উত্তর-পূর্ব দিল্লির দাঙ্গায় পুলিশের অবস্থান নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন ভারতের নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেন। সহিংসতার সময় পুলিশের ভূমিকা কী ছিল তা তদন্তের দাবি জানিয়েছেন তিনি।
Advertisement
শনিবার পশ্চিমবঙ্গের বোলপুরে এক অনুষ্ঠানে অমর্ত্য সেন বলেন, ‘দেশের রাজধানী ও কেন্দ্রশাসিত দিল্লিতে যা হয়েছে তা নিয়ে আমি খুবই উদ্বিগ্ন। যদি সংখ্যালঘুরা নির্যাতিত হয় এবং পুলিশ দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হয়, সেটা গুরুতর উদ্বেগের বিষয়।’
তিনি বলেন, ‘খবরে এসেছে যারা মারা গেছে বা নির্যাতিত হয়েছে তাদের বেশিরভাগই মুসলিম। ভারত ধর্মনিরপেক্ষ দেশ। আমরা হিন্দু-মুসলিম বিভাজন করতে পারি না। এ নিয়ে একজন ভারতীয় নাগরিক হিসেবে আমি শুধু উদ্বেগই জানাতে পারি।’ তবে গোটা বিষয়ে না জেনে কোনও সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে চান না অমর্ত্য সেন।
বিচারপতি এস মুরালিধরের বদলি প্রসঙ্গে এ অর্থনীতিবিদ বলেন, ‘আমি তাকে ব্যক্তিগতভাবে চিনি। এই বদলি নিয়ে প্রশ্ন উঠবেই। তবে আমি কোনও মন্তব্য করতে পারব না।’
Advertisement
গত মঙ্গলবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) মধ্যরাতে বিচারপতি এস মুরালিধর উত্তর-পূর্ব দিল্লির মুস্তাফাবাদে সহিংসতায় আহতদের যথাযথ চিকিৎসা সহায়তা দিতে প্রশাসনকে নির্দেশ দেন। এছাড়া দাঙ্গায় গৃহহীন মানুষদের আশ্রয়ের ব্যবস্থা করার রায় দিয়ে দিল্লিবাসীর চোখে ‘রক্ষাকর্তায়’ পরিণত হন তিনি। তবে পরের দিনই তাকে বদলির সুপারিশ অনুমোদন করেন ভারতের রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ।
এদিকে, ‘ভারতবিরোধী অবস্থানের’ অভিযোগে বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের এক বাংলাদেশি শিক্ষার্থীকে দেশ ছাড়তে বলার বিষয়েও যুক্তিসঙ্গত কোনও কারণ দেখছেন না অমর্ত্য সেন। তিনি বলেন, ‘আমার কাছে বিস্তারিত তথ্য নেই। সংবাদপত্রের খবর অনুসারে, ওই শিক্ষার্থীকে দেশ ছাড়তে বলার কোনও শক্ত কারণ এখনও পাইনি।’
গত সপ্তাহে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের (সিএএ) বিরুদ্ধে চলা প্রতিবাদের ছবি ফেসবুকে পোস্ট করায় আফসারা আনিকা মীম নামে এক বাংলাদেশি শিক্ষার্থীকে ভারত ছাড়ার নির্দেশ দেয় দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষে কলকাতার ফরেনার্স রিজিওনাল রেজিস্ট্রেশন অফিস (এফআরও) থেকে ওই নির্দেশ দেওয়া হয়। নির্দেশনা পাওয়ার ১৫ দিনের মধ্যে আফসারাকে ভারত ছাড়তে হবে। তবে নির্দেশিকায় তিনি ভারতবিরোধী ঠিক কী কার্যকলাপ করেছেন, সে বিষয়ে কিছু উল্লেখ করা হয়নি।
এর আগেও সরকারের বেশ কিছু সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন অমর্ত্য সেন। মোদি সরকারের অন্যতম সমালোচকও তিনি। তবে এর জন্য বরাবরই বিজেপির চক্ষুশূল হয়েছেন নোবেলজয়ী এই ব্যক্তি।
Advertisement
সূত্র: এনডিটিভি
কেএএ/জেআইএম