সাংবাদিক দম্পতি সাগর-রুনি হত্যাকাণ্ডের আলোচিত ঘটনায় র্যাবের দেয়া সর্বশেষ অগ্রগতি প্রতিবেদনের ওপর শুনানি আজ।
Advertisement
প্রতিবেদনের বিষয়ে বুধবার হাইকোর্টের বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ শুনানি অনুষ্ঠিত হবে।
এর আগে মঙ্গলবার (৩ মার্চ) রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী র্যাবের জমা দেয়া অগ্রগতি প্রতিবেদনের বিষয়ে আদালতকে অবহিত করার পর আদালত জানান, বিষয়টি বুধবার শুনানির জন্য কার্যতালিকায় (কজলিস্টে) থাকবে।
এর আগের দিন সোমবার (২ মার্চ) এই হত্যা মামলার তদন্ত কর্মকর্তা র্যাবের খন্দকার শফিকুল আলম হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় সর্বশেষ অগ্রগতি প্রতিবেদন জমা দেন।
Advertisement
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সাগর-রুনি হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় দু’জন অপরিচিত যুবক জড়িত ছিল। সাগরের হাতে বাঁধা চাঁদর এবং রুনির টি-শার্টে ওই দুই যুবকের ডিএনএ’র প্রমাণ মিলেছে বলেও প্রতিবেদনে দাবি করেছে র্যাব।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, এই মামলায় তানভীরের অবস্থা রহস্যজনক। এই মামলা থেকে তাকে অব্যাহতি (বিচারিক আদালতে ব্যক্তিগত হাজিরা থেকে) দেয়া যুক্তিযুক্ত হয়নি। অন্যদিকে, আমেরিকা পাঠানো ডিএনএ নমুনার সঙ্গে অপরিচিত দুই ব্যক্তির ডিএনএ’র মিল পাওয়া গেছে।
২০১২ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর পশ্চিম রাজাবাজারের ভাড়া বাড়িতে সাংবাদিক দম্পতি সাগর সরওয়ার ও মেহেরুন রুনির ক্ষতবিক্ষত লাশ পাওয়া যায়। সাগর তখন মাছরাঙা টিভিতে আর রুনি এটিএন বাংলায় কর্মরত ছিলেন।
হত্যাকাণ্ডের সময় বাসায় ছিল তাদের সাড়ে চার বছরের ছেলে মাহির সরওয়ার মেঘ। এ হত্যাকাণ্ডে দেশব্যাপী ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়।
Advertisement
সব মিলিয়ে এ মামলায় মোট আটজন সন্দেহভাজনকে গ্রেফতার করা হয়। তারা হলেন- রফিকুল ইসলাম, বকুল মিয়া, মো. সাইদ, মিন্টু, কামরুল হাসান ওরফে অরুণ, সাগর-রুনির ভাড়া বাসার নিরাপত্তা প্রহরী এনামুল, পলাশ রুদ্র পাল এবং নিহত দম্পতির বন্ধু তানভীর রহমান। তাদের মধ্যে প্রথম পাঁচজনই মহাখালীর বক্ষব্যাধি হাসপাতালের চিকিৎসক নারায়ণ চন্দ্র হত্যার ঘটনায় র্যাব ও গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) হাতে গ্রেফতার হন। প্রথম পাঁচজন ও নিরাপত্তারক্ষী এনামুল এখনও এই মামলায় কারাগারে।
প্রসঙ্গত, সাগর-রুনির মামলার তদন্ত কর্মকর্তাকে সিডিসহ হাইকোর্ট তলব করেছিলেন ২০১৯ সালের ২০ অক্টোবর। তলবের পর তদন্ত কর্মকর্তা উপস্থিত হওয়ার পর একই বছর ১১ নভেম্বর তদন্তের সর্বশেষ অবস্থা এবং একইসঙ্গে মামলায় সন্দেহভাজন হিসেবে আটক মো. তানভীর রহমানের সম্পৃকতার বিষয়েও প্রতিবেদন দিতে বলা হয়।
আদালতে ওইদিন তানভীরের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী ফাওজিয়া করিম ফিরোজ। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. সারওয়ার হোসেন।
মো. সারওয়ার হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, দীর্ঘ ৮ বছর মামলার তদন্ত শেষ না হওয়ার বিষয়টি আদালতের নজরে এসেছে। আদালত বলেছেন, তদন্ত শেষ হবে কবে। তদন্ত কি অনন্তকাল ধরে চলবে?
এর আগে ২০১৫ সালের ২ ফেব্রুয়ারি দাখিল করা এক প্রতিবেদনে তদন্ত কর্মকর্তা আদালতকে জানান, যুক্তরাষ্ট্রের পরীক্ষাগার থেকে ডিএনএ পরীক্ষার রিপোর্টগুলো পাওয়া গেছে। সে রিপোর্ট ও অপরাধচিত্রের প্রতিবেদন (ক্রাইম সিন রিপোর্ট) পর্যালোচনায় দু’জন পুরুষের ডিএনএর পূর্ণাঙ্গ প্রফাইল পাওয়া গেছে।
এফএইচ/জেএইচ/জেআইএম