২০০৯ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি পিলখানায় কোনো বিডিআর হত্যাকাণ্ড হয়নি। ওইদিন পরিকল্পনা অনুযায়ী ৫৭ জন সেনা কর্মকর্তাকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছিল। তাই এ দিনটিকে বিডিআর হত্যাকাণ্ড না বলে ‘সেনা হত্যা দিবস’ সহ জাতীয় শোক দিবস পালনের আহ্বান জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্র জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি (জাগপা)।
Advertisement
রোববার সন্ধ্যায় নিউইয়র্কের ব্রুকলিনে নোয়াখালী সোসাইটি ভবনে অনুষ্ঠিত এক আলোচনা সভায় জাগপার নেতারা বলেন, সেনা কর্মকর্তাদের হত্যায় এখন বিচারের নামে প্রহসন চলছে। প্রকৃত খুনিদের মুখোশ উন্মোচনসহ এ হত্যাকাণ্ডের বিচার একদিন হবে।
যুক্তরাষ্ট্র জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টির (জাগপা) সভাপতি এএসএম রহমত উল্যাহ ভূঁইয়ার সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক নোমান সিদ্দিকীর প্রাণবন্ত সঞ্চালনায় শহীদ সামরিক কর্মকর্তাদের স্মরণে আলোচনা সভায় বক্তব্য দেন অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ও বিএনপি নেতা অধ্যাপক ড. শওকত আলী, প্রগ্রেসিভ ফোরামের সভাপতি ও প্রধান বক্তা অধ্যাপক নুরুল ইসলাম, যুক্তরাষ্ট্র জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি (জাগপা) সভাপতি এএসএম রহমত উল্যাহ ভূঁইয়া, সাধারণ সম্পাদক নোমান সিদ্দিকী, ব্রুকলিন বিএনপির সিনিয়র সহ সভাপতি হুমায়ুন কবির, সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর শহীদ সরওয়ার্দি, আহসান উল্লাহ বাচ্ছু, নাসির উদ্দিন, ছাত্রনেতা নুর আলম ও আশরাফুল হাসান প্রমুখ।
প্রধান অতিথি অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ড. শওকত আলী বলেন, ঢাকার তৎকালীন বিডিআর সদরদপ্তরে ২০০৯ সালের ২৫ এবং ২৬ ফেব্রুয়ারিতে ওই বিদ্রোহের ঘটনায় ৫৭ জন সেনা কর্মকর্তাসহ ৭৪ জন নিহত হন। বিডিআর জোয়ানরা পুর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী ৫৭ জন সেনা কর্মকর্তাকে নির্মমভাবে হত্যা করেন। দেশী-বিদেশী চক্রান্তে পরিকল্পিতভাবে এ হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয়েছে।
Advertisement
সামরিক বাহিনীর মনোবল ভেঙে দেয়ার জন্যই ওই হত্যকাণ্ড। এটি দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্র। এ ঘটনায় এখন বিচারের নামে প্রহসন হচ্ছে। যেজন্য প্রকৃত অপরাধীরা ধরাছোঁয়ার বাইরে রয়ে গেছে। যারা ষড়যন্ত্র করেছে, তারা জানে এ ধরনের হত্যাকাণ্ডের ফলে সেনাবাহিনী থেকে অনেক দুর্বল চিত্তের মানুষ বের হয়ে যাবে।
তৎকালীন বিডিআর বিদ্রোহের ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত হচ্ছে না দাবি করে তিনি আরও বলেন, সাবেক সেনা কর্মকর্তা লে. জে. (অব.) জাহাঙ্গীরের নেতৃত্বে একটি তদন্ত কমিটি করা হয়েছে। তা আজও প্রকাশ করা যায়নি। সেই তদন্ত রিপোর্টটি প্রকাশের দাবি জানান তিনি।
যুক্তরাষ্ট্র জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টির (জাগপা) সভাপতি এএসএম রহমত উল্যাহ ভূঁইয়া বলেন, ২৫ ও ২৬ ফেব্রুয়ারির কালো দিনে ওই দুর্বৃত্তদের বর্বরতা ও নিষ্ঠুরতা এসব বীর শহীদের, আত্মমর্যাদা ও দেশপ্রেমকে বিন্দুমাত্র ক্ষুণ্ন করতে পারেনি। সেদিন পুরো জাতি এই বীরদের হারানোর শোকে কান্নায় ভেঙে পড়েছিল।
এই নিষ্ঠুর মৃত্যুর মধ্যে দিয়ে যে গভীর বেদনা ও অন্তর্জ্বালা সৃষ্টি হয়েছে তা উপশমের জন্য আমাদের পথ খুঁজতে হবে। এইসব বীর শহীদের প্রতি যথাযথ শ্রদ্ধা প্রদর্শন ও তাদের স্মরণ আমাদের ক্ষতকে কিছুটা হলেও সারাবে। তবে তাদের জীবনাদর্শ ও দেশপ্রেম থেকে শিক্ষা নিয়ে আমরা উজ্জীবিত হতে পারলেই তারা বেশি খুশি হবেন। ওই দিন বেছে বেছে সেনাবাহিনীর সবচেয়ে ভালো ভালো অফিসারদের হত্যা করা হয়। সেনাবাহিনীকে মেধাশূন্য করতেই এ হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয়েছে।
Advertisement
এএসএম রহমত উল্যাহ ভূঁইয়া বলেন, ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি ভাষার জন্য ৭ জন শহীদ হলো। সেই থেকে অত্যন্ত ভাবগাম্ভীর্যের সঙ্গে দিবসটি পালন করা হয়। অথচ দেশের জন্য ৫৭ জন সেনা কর্মকর্তা একসঙ্গে মারা গেল কিন্তু দিবসটি সেভাবে শোক পালন করা হলো না। তিনি পিলখানার বিডিআর হত্যাকাণ্ডের দিন ২৫ ফেব্রুয়ারিকে জাতীয় শোক দিবস ঘোষণা করার দাবি জানিয়েছেন।
এমআরএম/পিআর