পরকালের সুখ-শান্তি লাভে দুনিয়া হলো আবাদের জায়গা। দুনিয়াতে মানুষ যেমন কাজ করবে, মৃত্যুর পর সে তার বিনিময়ও পাবে সে রকম। যারা দুনিয়াতে আল্লাহ ও তার রাসুলের সন্তুষ্টির জন্য কুরআন-সুন্নাহ মোতাবেক জীবন পরিচালনা করবে, পরকালের তারা নিয়ত ও আমল অনুযায়ী প্রতিদান পাবে।
Advertisement
পক্ষান্তরে দুনিয়াতে যারা ভালো কাজ করবে ঠিকই কিন্তু সে কাজে আল্লাহর সন্তুষ্টির নিয়ত থাকবে না বরং দুনিয়ার উদ্দেশ্যে তা আদায় করবে, পরকালের তাদের প্রাপ্তিও হবে সে রকম। তাই মানুষকে সতর্ক করার লক্ষ্যে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া ওই সব লোকের প্রতিদানের ধরণ হাদিসে সুস্পষ্ট ভাষায় তুলে ধরেছেন-হজরত জুনদুব ইবনে আব্দুল্লাহ ইবনে সুফিয়ান রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি মানুষকে শুনানোর জন্য (কোনো) কাজ করে আল্লাহ তার পরিবর্তে (প্রতিদানস্বরূপ) তাকে (কেয়ামতের দিন) শুনিয়ে দেবেন। আর যে ব্যক্তি দেখানোর জন্য (কোনো) কাজ করে আল্লাহ তার পরিবর্তে (প্রতিদানস্বরূপ) তাকে (কেয়ামতের দিন) দেখিয়ে দিবেন।’ (বুখারি ও মুসলিম)
এ হাদিস থেকে বুঝা যায় যে, দুনিয়ায় প্রতিটি কাজই করতে মহান আল্লাহ ও তার রাসুলের সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশ্যে। ইবাদত বা আমল যদি এর ব্যতিক্রম হয় তবে নিয়ত অনুযায়ীই পরকালে প্রতিদান পাবে মানুষ।
আবার যাদের ইবাদত-বন্দেগিতে আল্লাহর সন্তুষ্টির পাশাপাশি দুনিয়ার ইচ্ছা থাকে তাদের আমলও বরবাদ হয়ে যাবে। তা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য হবে না।
Advertisement
সুতরাং মুমিন মুসলমানের এ বিষয়টি খেয়াল রাখতে হবে যে, যাতে কোনোভাবেই ইবাদত-বন্দেগির ক্ষেত্রে আল্লাহ ও তার রাসুলের সন্তুষ্টি ব্যতিত অন্য কোনো উদ্দেশ্য না থাকে। হাদিসে কুদসিতে এসেছে-
হজরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে বলতে শুনেছি, আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘আমি অংশীদারিতা (শিরক) থেকে সব অংশীদারের তুলনায় বেশি মুখাপেক্ষীহীন। যে কেউ কোনো আমল করে এবং সে আমলে অন্যকে আমার সাথে শরিক করে, আমি তাকে ও তার আমল উভয়টিই বর্জন করি।’ (মুসলিম)
আর কেউ যখন আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে কোনো আমল করার পর তার মনে দুনিয়ার কোনো স্বার্থ জাগ্রত হয় এবং সে তা ঘৃণার সঙ্গে পরিত্যাগ করে তবে তার আমল পরিশুদ্ধ হবে। যদি সে তা থেকে সরে না আসে বরং দুনিয়ার স্বার্থ তার মনে প্রশান্তি দেয় তবে তার আমল বরবাদ হয়ে যাবে।
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে ইবাদত-আমলে তার সন্তুষ্টি অর্জনের তাওফিক দান করুন। দুনিয়ার হীন স্বার্থ থেকে বিরত থাকার তাওফিক দান করুন। বেশি বেশি তাওবাহ ও ইসতেগফার করার তাওফিক দান করুন। আমিন।
Advertisement
এমএমএস/এমকেএইচ