ভারতের রাজধানী দিল্লিতে চলমান সহিংসতার ঘটনায় একটি ড্রেন আলোচনায় এসেছে। উত্তর-পূর্ব দিল্লির ওই ড্রেনটিতে গত পাঁচ দিনে অন্তত ১১টি মরদেহ পাওয়া গেছে। ধারণা করা হচ্ছে, এসব মরদেহগুলো চলমান সাম্প্রদায়িক দাঙ্গায় নিহতদের।
Advertisement
মঙ্গলবার ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ওয়ান ইন্ডিয়ার প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।
সম্প্রতি ভারতের রাজধানী দিল্লিতে বিক্ষোভ-সহিংসতায় ৪৭ জনের মৃত্যু হয়। আহত হয় আরও তিন শতাধিক মানুষ। বিতর্কিত নাগরিকত্ব সংশোধনী (সিএএ) আইনকে কেন্দ্র করে গত ২৩ ফেব্রুয়ারি থেকে দিল্লির উত্তর-পূর্বের বিভিন্ন শহরে দাঙ্গা-সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে।
পুলিশের সামনেই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান-মসজিদসহ মুসলিমদের অসংখ্য বাড়িঘর ও দোকানপাট বেছে আগুন ধরিয়ে দেয়া হয়। সব মিলিয়ে যেন বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে দিল্লি।
Advertisement
ওয়ান ইন্ডিয়া বলেছে, গত পাঁচ দিনে উত্তর-পূর্ব দিল্লির একটি ড্রেনে ১১টি মরদেহ পাওয়া গেছে। সর্বশেষ গত রবি ও সোমবার পাঁচটি মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
ড্রেনে পাওয়া মরদেহগুলোর বেশিরভাগই পচে গেছে। ফলে তাদের পরিচয় শনাক্ত করা যাচ্ছে না। ডিএনএ পরীক্ষা এসব মরদেহের পরিচয় শনাক্ত করা হবে।
নিহতরা চলমান সাম্প্রদায়িক সহিংসতায় নিহত কি না তা জানতে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে পুলিশ।
প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রথম যে মরদেহটি উদ্ধার করা হয়েছে তার পরিচয় জানা গেছে। তার নাম অঙ্কিত শর্মা। তিনি ইন্টেলিজেন্স ব্যুরোর কর্মকর্তা।
Advertisement
নিহতের পরিবারের সদস্যদের দাবি, সহিংসতা চলাকালে বিক্ষুব্ধ জনতার আক্রমণে তিনি মারা গেছেন।
বৈচিত্র্যপূর্ণ ধর্ম-বিশ্বাস-সংস্কৃতির মানুষের একসঙ্গে বসবাসের গর্বিত ইতিহাস বয়ে চলা ভারতে বিজেপি ক্ষমতায় আসার পর থেকেই সংখ্যালঘুদের ওপর নিপীড়ন নেমে আসে। কেবল মুসলিমরাই নয়, খোদ সনাতন ধর্মের নিম্নবর্ণের দলিতরাও শিকার হন গণপিটুনি নামে সাম্প্রদায়িক হত্যাকাণ্ডের।
দিল্লির ঘটনায় দেশটির সরকার ও পুলিশ প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হওয়ায় তাদের সমালোচনা করেন দেশটির সুশীল সমাজও।
ভারতের নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেন বলেন, ‘দেশের রাজধানী ও কেন্দ্রশাসিত দিল্লিতে যা হয়েছে তা নিয়ে আমি খুবই উদ্বিগ্ন। যদি সংখ্যালঘুরা নির্যাতিত হয় এবং পুলিশ দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হয়, সেটা গুরুতর উদ্বেগের বিষয়।’
এসআর/জেআইএম