করোনাভাইরাস সংক্রমণের আশঙ্কায় শতাধিক যাত্রীবাহী একটি প্রমোদতরীকে বন্দরে নোঙ্গরের অনুমতি দেয়নি মিয়ানমার। মঙ্গলবার দেশটির পর্যটন বিভাগের জ্যেষ্ঠ এক কর্মকর্তার বরাত দিয়ে ব্রিটিশ সংবাদসংস্থা রয়টার্স এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।
Advertisement
যাত্রীরা করোনাভাইরাস বহন করে নিয়ে আসতে পারেন এমন আশঙ্কায় প্রমোদতরীটিকে ফিরিয়ে দেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন ওই কর্মকর্তা।
ইউরোপের দেশ মোনাকোভিত্তিক সিলভারসি ক্রুজ নামের একটি কোম্পানির পরিচালিত বিলাসবহুল লাইনার দ্য সিলভার স্পিরিট প্রমোদতরীটি থাইল্যান্ডের ফুকেটে যাওয়ার পথে বুধবার মিয়ানমারের বাণিজ্যিক রাজধানী ইয়াঙ্গুনের বাইরের বন্দর থিলাওয়াতে যাত্রাবিরতি দেয়ার কথা ছিল। কিন্তু করোনা আতঙ্কে মিয়ানমার কর্তৃপক্ষ প্রমোদতরীটিকে বন্দরে নোঙ্গরের অনুমতি দেয়নি।
মিয়ানমারের হোটেল ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের ডেপুটি সেক্রেটারি খিন মং সোয়ে বলেন, আমরা বন্দর কর্তৃপক্ষকে অবগত করেছি যে, এই প্রমোদতরীটিকে বন্দরে প্রবেশের অনুমতি দেয়া যাবে না। তবে ওই প্রমোদতরীর যাত্রীদের কারও করোনাভাইরাসের লক্ষণ ধরা পড়েছে কিনা সেব্যাপারে কিছু জানেন না বলে জানিয়েছেন তিনি।
Advertisement
মং সোয়ে বলেন, এখন পর্যন্ত যাত্রীদের কারও শরীরে করোনার লক্ষণ পাওয়া যায়নি। তবে তারা যখন মিয়ানমারে পৌঁছাবেন তখন লক্ষণ প্রকাশ পেতে পারে। আর এটা হলে তা মিয়ানমারের পক্ষে নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন হয়ে যাবে। যদি পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়, তাহলে আমাদের দেশের জনগণ অবশ্যই ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। মিয়ানমারের স্বাস্থ্য ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, এই প্রমোদতরীটিকে মিয়ানমারে নোঙ্গর করার অনুমতি দেয়া উচিত হবে না। কারণ এটি ইতোমধ্যে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত কয়েকটি দেশে যাত্রাবিরতি করেছে। এর মধ্যে করোনাভাইরাসে সংক্রমিত থাইল্যান্ডেও নোঙ্গর করেছিল প্রমোদতরীটি।
মন্ত্রণালয়ের এক মুখপাত্র বলেছেন, প্রমোদতরীটিতে ৪ শতাধিক যাত্রী রয়েছে। মিয়ানমারে নোঙ্গরের অনুমতি না পাওয়ায় প্রমোদতরীটি এখন কোন গন্তব্যে যাবে; সেটি তাৎক্ষণিকভাবে জানা যায়নি।
চীনের সঙ্গে মিয়ানমারের দীর্ঘ সীমান্ত রয়েছে। গত বছরের ডিসেম্বরে চীনের হুবেই প্রদেশের উহানে প্রাণঘাতী এই ভাইরাসের বিস্তার মহামারি আকার ধারণ করলেও মিয়ানমারে এখন পর্যন্ত কেউই করোনা সংক্রমিত হননি। তবে ইয়াঙ্গুনে একটি হাসপাতালে বেশ কয়েকজনকে কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছে।
জাপান সরকার সোমবার দেশটিতে নতুন করে আরও ১৯ জন করোনা সংক্রমিত হয়েছেন বলে নিশ্চিত করেছে। এ নিয়ে দেশটিতে মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়াল ৯৮০ জনে। এই আক্রান্তদের মধ্যে জাপানের একটি ঘাঁটিতে নোঙ্গর করা ব্রিটিশ প্রমোদতরী ডায়মন্ড প্রিন্সেসের করোনাক্রান্ত যাত্রীরাও রয়েছেন।
Advertisement
গত বছরের ৩১ ডিসেম্বর চীনের হুবেই প্রদেশের উহানে প্রথম এই ভাইরাসের উপস্থিতি নিশ্চিত হয় কর্তৃপক্ষ। চীনে ২ হাজার ৯৪৩ জনের প্রাণ কেড়ে নেয়া এই ভাইরাস এখন বিশ্বের ৭৬টি দেশ ও অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়েছে। চীনের বাইরে সাত মহাদেশে ছড়িয়ে পড়া এই ভাইরাসে প্রাণ গেছে ১৮৪ জনের। এর মধ্যে সর্বোচ্চ ৭৭ জন মারা গেছেন ইরানে। বিশ্বজুড়ে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ৯২ হাজার ১৫৩ জন। তাদের মধ্যে শুধুমাত্র চীনেই আক্রান্তের সংখ্যা ৮০ হাজার ১৫১ জন।
এসআইএস/এমএস