বৈষ্ণব বিশ্বাসীদের দোল উৎসব এখন বাঙালি সংস্কৃতির ঐতিহ্যে পরিণত হয়েছে। ভারতের পশ্চিমবঙ্গে শান্তিনিকেতনের পরেই দোল উৎসব বৃহৎ পরিসরে উদযাপিত হয় রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে। এবারও উৎসবমুখর পরিবেশে গত বৃহস্পতিবার (৫ মার্চ) রবীন্দ্রভারতীতে দোল উৎসব উদযাপিত হয়েছে।
Advertisement
তবে উৎসবে বেশ কিছু ছাত্রীর খোলা পিঠে এবং ছাত্রদের খোলা বুকে বিভিন্ন ‘অশ্লীল’ শব্দ দেখা গেছে। সেই অশ্লীলতার ছবি ও ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হওয়ার পর সমালোচনার ঝড় বইছে চারদিকে।
স্থানীয় সংবাদমাধ্যম জানায়, বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘সেদিন দুজনে দুলেছিনু বনে’ গানকে বিকৃত ইউটিউবার রোদ্দুর রায় অনলাইনে ছড়িয়েছিলেন। বিকৃত করা গানে ‘চাঁদ উঠেছিল গগনে’ লাইনের আগে একটি চটুল খিস্তি যোগ করেন রোদ্দুর রায়। সেই খিস্তি লেখা দেখা যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্র-ছাত্রীদের শরীরে।
সংবাদমাধ্যম জানায়, কেবল এঁকেই শেষ করেননি, বিকৃত ওই গানটি গেয়েই ছাত্র-ছাত্রীরা নেচে বেড়িয়েছেন পুরো ক্যাম্পাস। এমনকি যেখানে যেখানে আবীরের রঙ মেখেছেন, সেখানেও তারা দেখিয়েছেন অশ্লীতার চরম পরাকাষ্ঠা। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ সচেতন মহলে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। দাবি উঠেছে জড়িত শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার।
Advertisement
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রী বলেন, ‘বৃহস্পতিবার দুপুরেই ঘটনাটি আমাদের নজরে আসে। তারপরেই আমরা উপাচার্যের কাছে লিখিতভাবে অভিযোগ জানাই। তিনি ব্যবস্থা নেবেন বলে জানিয়েছিলেন।’
আরেক ছাত্র বলেন, ‘কিছু ছাত্র-ছাত্রীর জন্য আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের দুর্নাম হচ্ছে। এদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেয়া দরকার।’
অভিযুক্তদের বাইরের দাবি করে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অন্য এক ছাত্রী বলেন, ‘পাঁচ জনকে চিহ্নিত করা গিয়েছে। এটা বিকৃত মানসিকতার লক্ষণ। ওদের জন্য আমাদের বদনাম হচ্ছে। এরপর থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো উৎসবে বাইরের কাউকে ঢোকার অনুমতি দেয়া হবে না। এখানকার পড়ুয়াদের নিয়েই উৎসব হবে।’
এ বিষয়ে প্রাবন্ধিক-গবেষক নৃসিংহপ্রসাদ ভাদুড়ী বলেন, ‘এটা সাংস্কৃতিক বিকার। এ কোনো সংস্কৃতির অঙ্গই নয়, বরং অপসংস্কৃতি বলাই ভালো।’
Advertisement
এমএফ/এইচএ/জেআইএম