বিশ্বজুড়ে করোনাভাইরাস আতঙ্ক। ইতোমধ্যে চীনে মৃত্যুর মিছিল দেখা দিয়েছে। তবে মরণ এই ভাইরাস শুধু চীনের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নেই। ধীরে ধীরে তা গোটা বিশ্বে মহামারি আকার ধারণ করছে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে পড়ছে ভয়ঙ্কর রোগ। একের পর এক দেশ থেকে মৃত্যুর খবর আসছে। আতঙ্ক এতটাই গ্রাস গোটা বিশ্বের অর্থনীতি ধসে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন অর্থনীতিবিদরা।
Advertisement
অন্যদিকে, এই এ ভাইরাস ছড়িয়ে পড়তেই পারে চুম্বনের কারণে। আর সেই কারণে এতে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে সুইজারল্যান্ড সরকার। দেশটির সরকার মনে করছে, চুমু থেকেও ছড়িয়ে পড়তে পারে ভয়ঙ্কর এই মরণরোগ। ইতোমধ্যে এই সংক্রান্ত একটি বিজ্ঞপ্তিও দিয়েছে দেশটির স্বাস্থ্যমন্ত্রালয়।
পাশ্চত্যে অনেক জায়গাতেই একে অপরের সঙ্গে দেখা হলে চুমু দিয়ে অভিভাদন জানানোটা নিয়ম। বিভিন্ন সময়ে সোশ্যাল মিডিয়াতে কিংবা ছবিতে দেখা যায় একে অপরকে চুম্বনের ছবি। কিন্তু সেই চুম্বনের মধ্যেই যে ভাইরাস ছড়িয়ে পড়তে পারে তা নিয়েই এখন আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।
সুইজারল্যান্ডের স্বাস্থ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, করোনা ভয়ঙ্করভাবে ছোঁয়াছে রোগ। কোনওভাবে আক্রান্তের কাছাকাছি এলেই তা এই ভাইরাস ছড়িয়ে পড়তে পারে। আর চুম্বনের কারণে এই ভাইরাস ছড়িয়ে আরও মারাত্মক আকার নিতে পারে। আর সেজন্যই চুম্বনের যে প্রথা আছে তা বন্ধ রাখার জন্যে দেশের নাগরিকদের কাছে আহ্বান জানান স্বাস্থ্যমন্ত্রী।
Advertisement
শুধু সুইসারল্যান্ডেই নয়, ফ্রান্সেও চুম্বনের উপর জারি হয়েছে নিষেধ। চুম্বনের আগে মানুষকে সতর্ক থাকার জন্যে আবেদন জানানো হয়েছে সে দেশের সরকারের পক্ষ থেকে।
এর আগে দেশটির স্বাস্থ্যমন্ত্রী করোনাভাইরাস নিয়ে দেশের মানুষকে শান্ত্বনা দিয়েছিলেন। একই সঙ্গে দেশের মানুষকে সতর্ক থাকার জন্যও জানিয়ে ছিলেন।
তিনি জানিয়েছিলেন, হ্যান্ডশেক করার আগে ও পরে হাত ভালো করে ধুয়ে নিতে হবে। পাশাপাশি কয়েকটি বিষয় খেয়াল রাখার কথাও জানিয়েছিলেন। সুইজারল্যান্ড ইতোমধ্যে বেশ কয়েকটি পদক্ষেপ নিয়েছে। মার্চ মাসের ১৫ তারিখ পর্যন্ত সেই সমস্ত সভা, কনসার্ট বাতিল করা হয়েছে।
অন্যদিকে, এক ডাচ গবেষণায় বলা হয়েছে, মাত্র ১০ সেকেন্ডের ফ্রেঞ্চ চুম্বনের মাধ্যমে একজনের মুখ থেকে অন্যের মুখে ৮০ মিলিয়ন জীবাণুর আদান-প্রদান ঘটে। এসব জীবাণুর কার্যকারিতা বন্ধ করতে দেহে প্রতিরোধব্যবস্থা জোরদার হয়।
Advertisement
২০১০ সালে মেডিকেল হাইপোথিসিস জার্নালে বলা হয়, দম্পতিদের চুমু গর্ভের শিশুকে সাইটোমেগালোভাইরাসের সংক্রমণ থেকে বাঁচাতে পারে। তবে সবক্ষেত্রে চুম্বন শুধু ক্ষতিই করে না, প্রতিরোধব্যবস্থাও তৈরি করে দেয়।
গত বছরের ৩১ ডিসেম্বর চীনের হুবেই প্রদেশের উহানে প্রথম এই ভাইরাসের উপস্থিতি নিশ্চিত হয় কর্তৃপক্ষ। চীনে ২ হাজার ৯৪৩ জনের প্রাণ কেড়ে নেয়া এই ভাইরাস এখন বিশ্বের ৭৬টি দেশ ও অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়েছে। চীনের বাইরে সাত মহাদেশে ছড়িয়ে পড়া এই ভাইরাসে প্রাণ গেছে ১৮৪ জনের।
এর মধ্যে সর্বোচ্চ ৭৭ জন মারা গেছেন ইরানে। বিশ্বজুড়ে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ৯২ হাজার ১৫৩ জন। তাদের মধ্যে শুধুমাত্র চীনেই আক্রান্তের সংখ্যা ৮০ হাজার ১৫১ জন।
এমআরএম