দেশজুড়ে

রূপপুর প্রকল্পের জন্য কাটা পড়ছে ১২শ শতবর্ষী গাছ

একশ বছরেরও বেশি সময় ধরে যে গাছগুলো ছায়া দিয়েছে, যার নিচে দাঁড়িয়ে অসংখ্য মানুষ স্বস্তির নিঃশ্বাস নিয়েছে পাকশীর সেই গাছগুলো কেটে ফেলার সিদ্ধান্ত হয়েছে।

Advertisement

রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের নিরাপত্তার অজুহাতে কেটে ফেলা হবে শতবর্ষী ১২শ গাছ। পাশাপাশি অধিগ্রহণ করা হচ্ছে প্রায় দেড়শ একর জমি। গাছ কাটার সিদ্ধান্তে হতাশ ও ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছেন স্থানীয়রা।

এদিকে পুনর্বাসনের দাবি জানিয়েছে উচ্ছেদের শিকার মানুষজন। রেল কর্তৃপক্ষ বলছে, পরিবেশ ও সবার কথা মাথায় রেখে করা হচ্ছে এ প্রকল্পের কাজ।

রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের নিরাপত্তা বেষ্টনি তৈরিতে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়কে পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলার পাকশী ইউনিয়নের প্রায় ১৫০ একর জমি বরাদ্দ দেয় রেল কর্তৃপক্ষ। বিশাল এ এলাকাজুড়ে রয়েছে অন্তত ৩০ প্রজাতির হাজারেরও বেশি গাছ। এর মধ্যে রয়েছে বৃটিশ বিরোধী আন্দোলন, ভাষা আন্দোলন ও স্বাধীনতা যুদ্ধের সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে থাকা শতবর্ষী অসংখ্য গাছ।

Advertisement

ইতোমধ্যে কেটে ফেলার জন্য পাকশী রেলওয়ে বাজারের আশেপাশের প্রায় ১২শ গাছের গায়ে লাল রং দিয়ে চিহ্নিত করা হয়েছে। উন্নয়ন প্রকল্পের জন্য শতবর্ষী এ গাছগুলো না কেটে পরিকল্পনা নেয়ার দাবি সাধারণ মানুষের।

অন্যদিকে, অধিগ্রহণ করা ১৫০ একর জমিতে থাকা মানুষজনকে সরে যেতে নোটিশ দেয়ায় চরম অনিশ্চয়তায় দিন পার করছেন তারা।

পরিবেশবিদরা বলছেন, গাছগুলো কাটা হলে এ অঞ্চলের প্রকৃতির উপর বিরূপ প্রভাব পড়বে। পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের সহকারী অধ্যাপক এ এইচ এম মনিরুজ্জামান মামুন বলেন, এ এলাকায় যদি নিরাপত্তার খাতিরে সেনা ক্যাম্প তৈরি করতেই হয়, তাহলে আমার অনুরোধ থাকবে এমন কোনো এলাকায় ক্যাম্পটা করা যাতে গাছগুলোর কোনো ক্ষতি না হয়।

শতবর্ষী গাছগুলোকে যতটুকু সম্ভব সংরক্ষণ করেই প্রকল্পের কাজ এগিয়ে নেয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছে রেল কর্তৃপক্ষ।

Advertisement

পাকশীতে দীর্ঘদিন বসবাসকারী সংস্কৃতিসেবী অধ্যাপক আবুল কালাম আজাদ দুঃখ করে বলেন, দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আগে পাকশীর নৈসর্গিক পরিবেশে পিকনিক করতে আসতো। ছায়া ঘেরা প্রকৃতি ভ্রমণ পিপাসুদের আকৃষ্ট করতো। পুরো পাকশীজুড়েই রয়েছে শতবর্ষী অনেক গাছ।

এ ব্যাপারে রেলওয়ের পাকশী বিভাগীয় ব্যবস্থাপক আসাদুল হক জাগো নিউজকে বলেন, প্রকৃতিকে সংরক্ষণ করেই আমরা কাজ করার চেষ্টা করছি। এরপরও যদি জরুরি প্রয়োজনে গাছগুলো কাটতেই হয় সেটি নিয়ম মেনেই করা হবে। তাছাড়া রূপপুর প্রকল্পের সব ধরনের কাজ উপরের নির্দেশনা অনুযায়ী হচ্ছে।

আলাউদ্দিন আহমেদ/এমএএস/এমকেএইচ