আন্তর্জাতিক

করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা দক্ষিণ কোরিয়ার

প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছে দক্ষিণ কোরিয়া। মঙ্গলবার (৩ মার্চ) দেশটির প্রেসিডেন্ট মুন জায়ে-ইন এ ঘোষণা দেন।

Advertisement

সরকারি সংস্থাগুলোকে ২৪ ঘণ্টা কাজ করার নির্দেশ দিয়ে মুন জায়ে-ইন বলেন, সমগ্র দেশ আজ এই সংক্রামক রোগের বিরুদ্ধে যুদ্ধে প্রবেশ করল।

মুন বলেন, করোনা প্রাদুর্ভাবের কারণে আমাদের ‘কবর’ পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য দেশের অর্থনীতিতে অতিরিক্ত ৩৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার যোগ করতে হবে।

চীনের বাইরে করোনাভাইরাসে সবচেয়ে বেশি আক্রান্তের সংখ্যা এখন দক্ষিণ কোরিয়ায়। সোমবার দেশটিতে নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন ৪৭৭ জন। এ নিয়ে এখন পর্যন্ত চার হাজার ৮১২ জন এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন এবং মারা গেছেন ২৯ জন।

Advertisement

গত ১০ ফেব্রুয়ারি শিনচিওনজি সম্প্রদায়ের ৬১ বছর বয়সী এক নারীর শরীরে প্রথমবারের মতো করোনাভাইরাসের উপস্থিতি নিশ্চিত হয় কর্তৃপক্ষ। ওইদিন তিনি জ্বরে আক্রান্ত হন। সংক্রমিত হওয়ার পরও দায়েগু শহরের শিনচিওনজির একটি গির্জায় অন্তত চারটি সমাবেশে অংশ নেন ওই নারী।

দক্ষিণ কোরিয়ায় করোনা সংক্রমিত অধিকাংশই এ গির্জার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট। এ ঘটনার পর শিনচিওনজির গির্জার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট দুই লাখ ৬০ হাজার মানুষের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। দেশটির অনেকেই এ গির্জার গোপনীয় বিভিন্ন কার্যক্রম, বিশেষ করে অল্প জায়গায় ব্যাপক জনসমাগমের মতো কর্মসূচি পালন করে আসছিলেন।

করোনাভাইরাসের কারণে সৃষ্ট রোগ কোভিড-১৯ দ্রুতগতিতে বিস্তারের জন্য শিনচিওনজি সম্প্রদায়কে দায়ী করেছেন অনেকে। এ ঘটনায় দেশটির সরকার ধর্মীয় এ সম্প্রদায়ের নেতা লি ম্যান-হির বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ গঠনের প্রক্রিয়া শুরু করেছে।

তবে সোমবার শিনচিওনজি সম্প্রদায়ের এ নেতা জনসম্মুখে হাঁটু গেড়ে ক্ষমা প্রার্থনা করেন। খ্রিস্টধর্মের শিনচিওনজি সম্প্রদায়ের স্বঘোষিত মুক্তিদাতা লি ম্যান-হি আন্তরিক ক্ষমা প্রার্থনার পর স্বীকার করে বলেন, শিনচিওনজির গির্জায় করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব শুরুর পর অনেক মানুষ সংক্রমিত হয়েছেন।

Advertisement

গত ৩১ ডিসেম্বর চীনের হুবেই প্রদেশের উহান শহরেই প্রথম করোনাভাইরাসের উপস্থিতি ধরা পড়ে। বিশ্বব্যাপী এখন পর্যন্ত তিন হাজার ১২৫ জন করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। বিশ্বের ৭৬টি দেশ ও অঞ্চলে ৯০ হাজার ৯২৫ জন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন।

শুধুমাত্র চীনের মূল ভূখণ্ডেই করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা ৮০ হাজার ১৫১ এবং মৃত্যু হয়েছে দুই হাজার ৯৪৩ জনের। অপরদিকে চীনের বাইরে সবচেয়ে বেশি আক্রান্তের সংখ্যা দক্ষিণ কোরিয়ায় এবং সবচেয়ে বেশি মানুষ মারা গেছে ইরানে।

সূত্র : দ্য স্ট্রেইট টাইমস

বিএ/এমকেএইচ