে যান। বর্তমানে তিনি অতিথি প্রভাষক লেকচারার। তবে অটো চালানো বন্ধ করেননি তিনি। এক সময়ে পরিবারকে টাকা দিতে মাছও বিক্রি করতেন তিনি।
এখনো চাকরির পাশাপাশি সপ্তাহ শেষে অটো চালান অজিত। ছাত্রদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘প্রত্যেকেরই পরাজয়ের জন্য তৈরি থাকা উচিত। তবেই জীবনে সফল হওয়া সম্ভব। আমি চারবারের চেষ্টায় নেট ক্লিয়ার করেছি। দশম শ্রেণির পরীক্ষায় পাস করেছি দ্বিতীয়বারের চেষ্টায়। ব্যর্থতাই আমাদের লড়াই করার শক্তি জোগায়।’
অজিত বলেন, ‘এবার পাবলিক সার্ভিস পরীক্ষার জন্য নিজেকে তৈরি করছি। তবে ছেলেবেলার স্বপ্ন অটো চালানো ছাড়ব না। বহু মানুষকে আমি হাসপাতালে পৌঁছে দিয়েছি। তাদের সঙ্গে কথা বলে অনেক কিছু জেনেছি। যা আমাকে একজন ভালো মানুষ হতে সাহায্য করেছে।’
এসইউ/এমএস
Advertisement