ধর্ম

করোনা প্রতিরোধে ওমরার নিষেধাজ্ঞাকে শরিয়তসম্মত বললেন শায়খ সুদাইসি

করোনাভাইরাস আতঙ্কে কাঁপছে পুরো বিশ্ব। ইতিমধ্যে ১০৩টি দেশ ও অঞ্চলের প্রায় ১ লাখ ৬ হাজার ১৯৫ জন এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে। সৌদি সরকার করোনাভাইরাস প্রতিরোধে পবিত্র নগরী মক্কায় ওমরা এবং মদিনা জিয়ারতে নিষেধাজ্ঞা জারি করাকে শরিয়তসম্মত বলেছেন মক্কা-মদিনার প্রধান ইমাম শায়খ আব্দুর রহমান আস সুদাইসি।

Advertisement

তিনি বলেন, সংক্রমণজণিত যে কোনো মহামারি বা রোগ-ব্যধি ছড়িয়ে পড়লে তা থেকে দেশের মানুষকে নিরাপত্তা দেয়া সরকারের প্রথম কাজ। সম্প্রতি করোনায় আক্রান্ত ১০৩টি দেশ। এ ইস্যুতে সৌদি সরকার যে পদক্ষেপ নিয়েছে তা ইসলামি শরিয়তের আইনের সীমানা ও ইসলামি নীতিমালার পরিপন্থী নয়।

সৌদি গণমাধ্যম আল আরাবিয়া সূত্রে জানা যায়, শুক্রবার কাবা শরিফের জুমআর খোতবায় খতিব শায়খ আব্দুল্লাহ আল-জুহানি ও মসজিদে নববির জুমআর খোতবায় খতিব শায়খ সালেহ আল বাদিরও প্রধান ইমামের এ মতকে সমর্থন করে জুমআর বয়ানে এর যৌক্তিকতা ও গুরুত্ব তুলে ধরেন।

শায়খ আব্দুল্লাহ আল-জুহানি কাবা শরিফে জুমআর খোতবায় বলেন, ‘পবিত্র দুই মসজিদে খাদেম বাদশাহ সালমান বিন আব্দুল আজিজ ও ক্রাউন প্রিন্স মুহাম্মাদ বিন সালমান করোনাভাইরাস প্রতিরোধে ওমরাহ পালনের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করতে সৌদি প্রশাসনকে যে নির্দেশনা দিয়েছেন তা শরিয়তের প্রয়োজনীয়তার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ।

Advertisement

করোনা ভাইরাসের মতো মারাত্মক মহামারিতে সতর্কতা অবলম্বনের জন্য মসজিদে হারাম এবং মসজিদে নববিতে ইশার নামাজের ১ ঘণ্টা পর বন্ধ করে দিয়ে ফজরের ১ ঘণ্টা আগে খুলে দেয়া হয়। সতর্কতামূলক এ সিদ্ধান্তকে ইতিবাচক মনে করেন দুই পবিত্র মসজিদের প্রধান ইমাম শায়খ সুদাইসি।

তিনি বলেন, ‘সংক্রামণ জনিত যে কোনো ভাইরাস ও রোগ-ব্যাধির প্রভাব থেকে মসজিদুল হারাম ও মসজিদে নববির পরিবেশকে সুরক্ষা দেয়া আমাদের নৈতিক দায়িত্ব। এ দায়িত্ববোধ থেকেই সৌদি সরকার এ সিদ্ধান্ত নিয়েয়েছে।’

এ দিকে ২ মার্চ থেকে কাবা শরিফের মূল মাতআফেও (তাওয়াফ করার চত্ত্বর) তাওয়াফ বন্ধ ছিল। মসজিদে হারামের দ্বিতীয় ও তৃতীয় তালার উপর দিয়ে কাবা শরিফের তাওয়াফ অব্যাহত ছিল।

শায়খ সুদাইসি জানান, ‘ বাদশাহ সালমান বিন আব্দুল আজিজ শুধু তাওয়াফ করার জন্য কাবা শরিফের মূল মাতআফ খুলে দেয়ার নির্দেশনা দিয়েছেন।’

Advertisement

বাদশাহ সালমানের নির্দেশের পর থেকে শনিবার (৭ মার্চ) ফজর থেকে কাবা শরিফের মূল চত্ত্বরে তাওয়াফ শুরু করেছেন।

তবে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত ওমরাহ বন্ধ থাকবে বলেও জানা গেছে। পবিত্র এ দুই মসজিদকে করোনাভাইরাসমুক্ত রাখতে সবাইকে সর্বোচ্চ সতর্ক থাকার আহ্বান জানানো হয়েছে।

উল্লেখ্য, করোনা ভাইরাসের প্রভাব থেকে দুই পবিত্র মসজিদকে মুক্ত রাখতে ওমরাহ পালন ও জিয়ারতের ওপর সাময়িক নিষেধাজ্ঞার পাশাপাশি অনির্দিষ্টকালের জন্য উভয় মসজিদে ইতেকাফ, বিছানাপত্র বিছানো ও খাবার-দাবার আনা-নেয়া নিষিদ্ধ করা হয়েছে। জমজম পানির কুলারগুলোও বন্ধ রাখা হয়েছে।

এমএমএস/পিআর