আন্তর্জাতিক

ভারতে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ৪ দিনে পাঁচগুণ

মাত্র চারদিনের ব্যবধানে ভারতে পাঁচগুণ বেড়েছে করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা। গত মঙ্গলবারও দেশটিতে মাত্র ছয়জনের শরীরে নভেল করোনাভাইরাস ছিল। শুক্রবার নাগাদ সেই সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৩০ জনে। হঠাৎ করেই ভাইরাস সংক্রমণ বাড়তে থাকায় ভারতজুড়ে ছড়িয়ে পড়েছে আতঙ্ক। পরিস্থিতি মোকাবিলায় অতিজরুরি না হলে ভারতীয়দের বিদেশ ভ্রমণ না করার পরামর্শ দিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার।

Advertisement

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম জানায়, বৃহস্পতিবার গজিয়াবাদে এক ব্যক্তির শরীরে করোনাভাইরাস ধরা পড়েছে। সম্প্রতি ইরান-ফেরত ওই ব্যক্তির নমুনা পুনের ন্যশনাল ইনস্টিটিউট অব ভাইরোলজিতে পাঠানো হয়েছিল। সেখানে পরীক্ষার ফলাফল ‘পজেটিভ’ এসেছে।

সন্দেহ করা হচ্ছে হায়দ্রাবাদের দুই বাসিন্দাও নভেল করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। ইতোমধ্যেই তাদের নমুনা পরীক্ষার জন্য ল্যাবে পাঠানো হয়েছে। এছাড়া, বেঙ্গালুরুতে রাজীব গান্ধী ইনস্টিটিউট অব চেস্ট ডিজিজে ভর্তি রয়েছেন সন্দেহভাজন আরও পাঁচজন। তাদেরও নমুনা পরীক্ষা করা হচ্ছে।

করোনা সংক্রমণ মোকাবিলায় ভারতীয়দের বিদেশ ভ্রমণে একপ্রকার নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে দেশটির সরকার। বৃহস্পতিবার কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী হর্ষ বর্ধন ভারতীয় সংসদে বলেন, জরুরি কাজ না থাকলে বা খুব প্রয়োজন না থাকলে আপাতত বিদেশে যাবেন না। করোনা পরিস্থিতির ওপর আমরা সবসময় নজর রাখছি

Advertisement

তিনি বলেন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্দেশ অনুসারে ভারতে আগে থেকেই করোনা প্রতিরোধের প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। আগে বিমানবন্দরে ১২টি দেশের যাত্রীদের স্ক্রিনিং করলেও এখন সব দেশের যাত্রীদেরই স্ক্রিনিং করা হচ্ছে

শিশুদের মধ্যে ভাইরাস সংক্রমণ এড়াতে দিল্লির সব প্রাথমিক বিদ্যালয় আগামী ৩১ মার্চ পর্যন্ত বন্ধ ঘোষণা করেছে রাজ্য সরকার। দেশের বাকি স্কুলগুলোতেও শিক্ষার্থীদের ভিড়ে না যাওয়ার পরামর্শ দেয়া হয়েছে। পাশাপাশি, স্কুলের বিভিন্ন জায়গায় সাবান ও হ্যান্ড স্যানিটাইজার রাখার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। কারও শরীরে করোনা আক্রান্ত হওয়ার উপসর্গ দেখা দিলে তাকে হাসপাতালের কোয়ারেন্টাইনে বা বাড়িতে ১৪ দিন নজরদারিতে রাখতে বলা হয়েছে।

এর আগে, বুধবার সংবাদ সম্মেলনে ভারতের স্বাস্থ্যমন্ত্রী জানান, দেশটিতে করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা ছয় থেকে বেড়ে ২৮ জনে দাঁড়িয়েছে। নতুন আক্রান্তদের মধ্যে বেশিরভাগই ইতালীয় নাগরিক, বাকিরা ভারতীয়।

তিনি জানান, গত মাসে ইতালি থেকে একদল পর্যটক ভারত সফরে যান। মঙ্গলবার তাদের মধ্যে একজনের শরীরে করোনাভাইরাস পাওয়া যায়। তার স্ত্রীর রিপোর্টও পজেটিভ এসেছিল। পরে সেগুলো আবার যাচাইয়ের জন্য পুনের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব ভাইরোলজিতে নমুনা পাঠানো হয়। বুধবার নিশ্চিত হয়, তিনিও করোনায় আক্রান্ত।

Advertisement

ভাইরাস সংক্রমণের আশঙ্কায় ইতালির ওই পর্যটক দলের ২১ জনকে দিল্লির চাওলায় ইন্দো-তিব্বতিয়ান বর্ডার পুলিশের কোয়ারেন্টাইন ক্যাম্পে রাখা হয়। তাদের মধ্যে ১৪ জনের নমুনার রিপোর্টে করোনাভাইরাসের উপস্থিতি নিশ্চিত হয়েছে। পাশাপাশি, তাদের সঙ্গ দেয়া ভারতীয় বাসচালকেরও শরীরেও করোনা ধরা পড়েছে। আরও দুই ভারতীয় (বাসের হেল্পার ও গাইড) কোয়ারেন্টাইনে রয়েছেন।

এর আগে দিল্লির যে ব্যক্তি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছিলেন, আগ্রায় তার ছয় আত্মীয়ের রিপোর্টও পজেটিভ এসেছে। বুধবারই গুরুগাঁওয়ে পেটিএম-এর এক কর্মী করোনা আক্রান্ত বলে নিশ্চিত হয়।

সূত্র: ইন্ডিয়া টাইমস, সংবাদ প্রতিদিন

কেএএ/এমএস