পাহাড়ে উৎপাদিত টসটসে ও রসালো কমলা এখন বাজারে। তবে এ কমলা এখনো পরিপক্ক হয়নি। ফলে স্বাদে কিছুটা টক এবং রঙেও সবুজ। ইতোমধ্যে পাহাড়ি কমলায় সয়লাব স্থানীয় বাজারগুলো। সাম্প্রতিক মৌসুমে তিন পার্বত্য জেলায় কমলার ফলন যেমন প্রচুর তেমনি কদরও অনেক। আর এখানকার উৎপাদিত কমলা স্থানীয় বাজার ছাড়িয়ে বাজারজাত হচ্ছে ঢাকা, চট্টগ্রামসহ বিভিন্ন জেলায়। জানা গেছে, বর্তমানে রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবান পার্বত্য জেলায় ব্যাপক হারে কমলার চাষাবাদ হচ্ছে। ফলনও হচ্ছে প্রচুর। স্থানীয় বাজার ছাড়িয়ে পাহাড়ের কমলা বাজারজাত হচ্ছে ঢাকা, চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন জেলায়। কয়েক বছর আগেও পার্বত্যাঞ্চলে কমলা আমদানি হতো সিলেটসহ দেশের অন্য অঞ্চল থেকে। এখন পাহাড়ে উৎপাদিত কমলা যাচ্ছে পার্বত্য জেলার বাইরে। উৎপাদন বেশি। ফলে স্থানীয় বাজারে কমলার দাম সহনীয়। এখন প্রতি কমলা বিক্রি হচ্ছে ৫-১০ টাকায়। সংশ্লিষ্টরা জানান, ফলন ভালো দেখে বর্তমানে পার্বত্যাঞ্চলে অনেকে কমলা চাষে ঝুঁকেছেন। কমলার চাষ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে তিন পার্বত্য জেলায়। পাহাড়ে কমলা চাষে সরকারিভাবেও দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে। পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড পার্বত্য তিনটি জেলায় মিশ্র ফসল চাষের মাধ্যমে প্রচুর কমলা চাষে সহায়তা করছে চাষিদের। সবচেয়ে বেশি কমলার চাষ হচ্ছে রাঙামাটি জেলার বাঘাইছড়ি উপজেলার সাজেকে।কৃষি বিভাগ জানিয়েছে, পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড ছাড়াও পার্বত্য তিন জেলাসহ দেশের দশ জেলায় ২০ কোটি টাকা ব্যয়ে একটি কমলা চাষ প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হয়েছে। দেশে কমলা চাষের প্রচুর সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে পাহাড়ি এলাকাবেষ্টিত ওই দশ জেলার চল্লিশ উপজেলায় প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হয়েছে। জিওবি ফান্ডের অর্থায়নে ২০ কোটি টাকা ব্যয়ে সরকারের কৃষি বিভাগ কমলা উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করেছে। ২০০৬-০৭ অর্থবছরে শুরু করা পাঁচ বছর মেয়াদি ওই কমলা চাষ প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হয়েছে ২০১২ সালে। প্রকল্পের মাধ্যমে ওইসব জেলায় কমলা চাষে আশানুরূপ সাফল্য পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছে কৃষি বিভাগ।প্রকল্প সূত্র জানায়, ওই প্রকল্পের আওতায় ৬০ হাজার কমলা চাষিকে প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে। প্রকল্পে পার্বত্যাঞ্চলের খাগড়াছড়ি জেলার মহালছড়ি, মাটিরাঙ্গা, দীঘিনালা ও রামগড়, রাঙামাটি জেলার সদর উপজেলা, বাঘাইছড়ি, বিলাইছড়ি, কাপ্তাই ও নানিয়ারচর এবং বান্দরবান জেলার সদর উপজেলা, রুমা, থানচি, লামা, আলীকদম ও রোয়াংছড়ি উপজেলায় কমলা চাষে স্থানীয় চাষিদের প্রয়োজনীয় সহায়তা দেয়া হয়। কমলার বীজ থেকে চারাগাছ সৃষ্টির জন্য রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবান জেলায় প্যাকিং হাউস এবং নার্সারি উন্নতকরণ প্রক্রিয়া স্থাপন করে চাষিদের কৃষি সহায়তা প্রদান করা হয়েছে।সুশীল প্রসাদ চাকমা/এমজেড/এমএস
Advertisement