কুমিল্লার দেবিদ্বার পৌরসভার কার্যক্রম শুরুর প্রায় ১৩ বছরেও নির্বাচন হয়নি। উচ্চ আদালতে মামলা থাকায় দীর্ঘ বছর ধরে ঝুলে আছে এ পৌরসভার নির্বাচন। ফলে জনপ্রতিনিধির বদলে প্রশাসকই হচ্ছেন এ পৌরবাসীর সেবা লাভের একমাত্র ভরসা। এদিকে সরকারের কোটি টাকায় নির্মিত পৌরসভার দ্বিতল ভবন পড়ে আছে অবহেলায়। ভবনটির ক্যাম্পাস এখন গরু-ছাগলের বিচরণ ক্ষেত্রসহ বখাটেদের আড্ডাস্থলে পরিণত হয়েছে। ওই ভবনের পরিবর্তে প্রশাসনিক কার্যক্রম চালানো হচ্ছে পৌর গণপাঠাগারে। এতে একদিকে যেমন পৌরভবন শহরবাসীর সেবায় কোনো কাজে আসছে না তেমনি পৌরসভার গণপাঠাগারটির কার্যক্রমও মুখ থুবড়ে পড়ে আছে। জানা যায়, ১ কোটি ৫ লাখ টাকা ব্যয়ে দেবিদ্বার পৌরসভার গুনাইঘর এলাকায় দৃষ্টিনন্দন করে ‘দেবিদ্বার পৌর ভবন’ নির্মাণ করে ২০০২ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর থেকে পৌরসভার কার্যক্রম শুরু করা হয়। পরবর্তীতে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে যাতায়াত সমস্যা ও নাগরিক সেবার সুবিধার অজুহাতে ওই পৌর ভবন তালাবদ্ধ রেখে পৌরসভার কার্যক্রম চালানো হচ্ছে অস্থায়ী কার্যালয় হিসেবে দেবিদ্বার মাজেদা আহসান মুন্সী পৌর গণপাঠাগারে। এতে সরকারি অর্থে নির্মিত পৌর ভবনটি গত প্রায় ৭ বছর ধরে অকার্যকর হয়ে পড়ে আছে এবং এর ক্যাম্পাস এখন গরু-ছাগলের বিচরণ ও বখাটেদের আড্ডাস্থলে পরিণত হওয়াসহ নষ্ট হচ্ছে দরজা-জানালা ও মূল্যবান আসবাবপত্র। অপরদিকে পৌর গণপাঠাগারে পৌরসভার কার্যক্রম পরিচালনার কারণে পাঠাগারের কার্যক্রম কাগজে-কলমে চালু থাকলেও বাস্তবে তা বন্ধ রয়েছে। তাছাড়া পৌরসভা প্রতিষ্ঠার পর থেকেই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা প্রশাসক হিসেবে এ পৌরসভার দায়িত্ব পালন করছেন। স্থানীয় দুই ব্যক্তি পৌরসভার সীমানা সংক্রান্ত এবং পৌরসভা বাতিলের দাবিতে হাইকোর্টে পৃথক ২টি মামলা দায়ের করেন। এসব মামলার নিষ্পত্তি না হওয়ায় পৌরসভা প্রতিষ্ঠার ১৩ বছরেও পৌর নির্বাচন আলোর মুখ দেখছে না। একাধিক সূত্র জানায়, স্থানীয় ক্ষমতাসীন দলে ত্রিমুখী গ্রুপিং ছাড়াও কমপক্ষে ৫/৬ জন সম্ভাব্য মেয়র প্রার্থী আছেন। এতে এ পৌরসভার প্রথম মেয়র কে হবেন এ নিয়ে দলে চলছে টানাপোড়েন। তাই দলীয় কোন্দল নিরসন না করে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলে গত উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের মতো বিএনপি দলীয় প্রার্থীর কাছে দলের প্রার্থীর চরম ভরাডুবির আশঙ্কায় কৌশলে নির্বাচনে আগ্রহী হচ্ছে না ক্ষমতাসীন দলের স্থানীয় নেতারা। ফলে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি না থাকায় এ পৌরসভার কাঙ্খিত উন্নয়ন হচ্ছে না। পৌর প্রশাসক ও দেবিদ্বার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সাইফুল ইসলাম জাগো নিউজকে বলেন, পৌরভবনটি উপজেলা সদর থেকে দূরবর্তী স্থানে হওয়ায় স্থানীয়দের যাতায়াতের সমস্যাসহ নানাবিধ কারণে অস্থায়ীভাবে গণপাঠাগার ভবনে পৌরসভার কাজ-কর্ম চালানো হচ্ছে। উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে সহসা পৌরসভার স্থায়ী ভবনে প্রশাসনিক কার্যক্রম চালানোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এছাড়া চলমান মামলা নিষ্পত্তি হলে পৌরসভার নির্বাচন হতে আর কোন বাধা থাকবে না। কামাল উদ্দিন/এসএস/এমএস
Advertisement