দেশজুড়ে

ইলিশের ওপর নিষেধাজ্ঞা শেষ : ডিম ছাড়ার হার মাত্র ২৫ ভাগ

ভোলাসহ উপকূলে ইলিশ মাছ ধরা, বিক্রি ও পরিবহনের ওপর ১৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষ হচ্ছে আজ। কিন্তু নিধারিত ১৫ দিনে কাঙ্খিত ইলিশ মাছ মাত্র ২৫ ভাগ ডিম ছাড়ে বলে অনুসন্ধানে জানা গেছে। ভোলার শাহবাজপুর চ্যানেলে ( মেঘনা নদী) কতভাগ ইলিশ ডিম ছেড়েছে এমন গবেষণা কাজে নিয়োজিত ঢাকা থেকে আসা মৎস্য গবেষণা বিভাগের বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. আনিসুর রহমান জাগো নিউজকে জানান, এবার পরিপক্ক ইলিশ দেখা যায় নি। ছোট আকারের ইলিশ যা এসেছে তাতে ডিম ছাড়ার হার ছিল ২০ থেকে ২৫ ভাগ। তিনি আরো জানান, মূলত অক্টোবরের শেষ দিকে পূর্ণিমার জোঁতে পরিপক্ক ইলিশ ডিম ছাড়তে আসার সম্ভাবনাই বেশি। অথচ ওই সময় নিষেধাজ্ঞা থাকবে না। ফলে জেলেদের জালে পরিপূর্ণ ডিমওয়ালা ইলিশ ডিম ছাড়ার আগেই ধরা পড়বে। ফলে এ বছর কাঙ্খিত ইলিশ ডিম ছাড়তে পারছে না। ভোলা সদর উপজেলার মেঘনা পাড়ের শিবপুরখাল, ইলিশা, ধনিয়া, দৌলতখানের ভবানীপুর, চৌকিঘাট চষে বেড়ানোর সময় জেলেরাও এমন তথ্য জানান। জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের মৎস্য কর্মকর্তারাও স্বীকার করেন, অভিযানের প্রথম এক সপ্তাহ ডিম ছাড়ার মতো ইলিশ দেখা যায়নি। জেলা মৎস্য কর্মকর্তা প্রীতিষ কুমার মল্লিক জানান, তাদের অভিযানকালেও পরিপক্ক ইলিশ তেমনটা দেখা যায় নি। শিবপুর ভোলার খালের মাছ ব্যবসায়ী মো. সেলিম, দৌলতখান উপজেলার সর্ব বৃহৎ ইলিশ মাছ ব্যবসায়ী আব্দুল হাই, ইলিশার মো. সায়েদ আলী, তুলাতলীর আফজাল মাঝি বলেন, সঠিক সময় নির্ধারণ না করার কারণে ইলিশের প্রজনন এবার মার খায়। যে সময় ইলিশ মাছ ডিম ছাড়তে আসবে ওই সময় নিষেধাজ্ঞা থাকবে না। ওই সব মা ইলিশ নিধন করা হবে। অপরদিকে ২৫ সেপ্টেম্বর থেকে মেঘনা, তেঁতুলিয়া ও সাগর মোহনায় সব ধরনের মাছ ধরার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করায় উপকূলীয় এলাকায় ৫ লাখ জেলে পরিবার বেকার হয়ে পড়েছে। ইদানিং কিছু ইলিশ পড়তে শুরু করায় নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে রাতে নদীতে মাছ ধরতে গিয়ে আটক হয়েছেন ১২শ জেলে। কারাদণ্ড ভোগ করে ২৪৭ জন। উপকূলে প্রায় ১৫ কোটি টাকা ব্যয়ে কোস্টগার্ড, জেলা ও উপজেলা প্রশাসন মা ইলিশ রক্ষায় নদী ও সাগর মোহনায় গত ১৫ দিন টানা অভিযান চালায়। তার পরও কাঙ্খিত অর্জন মিলেনি। এ বছর তিথি অনুযায়ী মা ইলিশ মেঘনা জোনে ওঠে আসবে অক্টোবরের মাঝামাঝি সময় থেকে । জেলেরা বলছেন, এবার আর্শ্বিনের প্রথম পূর্ণিমার জোতে ডিম ছাড়তে ইলিশ আসেনি। তিথি অনুযায়ী ওই সময় ১৫ থেকে ৩০ অক্টোবর পর্যন্ত হতে পারে।  ফেনী জেলা মৎস্য কর্মকর্তা সুনীল চন্দ্র ঘোষ জানান, বিষয়টি নিয়ে আরো গবেষণা করা প্রয়োজন ছিল। এ বছর যে ইলিশ ডিম ছেড়েছে তা দিয়ে কাঙ্খিত অর্জন হবে না। গত বছর ছিল ৫ অক্টোবর থেকে ১৫ অক্টোবর পর্যন্ত। ২০১৩ সালে ছিল ১৩ অক্টোবর থেকে ২৩ অক্টোবর পর্যন্ত ১১ দিন করে। এবার ১৫ দিন সময় নির্ধারণ ছিল ২৫ সেপ্টেম্বর থেকে ৯ অক্টোবর পর্যন্ত। বিগত ৩ বছরের হিসেবেই ওঠে আসে এবারের সময় নির্ধারণ সঠিক হয়নি এমনটা জানান উপকূলীয় মৎস্যজীবী সমিতির সভাপতি নুরুল ইসলাম । অমিতাভ অপু/এসএস/পিআর

Advertisement