খেলাধুলা

করোনায় লন্ডভন্ড বিশ্ব ক্রীড়াঙ্গন

করোনাভাইরাস পুরো বিশ্বকে ফেলে দিয়েছে বেকায়দায়। বাইরে নয় ক্রীড়াঙ্গনও। করোনার প্রভাবে ইতোমধ্যে ডজন খানেক আন্তর্জাতিক স্পোর্টিং ইভেন্ট বাতিল কিংবা স্থগিত হয়েছে। অ্যাথলেটিকস, রাগবি, গলফ থেকে ফুটবল, টেনিস, মোটরস্পোর্টস, ক্রিকেট- কোনো খেলাই এখন আর করোনা শঙ্কার বাইরে নেই।

Advertisement

চীন থেকে শুরু হয়ে করোনাভাইরাস দিনকে দিন ছড়িয়ে পড়ছে সারা বিশ্বে। ফলে স্পোর্টিং ক্যালেন্ডারেও বড় ধরনের উলটপালট হয়ে গেছে। ২০২০ সালের টোকিও অলিম্পিক গেমসকে ঘিরে দেখা দিয়েছে শঙ্কা। আন্তর্জাতিক অলিম্পিক কমিটির সিনিয়র সদস্য ডিক পাউন্ড বলেন, ভাইরাসটি নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব না হলে বাতিল করা হতে পারে বিশ্বের সবচেয়ে বড় ক্রীড়া আসরটি।

সবচেয়ে বেশি বিপদে পড়েছেন চীনের অ্যাথলেটরা। তারা দেশে হুমকিতে আছেন, বাইরে কোথাও খেলতে যেতেও পারছেন না। গত মাসে মেলবোর্নে বিশ্বকাপ থেকে সরে যেতে হয়েছে চীনা জিমন্যাস্টিক দলকে। কেননা অস্ট্রেলিয়া জানিয়ে দিয়েছে, চীনের কোনো নাগরিক তাদের দেশে ঢুকতে পারবেন না।

রোমানিয়ান সিটিতে ডেভিস কাপেও একই কারণে অংশ নিতে পারছেন না চীনের পুরুষ টেনিস দল। করোনা মহামারী চীনেও খেলাধুলা বলতে গেলে বন্ধ করে দিয়েছে।

Advertisement

১৩ থেকে ১৫ মার্চ নানজিংয়ে হওয়ার কথা ছিল বিশ্ব অ্যাথলেটিকস ইনডোর চ্যাম্পিয়নশিপ, সেটি আগামী বছর পর্যন্ত স্থগিত করা হয়েছে। ১৯ এপ্রিল থেকে সাংহাইয়ে এফ ওয়ান চাইনিজ গ্রাঁ প্রি’ও বাতিল হয়েছে। শুধু অ্যাথলেট আর আয়োজকরা নয়, ক্রীড়া বাণিজ্যও শক্তভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে চীনে।

চীনের বাইরে দক্ষিণ কোরিয়ায় সবচেয়ে বেশি মানুষ করোনা আক্রান্ত। এখন পর্যন্ত সাড়ে পাঁচ হাজারের ওপর রোগী পাওয়া গেছে, মারা গেছেন কমপক্ষে ২৮ জন। এমতাবস্থায় ঝুঁকি এড়াতে একা একা অনুশীলন করছেন দক্ষিণ কোরিয়ার কয়েকজন খেলোয়াড়। জিনচনে জাতীয় ট্রেনিং সেন্টার বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।

ভাইরাস ঘিরে ধরেছে ইউরোপিয়ান ফুটবলকেও। ইতালির সিরিআ’তে বেশ কয়েকটি ম্যাচ পরিত্যক্ত হয়েছে। ইংলিশ কয়েকটি ক্লাবে খেলোয়াড়দের করমর্দন নিষিদ্ধ করা হয়েছে। সুইজারল্যান্ডের টপ লিগও ২৩ মার্চ পর্যন্ত স্থগিত রাখা হয়েছে। ফিফার প্রেসিডেন্ট জিয়ান্নি ইনফান্তিনো আশঙ্কা করছেন, এই মাসে আন্তর্জাতিক ম্যাচগুলোও বাতিল হতে পারে।

জাপানে এখন পর্যন্ত কমপক্ষে ২৯৩ জন আক্রান্ত হয়েছেন, মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে ১২ জনের। এমতাবস্থায় দেশটির প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে ভাইরাসের বিস্তার প্রতিরোধে বড় স্পোর্টিং ইভেন্টগুলো বাতিল বা স্থগিত করার নির্দেশ দিয়েছেন। টোকিও অলিম্পিকও তাই বড় ঝুঁকিতে।

Advertisement

ব্যাডমিন্টন খেলায়ও পড়েছে করোনার প্রভাব। জার্মানিতে অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ২০২০ সালের জার্মান ওপেন এবং অলিম্পিক কোয়ালিফায়ার। কিন্তু করোনা আতঙ্কে তা আর হচ্ছে না। ব্যাডমিন্টন ওয়ার্ল্ড ফেডারেশন জানিয়েছে, এই দু’টি খেলার ইভেন্ট বাতিল করা হয়েছে। এছাড়াও ২০২০ সালের পোলিশ ওপেনও স্থগিত করা হয়েছে।

এর বাইরে অনেক দেশেই টুকটাক স্পোর্টিং ইভেন্ট বন্ধ রাখা হয়েছে। বাংলাদেশে এখনও করোনা আক্রান্ত রোগী পাওয়া যায়নি। তারপরও আইএসএসএফ ইন্টারন্যাশনাল সলিডারিটি চ্যাম্পিয়নশিপ স্থগিত করা হয়েছে। আগামী ২২-২৮ ফেব্রুয়ারি ঢাকায় হওয়ার কথা ছিল এই আসর।

এছাড়া হংকং ম্যারাথন, প্যারিস হাফ ম্যারাথন, জার্মান ওপেন, পর্তুগিজ ইন্টারন্যাশনাল চ্যাম্পিয়নশিপ, পোলিশ ওপেন, ভিয়েতনাম ইন্টারন্যাশনাল চ্যালেঞ্জ, সাইক্লিং ইউএই ট্যুর, মেলবোর্ন আরটিসটিক ওয়ার্ল্ড কাপ, সুইজারল্যান্ড ন্যাশনাল লিগ জুডোসহ বিশ্বজুড়ে বাতিল বা স্থগিত হওয়া স্পোর্টস ইভেন্ট খুঁজলে তালিকাটা বেশ বড়ই হবে।

এমএমআর/এমকেএইচ