সিঙ্গাপুরফেরত একটি পরিবারের তিন সদস্যের স্বাস্থ্য সম্পর্কে জানতে চেয়ে চিঠি দিয়েছে সে দেশের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। সম্প্রতি তারা সিঙ্গাপুর থেকে বাংলাদেশে ফিরে আসেন। হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ওই তিন যাত্রীর হেলথ স্ক্রিনিং ও ডিক্লারেশন ফরম সংগ্রহ করা হলেও তাদের কোয়ারেন্টাইন করা হয়নি।
Advertisement
নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্বাস্থ্য অধিদফতরের একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা জানান, বিষয়টি পরে সিঙ্গাপুর স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের এক চিঠির মাধ্যমে জেনেছি। বিমাবন্দরে ইমিগ্রেশন থেকে তাদের বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহ করে রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানকে (আইইডিসিআর) জানানো হয়েছে। তারা সরেজমিন ওই পরিবারটির সঙ্গে দেখা করে তথ্য সংগ্রহ করবেন।
সিঙ্গাপুরফেরত ওই যাত্রীদের শারীরিক অবস্থা এখন কেমন সে সম্পর্কে নিশ্চিতভাবে কোনো তথ্য জানেন না স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা। তাদের ধারণা, এ তিনজন সম্ভবত সিঙ্গাপুরে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত পাঁচ শ্রমিকের কোনো স্বজন হবেন। তাদের কেউ আক্রান্ত কারও মাধ্যমে সংক্রমিত হয়েছেন কি না তা জানতেই সিঙ্গাপুর স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় চিঠি দিয়েছে।
স্বাস্থ্য কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ইন্টারন্যাশনাল হেলথ রেগুলেশনের (আইএইচআর) নিয়মানুসারে সদস্যভুক্ত সকল দেশ করোনাভাইরাসসহ বিভিন্ন সংক্রমিত রোগের ঝুঁকির ব্যাপারে একে অন্যকে সহায়তা করে থাকে। তারই অংশ হিসেবে বাংলাদেশের এই তিন নাগরিক সম্পর্কে জানতে চেয়েছে সিঙ্গাপুর।
Advertisement
গত বছরের ডিসেম্বরে চীনের উহানে করোনাভাইরাস প্রথম শনাক্ত করা হয়। চীন থেকে ছড়ানো এ ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা লাখ ছাড়িয়েছে। এখন পর্যন্ত বিশ্বব্যাপী আক্রান্ত হয়েছে ১ লাখ ১ হাজার ৯১৪ জন। আর প্রাণহানি ঘটেছে তিন হাজার ৪৬৬ জনের।
আক্রান্তদের মধ্যে ৫৬ হাজার ১২৩ জন চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন। এখনো চিকিৎসাধীন আছেন ৪২ হাজার ৩২৫ জন। এর মধ্যে ছয় হাজার ৪০১ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
বিশ্বের ৯৪টি অঞ্চল এবং দেশে ছড়িয়েছে এ ভাইরাস। প্রাণঘাতী এই ভাইরাসে শুধুমাত্র চীনেই আক্রান্তের সংখ্যা ৮০ হাজার ৫৭৬ জন। যার মধ্যে তিন হাজার ৪২ জনের মৃত্যু হয়েছে। চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হয়েছেন ৫৩ হাজার ৯২৯ জন। আর বাকি ২৩ হাজার ৬০৫ জন চিকিৎসাধীন আছেন।
চীনের বাইরে সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হয়েছে দক্ষিণ কোরিয়ায়। দেশটিতে এখন পর্যন্ত ছয় হাজার ৫৯৩ জন আক্রান্ত হয়েছেন। যার মধ্যে ৪৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। ১৩৫ জন সুস্থ হয়েছেন আর বাকি ছয় হাজার ৪১৫ জন চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
Advertisement
ইরানে এখন পর্যন্ত চার হাজার ৭৪৭ জন আক্রান্ত হয়েছে। প্রাণহানি ঘটেছে ১২৪ জনের। তিন হাজার ৭১০ জন চিকিৎসাধীন আছেন। বাকি ৯১৩ জন সুস্থ হয়েছেন।
ইতালিতে আক্রান্তের সংখ্যা চার হাজার ৬৩৬। ১৯৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। তিন হাজার ৯১৬ জন বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন। ৫২৩ জন সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন।
সিঙ্গাপুরে এ পর্যন্ত মোট ১৩০ জন আক্রান্ত হয়েছেন। এর মধ্যে আক্রান্ত পাঁচ বাংলাদেশির মধ্যে তিনজন সুস্থ হয়ে দেশে ফিরেছেন। এখন চিকিৎসাধীন রয়েছেন দুইজন। তাদের অবস্থাও স্থিতিশীল। যেকোনো সময় তারাও হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র পাবেন।
এমইউ/এসআর/এমএস